চুনারুঘাটে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুতে ভারী যান চলাচল ও অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয় ঘেরাওর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহস্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আক্তার। এর জবাবে জেলা প্রশাসক ফোনে তাঁর বিরুদ্ধে মামলার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই নেত্রী।
খোয়াই নদীর ওপর ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি ভারী যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী। এর পরও সেতুর ওপর দিয়ে ভারী যান চলাচল করছে। বৃহস্পতিবার পৌর শহরে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তব্য দেওয়ার সময় বিএনপি নেত্রী শাম্মী আক্তার অভিযোগ করেন, সম্প্রতি তিনি অবৈধ বালু উত্তোলন এবং খোয়াই নদীর ওপর অবস্থিত ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে ভারি যান চলাচল নিষিদ্ধে প্রয়োজনে ডিসি অফিস ঘেরাওর কথা বলেন। পরদিন মোবাইল ফোনে কল করে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এবং চুনারুঘাটে তাঁকে ঢুকতে দেবেন না বলে হুমকি দেন জেলা প্রশাসক ড.
শাম্মী আক্তার বলেন, প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। সেই বালুবাহী ভারি ট্রাক চলছে রাজার বাজার ভায়া বাসুল্লা সড়কে খোয়াই নদীর ওপর অবস্থিত ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে। জনগণ এই অবস্থার পরিত্রাণ চায়। তিনি জনগণের পক্ষ থেকে দাবি আদায়ে কথা বলেছেন। এ সময় তিনি জেলা প্রশাসককে জনগণের দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে দ্রুত সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য জেলা প্রশাসক ফরিদুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও সাড়া মেলেনি। পরে তাঁর সরকারি নম্বরে করা ওয়াটসঅ্যাপ বার্তার উত্তরে তিনি জানান, বিএনপি নেত্রী শাম্মী আক্তার ডিসি-ইউএনও সম্পর্কে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। উপদেষ্টাকে অবাঞ্ছিত করার হুমকি দিয়েছেন। প্রশাসন সব সময় বালুখেকোদের বিরুদ্ধে। তিনি প্রকাশ্যে নেতিবাচক বক্তব্য দিয়েছেন। মামলা করা বা তাঁকে চুনারুঘাটে ঢুকতে না দেওয়ার হুমকি প্রদানের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে:
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ডিএনসিসির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত পশ্চিম শেওড়াপাড়া, পশ্চিম কাজীপাড়া ও সেনপাড়া পর্বতা এলাকায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা, ৫ কিলোমিটার নর্দমা ও দেড় কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণকাজের উদ্বোধন ও গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।
ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, ডিএনসিসির সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রকল্পটি কবে শুরু হবে, কবে শেষ হবে, কতা টাকা বরাদ্দ আছে—এসব তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। এছাড়া, রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ হলে নির্মাণ সামগ্রী কী, সেটা জনগণের জানা দরকার। যখন জনগণ জানবে, তখন তারা জবাবদিহি করতে পারবে।
তিনি বলেন, “আমি গত সপ্তাহে কাউকে না জানিয়ে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে চলমান কাজ পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম, রাস্তাকে ধরে রাখার জন্য যে ওয়াল (বিশেষ দেয়াল) দেওয়া হয়েছে, সেটার পিলার বানানোর কথা ছিল স্টোন দিয়ে; কিন্তু বানিয়ে রেখেছে ব্রিক দিয়ে। এটা বড় দুর্নীতি। স্থানীয় মানুষ যদি না জানে, কী নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হবে, তাহলে দুর্নীতি করাটা সহজ। তথ্যের যত বেশি আদান-প্রদান হবে, তথ্য যত বেশি পাবলিক করা হবে, জনগণ তত বেশি জবাবদিহি করতে পারবে। আমি ঠিকাদারকে জানিয়ে দিয়েছি, সঠিক নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করলে বিল দেব না। তারা বলেছে, এটা ঠিক করে দেবে।”
মোহাম্মদ এজাজ বলেন, যার যার এলাকার কাজ তারা বুঝে নেবেন। বুঝে নেওয়ার জন্য যত তথ্য ও সহযোগিতা লাগবে, সেটা আমরা দেব। ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে প্রকল্পের সব তথ্য ও ঠিকাদারের ফোন নম্বরসহ দেওয়া থাকবে। স্থানীয় জনগণ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ বুঝে নেবেন। আমরা চাই, সকলের অংশগ্রহণে উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হবে। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় সোসাইটি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতা পাচ্ছি। সবার অংশগ্রহণ বাড়াতে আমি বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে গণশুনানি করছি। প্রতি মাসে ফেসবুক লাইভে দেশে-বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সাথে যুক্ত হচ্ছি। ডিএনসিসির সবার ঢাকা অ্যাপ আছে, সেটির পাসওয়ার্ড পর্যন্ত আমাদের দিচ্ছে না। আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা ৪ কোটি টাকা খরচ করে এই অ্যাপ বানিয়েছে। পাসওয়ার্ড না দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।”
ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় হকারদের জন্য হাটা যায় না। মানুষের অবাধ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। ঢাকা শহরে মানুষের চলাচলের অধিকার সবার আগে, সেই অধিকার আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। মিরপুর-১০ এর প্রধান সড়কের যত হকার ও অটোরিকশা আছে, সেগুলো আমরা বন্ধ করে দেব। যারা এ ধরনের ইনফরমাল পেশায় যুক্ত আছেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্যও আমরা প্ল্যাটফর্ম করব। তাদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা আমরা তৈরি করব। এই শহরটা সবার, সবাই একসাথে বসবাস করব; কিন্তু অন্যদের কষ্ট না দিয়ে, অন্যের অধিকার নষ্ট না করে।
বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
ঢাকা/এএএম/রফিক