অবশেষে খোলপেটুয়ায় বিকল্প রিংবাঁধ, জনমনে স্বস্তি
Published: 4th, April 2025 GMT
টানা পাঁচ দিন পর সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নের খোলপেটুয়া নদীর ভাঙন কবলিত বেঁড়িবাধের পাশে জিও টিউবের মাধ্যমে বিকল্প রিংবাঁধ দিয়ে অবশেষে লোকালয়ে পানি প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধানে এবং সেনাবাহিনী সার্বিক সহযোগিতায় আজ শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দুপুর থেকে পানি লোকালয়ে প্রবেশ বন্ধ হয়েছে।
জানা গেছে, পানি উন্নয়নবোর্ড কর্তৃক নিয়োজিত ঠিকাদারের লোকজন এবং সেনা বাহিনীর দুটি টিম বিগত তিন দিন ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে জিও টিউবের মধ্যে বালি ভরে সেখানে বিকল্প রিংবাঁধ বাঁধার চেষ্টা করে আসছেন। অবশেষে আজ তারা রিংবাঁধটি বাঁধতে সক্ষম হয়েছেন।
রিংবাঁধ সম্পন্ন হওয়ায় শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দুপুর থেকে ভাঙন কবলিত বেঁড়িবাধ দিয়ে আর লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে না। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে ভাঙন কবলিত মানুষের মাঝে।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো-২) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো.
উল্লেখ্য, গত ৩১ মার্চ ঈদের দিন সকাল ৯টার দিকে পাউবো বিভাগ-২ এর আওতাধীন ৭/২ পোল্ডারের আনুলিয়া ইউনিয়নের বিছট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন প্রায় দুই’শ ফুট এলাকা জুড়ে বেড়িবাঁধ হঠাৎ করেই খোলপেটুয়া নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। মুহূর্তের মধ্যে গ্রামবাসীর ঈদের আনন্দ নিরানন্দে পরিণত হয়।
হাজার হাজার স্থানীয় গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে দফায় দফায় ভাঙন পয়েন্টে বিকল্প রিংবাঁধ নির্মাণের প্রাণপণ চেষ্টা চালালেও তা জোয়ারের তোড়ে ব্যর্থ হয়। এরই মধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়ে কয়েক হাজার মানুষ। পানিতে ভেসে যায় প্রায় চার হাজার বিঘা মৎস্য ঘের এবং ২১ হেক্টর জমির ফসল। বিধ্বস্ত হয় শতাধিক কাঁচা ঘর-বাড়ি। বিদ্যুৎ বিহীন থাকে সেখানকার তিনটি গ্রাম।
প্লাবিত এলাকায় দেখা দেয় সুপেয় পানির অভাব। একইসাথে মানুষের রান্না-খাবার, হাঁস-মুরগি ও গো খাবারের অভাব দেখা দেয়। বানভাসি মানুষ পার্শ্ববর্তী আশ্রয়কেন্দ্র ও পাউবো’র বাঁধে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নেন।
পানিতে প্লাবিত হয় আনুলিয়া ইউনিয়নের নয়াখালী, বিছট, বল্লবপুর, বাসুদেবপুর, আনুলিয়া, চেচুয়া, কাকবাশিয়া, মীর্জাপুর, চেউটিয়াসহ আশপাশের ১০ গ্রাম। বর্তমানে সেখানকার মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
ঢাকা/শাহীন/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব কল প র প রব শ
এছাড়াও পড়ুন:
আষাঢ়ের প্রথম দিনে রাজশাহীতে বৃষ্টি, জনমনে প্রশান্তি
আষাঢ়ের প্রথম দিনে আজ রোববার রাজশাহীতে বৃষ্টি ঝরেছে। প্রায় দুই সপ্তাহের তীব্র গরমের পর এই বৃষ্টির ছোঁয়ায় জনমনে ফিরেছে স্বস্তি। দুপুরে রাজশাহীতে ১৯ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীতে সর্বশেষ ৩ জুন ১৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। এর পর থেকে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করে। আকাশে মেঘ জমলেও বৃষ্টি হয়নি। রাজশাহীতে ঈদের দিন থেকে মৃদু তাপপ্রবাহ বইতে শুরু করে। ঈদের দিন ৭ জুন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়।
গতকাল শনিবারও দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ দুপুরের আগে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে বৃষ্টির পর তাপমাত্রা অনেকটা কমে এসেছে। আকাশে বেড়েছে মেঘের আনাগোনা।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ মো. রহিদুল ইসলাম বলেন, ‘তীব্র গরম শেষে আজ বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পর তাপমাত্রা কমেছে। এই বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশে এখন মৌসুমি বায়ু বেশি সক্রিয়।’
বৃষ্টির পর প্রচণ্ড গরমে ক্লান্ত এ মহানগর যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। বৃষ্টির পানিতে গাছপালা ও লতাপাতায় জমে থাকা ধুলাবালু ধুয়ে গেছে। নগরের মেহেরচণ্ডী এলাকায় কথা হয় রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী আবু ইউসুফের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আজ সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অন্য দিনের মতো প্রচণ্ড রোদ আর গরম ছিল। শরীর থেকে ঘাম ঝরছিল। কোথা থেকে যেন মেঘ উড়ে এসে বৃষ্টি দিয়ে গেল। সব ক্লান্তি কেটে গেছে।’
পবা উপজেলার মোসলেমের মোড়ে কথা হয় অটোরিকশাচালক মো. রনির সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘প্রচণ্ড রোদের কারণে অটোরিকশা নিয়ে বের হওয়া যেত না কয়েক দিন। ছাতা ও গামছা নিয়ে বের হতে হতো। আজকে বৃষ্টি হওয়ার পর থেকে ভালো লাগছে।’
নগরের মোহনপুর এলাকায় আগাছা পরিষ্কারের কাজ করছিলেন মো. আমিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে কাজ করছিলাম। তখন প্রচণ্ড রোদ ছিল। ঘেমে একাকার হয়ে গেছি। কাজ করতে করতেই দুপুরে বৃষ্টি আসে। শরীরের ঘাম বৃষ্টিতে ধুয়ে গেছে।’