রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার কাছে একদল ব্যক্তি একজন পুলিশ কর্মকর্তা ও তাঁর দুই স্বজনকে মারধর করে একটি মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত ব্যক্তিরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন সারদায় মৌলিক প্রশিক্ষণরত সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সাজিদ বিন কামাল (২৮), তাঁর দূরসম্পর্কের দুই চাচাতো ভাই তৌহিদুর রহমান ওরফে ফাহিম (২৭) ও বিপুল (২৭)।

পুলিশ সূত্র জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মোহাম্মদপুর থানার কাছে আল্লাহ করিম মসজিদসংলগ্ন তিন রাস্তার মোড়ে এএসপি সাজিদ বিন কামালকে বহনকারী একটি প্রাইভেট কারের (ঢাকা মেট্রো গ- ১৯-২৩২৩) সঙ্গে একটি মোটর সাইকেলের ধাক্কা লাগে। এতে মোটরসাইকেলটি সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওই মোটরসাইকেলের আরোহীসহ অপর দুই-তিনটি মোটরসাইকেলের আরোহীরা প্রাইভেট কারটি ধাওয়া করে আটকানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে রাস্তার পাশে থাকা বড় বোর্ডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে প্রাইভেট কারের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। এ সময় ১০-১২ জন প্রাইভেট কারে থাকা এএসপি সাজিদ বিন কামাল ও তাঁর দূরসম্পর্কের চাচাতো ভাই তৌহিদুর (২৭) ও বিপুলকে (২৭) মারধর করেন। তাঁরা পুলিশ কর্মকর্তা সাজিদ বিন কামালের কাছ থেকে মুঠোফোন ছিনতাই করে নিয়ে যান। পরে সাজিদ বিন কামালসহ তিনজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।

আজ শুক্রবার বিকেলে যোগাযোগ করা হলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী ইফতেখার হাসান প্রথম আলোকে বলেন, এএসপি সাজিদ বিন কামাল তাঁর আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে গতকাল রাতে খুলনা থেকে একটি প্রাইভেট কারে ঢাকায় আসেন। এ সময় তাঁকে বহনকারী গাড়িটি একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এতে পুলিশ কর্মকর্তা সাজিদ বিন কামাল সামান্য আহত হন। তবে তাঁর কাছ থেকে যে মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে, এ বিষয়ে তিনি জানেন না। এ বিষয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তা থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম হ ম মদপ র থ ন র প ল শ কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ 

রাজধানী ঢাকা থেকে ছুটিতে পরিবার নিয়ে কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছেন হাবিবুল আউয়াল। ভালো হোটেলে রুম না পাওয়ায় শহরের কলাতলী এলাকায় মধ্যমমানের একটি আবাসিক হোটেলে উঠেছেন। তাঁর কাছে এক রাতের জন্য হোটেলটির দুটি রুমের ভাড়া নেওয়া হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। যদিও অন্য সময়ে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকায় এই মানের হোটেলে রুম ভাড়া পাওয়া যায়। ঈদ মৌসুমে চাহিদা বাড়ায় অন্য সময়ের তুলনায় ১২ গুণের বেশি ভাড়া নেওয়া হয়েছে তাঁর কাছ থেকে।

কোরবানির ঈদ ও পরবর্তী ছুটির সময়ে অতিরিক্ত পর্যটক আসায় কক্সবাজার শহর ও এর আশপাশের পাঁচ শতাধিক আবাসিক হোটেল, মোটেল, গেস্টহাউস ও রিসোর্টের প্রায় প্রতিটিতেই অন্য সময়ের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ গুণ বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। শুধু আবাসিক হোটেল নয়, রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে পর্যটনসংশ্লিষ্ট সব সেবা খাতেই অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট অনেকের মতে, প্রতিটি ছুটির মৌসুমে কক্সবাজারে পর্যটকদের সংখ্যা একটু বাড়লেই তাদের কাছ থেকে ‘গলাকাটা’ টাকা নেওয়া হয়।

ঈদুল আজহার লম্বা ছুটি শেষ হচ্ছে আজ। গতকাল শুক্রবার কক্সবাজার সৈকতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। লাবণী পয়েন্ট থেকে কলাতলী পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকায় ছিল পর্যটকের ভিড়। সাগরতীর পরিণত হয়েছিল উৎসবের বেলাভূমিতে। শুক্রবার সকাল থেকে তীব্র গরম থাকলেও পর্যটকে পূর্ণ ছিল কক্সবাজার সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট, লাবণী, কলাতলী, হিমছড়ি, ইনানী, পাতুয়ারটেক থেকে মেরিন ড্রাইভ পর্যন্ত পুরো এলাকা।

রাজধানীর মতিঝিল থেকে ঘুরতে আসা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘এখন সমুদ্রে গোসল করছি। বিকেলে মেরিন ড্রাইভে ঘুরব, এরপর শনিবার রাতে ঢাকায় ফিরে যাব।’ নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা আসিফ আহমেদ বলেন, ‘অনেক মানুষ, তবুও পরিবারের সবাইকে নিয়ে আনন্দ করছি, ছবি তুলছি, বিচ বাইক ও ঘোড়ায় চড়েছি।’ 

কক্সবাজার শহরের পাঁচতারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইস লিমিটেডের বিপণন ব্যবস্থাপক ইমতিয়াজ নুর সোমেল সাংবাদিকদের বলেন, শুক্রবার পর্যন্ত তাদের হোটেলের ৭০-৮৫ শতাংশ রুম বুকিং রয়েছে। যদিও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক হোটেল ব্যবসায়ী জানান, ১৩ জুন পর্যন্ত অধিকাংশ আবাসিক হোটেল সম্পূর্ণ বুকিং হয়ে গেছে। তবে প্রশাসন, কর ও ভ্যাট কর্মকর্তাদের ফাঁকি দিতে তারা বিষয়টি স্বীকার করতে চান না। 

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের এএসপি নিত্যানন্দ দাস বলেন, এবার কোরবানির ঈদের পর গত সাত দিনে আট লাখের বেশি মানুষ কক্সবাজার ভ্রমণ করেছেন। তিনি বলেন, অতীতের মতো এবারও শহর ও সমুদ্রসৈকতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে ওয়াচ টাওয়ার থেকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া সৈকতের প্রতিটি গোলঘরে সার্বক্ষণিক পুলিশের অবস্থান এবং মোবাইল টিমসহ কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পর্যটন স্পটগুলোতে সাদা পোশাকেও দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশ সদস্যরা। 

আবাসিক হোটেলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে এএসপি জানান, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। গত কয়েকদিন এমন পাঁচটি অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। 

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহিদুল আলম বলেন, পর্যটকদের হয়রানি রোধে তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন। অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সচেতনতা বাড়াতে নিয়মিত মাইকিং করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
  • পর্যটকে টইটম্বুর কক্সবাজার সাত দিনে গেছেন ৮ লাখ
  • কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ