শরীয়তপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১৬
Published: 5th, April 2025 GMT
শরীয়তপুরের জাজিরায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে নারীসহ ১৬ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (৫ এপ্রিল) সকাল থেকে দফায় দফায় উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের আহসানুল্লাহ মুন্সীকান্দি ও বিলাসপুর এলাকায় সংঘর্ষ চলে। এসময় শতাধিক হাত বোমার (ককটেল) বিস্ফোরণ ঘটনো হয় বলে জানান স্থানীয়রা।
আরো পড়ুন: আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ, শতাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণ
আরো পড়ুন:
আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ, শতাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণ
গোপালগঞ্জে দু’পক্ষের সংঘর্ষ-ভাঙচুর, আহত ৩৫
আহতরা হলেন- মারুফ মাল (২৫), হাসান মুন্সি (৫০), সজীব খলিফা (২২), নাইম খা (১৯), সাকিব মাদবর (১৯), কামাল খা (১৯), বিজয় সরদার (১৯), রেজাউল ব্যাপারি (১৯), শহর আলী মাদবর (৫০), রিফাত খা (১৯), শুভ ব্যাপারী (১৯), ফাহিমা বেগম (৪০), ফাতেমা বেগম (৪৫), হাসান মুন্সী (৪৫), ইসাম মুন্সী (২০), রিনা বেগম (৫০)। তাদের বাড়ি বিলাসপুর ইউনিয়নে। তারা জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
আহতদের মধ্যে মারুফকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বিলাসপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কুদ্দুস বেপারী এবং একই ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা জলিল মাদবরের সমর্থকদের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। এনিয়ে তাদের মধ্যে আগেও কয়েকবার সংঘর্ষ হয়েছে।
আজ সকালে ইউনিয়নের আহসানুল্লাহ মুন্সীকান্দি ও বিলাসপুর এলাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় শতাধিক হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সংঘর্ষ চলাকালে দুই পক্ষের ১৬ জন আহত হন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে, সংঘর্ষ এবং হাতবোমা বিস্ফোরণের ১৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে দেখা যায়, একটি খোলা মাঠে উভয় পক্ষের লোক মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন। অনেককে হাতে বালতি নিয়ে হেলমেট পরিহিত অবস্থায় দেখা গেছে। বালতি থেকে তাদের হাতবোমা নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। বোমাগুলো বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়ে ধোঁয়ার সৃষ্টি করছে বলেও ভিডিওতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কুদ্দুস বেপারী এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা জলিল মাদবরের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও নম্বর দুটি বন্ধ পাওয়া যায়।
নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশিক মাহামুদ বলেন, “জলিল বেপারী ও কুদ্দুস বেপারীর মধ্যে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হওয়াকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা চলছিল, যার জেরে তাদের সমর্থকরা এলাকায় অস্থিরতা সৃষ্টি করে। ঈদের সময় মানুষের সমাগম বেশি থাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ককটেল বিস্ফোরণ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।”
তিনি আরো বলেন, “আহসানুল্লাহ মুন্সীকান্দি ও বিলাসপুর এলাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।”
ঢাকা/সাইফুল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ আহত ক ন দ র কর শত ধ ক হ ত এল ক য় ম দবর উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস