মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতির ঘোষণার একদিন পরই বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারে বড়সড় ধস দেখা গেছে। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের শেয়ারবাজার টানা দ্বিতীয় দিনের মতো পতনের মুখে পড়েছে। এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান সূচক এসঅ্যান্ডপি ৫০০-তে ২০২০ সালের কোভিড সংকটের পর সবচেয়ে খারাপ দিন পার করেছে। খবর বিবিসি

নাইক, অ্যাপল এবং টার্গেটের মতো বড় ভোক্তা পণ্য নির্মাতা কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম ৯ শতাংশের বেশি কমে গেছে।

এর আগে বুধবার হোয়াইট হাউজে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, আমদানিকৃত পণ্যের ওপর কমপক্ষে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বাড়বে এবং দেশীয় শিল্পে নতুন গতি আসবে।

যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, এই শুল্ক বৃদ্ধির ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্ব অর্থনীতিতে মূল্যবৃদ্ধি এবং প্রবৃদ্ধির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

ট্রাম্পের এই শুল্ক নীতির আওতায় চীন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বহু দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যে ব্যাপক হারে শুল্ক আরোপ করা হবে। চীনের ওপর গড়ে ৫৪ শতাংশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করা হয়েছে।

উত্তরে চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন উভয়েই পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোর প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে নতুন বিনিয়োগ সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

আমদানি শুল্ক মূলত বিদেশ থেকে আনা পণ্যের ওপর আরোপিত কর, এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাবিত নতুন হার গত ১০০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বলেই মনে করা হচ্ছে।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতির ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি আশঙ্কা করছে, এই পদক্ষেপের ফলে চলতি বছরে বৈশ্বিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ১ শতাংশ কমে যেতে পারে।

বিনিয়োগকারীরা আশঙ্কা করছেন, শুল্ক বৃদ্ধির ফলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হবে।

শুক্রবার দিনের শুরুতেই এশিয়ার প্রধান শেয়ারবাজারগুলোতে বড়সড় পতন দেখা গেছে। জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক ১.

৮ শতাংশ কমে যায়, দক্ষিণ কোরিয়ার কোস্পি সূচক পড়ে প্রায় ১ শতাংশ এবং অস্ট্রেলিয়ার এএসএক্স ২০০ সূচক কমে ১.৪ শতাংশ।

এর আগে বৃহস্পতিবার, যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে ব্যাপক ধস নামে। দেশটির শীর্ষ ৫০০ কোম্পানির শেয়ার মূল্য পর্যবেক্ষণকারী এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ৪.৮ শতাংশ পড়ে যায়, যার ফলে বাজার থেকে প্রায় ২ ট্রিলিয়ন ডলারের মূল্য হারিয়ে যায়।

ডাও জোন্স সূচক ৪ শতাংশ এবং প্রযুক্তিনির্ভর নাসডাক প্রায় ৬ শতাংশ কমে যায়। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে যুক্তরাষ্ট্রে শেয়ারবাজারে বিক্রির ঢল নামতে শুরু করে, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।

ইতিমধ্যেই যুক্তরাজ্যের এফটিএসই ১০০ সূচক ১.৫ শতাংশ এবং ইউরোপের অন্যান্য বাজারগুলোও পতনের মুখে পড়েছে, জাপান থেকে শুরু করে হংকং পর্যন্ত প্রতিফলিত হয়েছে এই ধসের প্রভাব।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই বাণিজ্য নীতি বৈশ্বিক বাজারে দীর্ঘমেয়াদি অস্থিরতার সূচনা করতে পারে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ য রব জ র রব জ র ইউর প র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন না হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা হবে: আপ বাংলাদেশ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচন ২৭ নভেম্বরেই অনুষ্ঠিত না হলে তা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের প্রতারণা বলে মন্তব্য করেছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। এ সময় পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে সংগঠনটি।

সোমবার (৩ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

২৭ নভেম্বরই জকসু নির্বাচন চায় ছাত্রশিবির

জকসু নির্বাচন নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ ছাত্র সংগঠনগুলোর

দাবিগুলো হলো— আসন্ন জকসু নির্বাচন ২৭ নভেম্বরেই অনুষ্ঠিত করতে হবে; নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে; নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা রক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে; সব সংগঠনকে সমান সুযোগ দিয়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে; অরাজনৈতিক, নিরাপদ ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য ও জবির প্রধান সংগঠক মাসুদ রানা বলেন, “আমরা যখন জকসুর দাবিতে অনশন করছিলাম, তখন প্রশাসন ২৭ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাদের অনশন ভাঙিয়েছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, একটি মহল নির্বাচন পেছানোর পাঁয়তারা করছে।”

তিনি বলেন, “ডিসেম্বর মাসে ভর্তি পরীক্ষা ও বিভিন্ন বিভাগের ফাইনাল পরীক্ষা থাকায় ওই মাসে নির্বাচন অসম্ভব। তাই ২৭ নভেম্বরই জকসু নির্বাচনের উপযুক্ত সময়।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা জানতে চাই, নির্বাচন পেছানোর মধ্য দিয়ে জকসু নির্বাচন ভণ্ডুল করার কোনো প্রক্রিয়া চলছে কিনা। পুরান ঢাকাকে অস্থিতিশীল করে একটি মহল নির্বাচন পণ্ড করতে চায়। শিক্ষার্থীদের জীবনের প্রথম ভোট হবে জকসু নির্বাচন—তা থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যাবে না।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ