‘মা, আমি কিছু খাব’ হাসপাতালে ভর্তির ৭২ ঘণ্টা পর চোখ মেলে বলল গুলিবিদ্ধ শিশুটি
Published: 5th, April 2025 GMT
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ডে শুয়ে আছে শিশু আবিদা সুলতানা। তার পেটে বুলেটের গভীর ক্ষত, শ্বাসপ্রশ্বাসে কষ্ট হচ্ছে। শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে নেওয়ার ৭২ ঘণ্টা পর চোখ খুলে শিশুটি। একবার শুধু বলেছে, ‘মা, আমি কিছু খাব।’
ছয় বছর বয়সী আবিদার বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানা এলাকার বশিকপুর গ্রামে। গত মঙ্গলবার বিকেলে প্রতিবেশী অহিদ উদ্দিন গুলি চালায় আবিদাকে লক্ষ্য করে। গুলি তার পেটে ঢুকে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়। অহিদের বাড়ির উঠানে তার মেয়ের সঙ্গেই খেলা করছিল আবিদা। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এলাকায় বিরোধের জেরে ঘটেছে নির্মম এ ঘটনা।
শিশুটির বাবা ইব্রাহিম খলিল তখন বাড়িতে ছিলেন না। খবর পেয়ে ছুটে আসেন। মেয়েকে কোলে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতে কেবল বলছিলেন, ‘চোখ বন্ধ করিস না, তুই কিছু বল, বাবা।’ আবিদার মা আমেনা বেগম কাঁদতে কাঁদতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার মেয়ে তো কারও ক্ষতি করেনি। সে তো খেলছিল জেরিনের (অহিদের মেয়ে) সঙ্গে। হঠাৎ অহিদ এসে গুলি করল। আমি জানালা দিয়ে ডাকছিলাম মেয়েকে–সে তো জানত না ওর জন্য মৃত্যু অপেক্ষা করছে।’ তিনি জানান, ঘটনার দিন বিকেলে কয়েকজন মোটরসাইকেলে এসে অহিদের বাড়িতে ঢোকে। কিছুক্ষণ পরে ভয়াবহ সেই মুহূর্ত। অহিদ ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়ে আমগাছের নিচে খেলা করতে থাকা আবিদাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পরে সে মানিব্যাগ থেকে টাকা বের করে চিকিৎসার জন্য দিতে চেয়েছিল।
চিকিৎসকরা বলছেন, শিশুটি শঙ্কামুক্ত নয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা.
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে অহিদ উদ্দিন এবং ইব্রাহিম খলিলের ভাই ছোট ইউসুফের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছে। একে কেন্দ্র করে গুলি চালানো হয়েছে। শিশুটি হাসপাতালে নেওয়ার সময় বলছিল– ‘আমাকে অহিদ গুলি করেছে।’ এক পর্যায়ে তার চোখ বন্ধ হয়ে আসে। মোবাইলে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা গেছে এমন দৃশ্য। এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় দেখা দেয় উত্তেজনা।
এ ঘটনায় চন্দ্রগঞ্জ থানায় দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে অহিদ উদ্দিন, তাঁর স্ত্রী ফাতেমা বেগম আঙ্কুরী ও ছেলে মো. ফাহিমকে। পুলিশ আঙ্কুরীকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্য দু’জন পলাতক।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: লক ষ ম প র
এছাড়াও পড়ুন:
নায়িকা হতে আসিনি, তবে...
গুটি, সুড়ঙ্গ, মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন থেকে ওমর—সব সিনেমা-সিরিজেই প্রশংসিত হয়েছে আইমন শিমলার অভিনয়। অল্প সময়ের উপস্থিতিতেও নিজের ছাপ রাখতে পেরেছেন এই তরুণ অভিনেত্রী। ধূসর চরিত্রেও তিনি সাবলীল, অন্য তরুণ অভিনেত্রীদের থেকে এখানেই আলাদা শিমলা। তবে একটা কিন্তু আছে। এখন পর্যন্ত তাঁর অভিনীত আলোচিত চরিত্রগুলোর সবই চাটগাঁইয়া। শিমলা নিজে চট্টগ্রামের মেয়ে, একটা সময় পর্যন্ত বন্দরনগরীর বাইরে চেনাজানা ছিল সীমিত। এক সিরিজে তাঁর চাটগাঁইয়া ভাষা আলোচিত হওয়ায় পরপর আরও কাজে তাঁকে চাটগাঁইয়া চরিত্রের জন্য ভেবেছেন নির্মাতা।
এ প্রসঙ্গ দিয়েই অভিনেত্রীর সঙ্গে আলাপের শুরু করা গেল। শিমলা জানালেন, এ নিয়ে তাঁর নিজেরও অস্বস্তি আছে। চেষ্টা করছেন ‘চাটগাঁইয়া দুনিয়া’র বাইরে যেতে। সঙ্গে এ–ও জানিয়ে রাখলেন, ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে তাঁর নিজের চরিত্র পছন্দ করে নেওয়ার সুযোগ কমই ছিল।
‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শুটিংয়ের ঠিক আগে জেনেছি চরিত্রটি সম্পর্কে। তখন তো কিছু করার থাকে না। তবে যেসব কাজ করেছি, সবই আলোচিত পরিচালক আর অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে; এ অভিজ্ঞতার মূল্যও কম নয়। শিহাব (শিহাব শাহীন) ভাইয়ের সঙ্গে মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন, কাছের মানুষ দূরে থুইয়া, রবিউল আলম রবি ভাইয়ের সঙ্গে ফরগেট মি নট আমাকে সমৃদ্ধ করেছে। এ ছাড়া (শহীদুজ্জামান) সেলিম ভাইয়ের কথা বিশেষভাবে বলব। সুড়ঙ্গ ও ওমর—দুই সিনেমায় তিনি আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন,’ বলছিলেন তিনি।
ঈদে মুক্তি পাওয়া এম রাহিমের সিনেমা জংলিতেও আছেন শিমলা। এ ছবিতে অবশ্য তাঁর চরিত্রটি চাটগাঁইয়া ভাষায় কথা বলে না। সে জন্য সিনেমাটি নিয়ে তিনি বেশি উচ্ছ্বসিত। ‘মুক্তির পর থেকে সিনেমা তো বটেই, আমার অভিনীত চরিত্রটি নিয়ে প্রশংসা পাচ্ছি কিন্তু দুঃখের কথা, আমি নিজেই এখনো দেখতে পারিনি। ব্যক্তিগত ঝামেলা, শুটিংয়ে ব্যস্ততার কারণে সম্ভব হয়নি। শিগগিরই আমার টিমের সঙ্গে দেখতে চাই,’ বলছিলেন তিনি।
আইমন শিমলা