সৌরবিদ্যুতের ব্যবসায় আসছে প্রাণ-আরএফএল
Published: 7th, April 2025 GMT
এবার সৌরবিদ্যুতের ব্যবসায় আসছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী প্রাণ–আরএফএল। তারা সৌর থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন করতে চায়। তাদের বিদ্যুৎ কিনবে বিশ্বের খ্যাতনামা পোশাক বিপণনকারী সুইডিশ ব্র্যান্ড এইচঅ্যান্ডএমকে (হেন্স অ্যান্ড মরিটজ) পোশাক সরবরাহকারী বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো। মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থিত মাছের খামারে এই বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।
এই জ্বালানি উৎপাদনে তাদের অর্থায়ন করবে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি)। প্রাথমিকভাবে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
দেশে আজ সোমবার শুরু হওয়া বিনিয়োগ সম্মেলনের তৃতীয় দিনে আগামী বুধবার এ বিষয়ে এইচঅ্যান্ডএম, প্রাণ–আরএফএল ও আইএফসির মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি সই হবে।
জানা গেছে, মৌলভীবাজারের প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের সমন্বিত কৃষি খামার রয়েছে। সেখানে তাদের ৩৫০ একর জমি রয়েছে। এই জমিতে সৌর প্যানেল স্থাপন করতে চায় গ্রুপটি। সেখানে উৎপাদিত বিদ্যুৎ কিনবে এইচঅ্যান্ডএমকে পোশাক সরবরাহকারী বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করলেও তা ক্রয়-বিক্রয় ও সরবরাহের ক্ষেত্রে দেশে সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা নেই। ফলে দ্রুত নীতিমালা তৈরির তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, বিশ্বের বড় ক্রেতারা কার্বন নিঃসরণ টেকসই উৎপাদনব্যবস্থার দিকে নজর দিচ্ছেন। এর মধ্যে এইচঅ্যান্ডএম পরিবেশের ওপর প্রভাব কমাতে এবং টেকসই ভবিষ্যতের জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকেও মনোযোগ দিচ্ছে। এ জন্য বাংলাদেশের পোশাক সরবরাহকারীদের কাছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিক্রি করতে চায় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ১০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করব। এ ক্ষেত্রে ক্রয়-বিক্রয় ও সরবরাহের জন্য সরকারকে নীতি সহায়তা দিতে হবে। যত দ্রুত নীতি সহায়তা দেওয়া হবে, তত দ্রুত আমরা কাজ শুরু করতে পারব। প্রাথমিকভাবে আইএফসি থেকে অর্থায়ন নেওয়া হবে। পরে যেখান থেকে কম সুদে অর্থ মিলবে, সেখান থেকে নেওয়া হবে।’
প্রয়াত শিল্পপতি আমজাদ খান চৌধুরী ১৯৮১ সালে ৪২ বছর বয়সে সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়ে শুরু করেছিলেন ফাউন্ড্রি বা টিউবওয়েল তৈরি ও আবাসনের ব্যবসা। সম্বল ছিল পেনশনের টাকা। তবে আবাসন ব্যবসা তিনি বেশি দিন করেননি। আবাসন ব্যবসা বাদ দিয়ে ফাউন্ড্রি ব্যবসায় বেশি নজর দেন তিনি। আমজাদ খান চৌধুরী রংপুরে ফাউন্ড্রি প্রতিষ্ঠা করেন। এর নাম দেন রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড (আরএফএল)। এরপর তিনি প্রবেশ করেন খাদ্যপণ্য ও ভোগ্যপণ্যের বাজারে। ক্ষুদ্র পরিসরে যাত্রা শুরু করে বর্তমানে ৩১টির বেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের। প্রাণের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের ১৪৫টি দেশে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প র ণ আরএফএল গ র প সরবর হ ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে, নিম্নমুখী চালের দাম
ঈদের বন্ধের আমেজ কাটতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে চট্টগ্রামের পাইকারি ও খুচরা বাজারগুলো। ক্রেতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারগুলোতে বেড়েছে সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহ। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক দিনের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে সবজির দাম। পেঁয়াজ, রসুন ও চালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও নিম্নমুখী।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার পর নগরের কাঁচাবাজারে সবজির সরবরাহ কমে যায়। ফলে দাম ছিল কিছুটা বাড়তি। গত রোববার ও সোমবারের দিকে নগরের আড়তগুলোতে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে। অধিকাংশ সবজির দামও ৪০ টাকার আশপাশে ছিল। তবে গত মঙ্গলবার থেকে আবারও বাজারে পুরোদমে সবজির সরবরাহ শুরু হয়েছে। যার কারণে দাম কমতে শুরু করেছে।
আজ শুক্রবার নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজারের পাইকারি আড়তে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২০ থেকে ৪০ টাকা দরে। বেশির ভাগ সবজির দাম প্রতি কেজি ১০ থেকে ৩৫ টাকা। তবে খুচরা বাজারগুলোতে প্রায় দ্বিগুণ দামে সবজি বিক্রি হতে দেখা যায়। নগরের বহদ্দারহাট, চকবাজার, সাব এরিয়া ও কাজির দেউড়ি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব বাজারে অধিকাংশ সবজির দাম ৬০ টাকার বেশি। লাউ, মিষ্টিকুমড়া ও ফুলকপির দাম কিছুটা কম। এসব সবজির দাম ৫০ টাকার আশপাশে। খুচরা বাজারগুলোতে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি দরে। পরিবহন খরচ ও আগে কেনার অজুহাতে বাড়তি দাম নিচ্ছেন বিক্রেতারা। রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়তদার নুরুল ইসলাম বলেন, বাজারে সব সবজির দাম কম। কিন্তু খুচরা ব্যবসায়ীদের কারণে ভোক্তাদের ভোগান্তি হচ্ছে। আড়তের দামের দ্বিগুণ দামে তাঁরা সবজি বিক্রি করছেন।
সবজির বাজারের পাশাপাশি পেঁয়াজ, রসুন ও চালের দামও নিম্নমুখী। খাতুনগঞ্জের পাইকারি আড়তে আজ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫২ টাকা দরে। খুচরা পর্যায়ে দাম ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি। অন্যদিকে রসুনের কেজি আড়তে ছিল ৮৫ থেকে ১১০ টাকা। খুচরায় সেটি ১০০ থেকে ১৩০ টাকা।
পাহাড়তলী চালের আড়তে মোটা চাল (গুটি, স্বর্ণা) কেজিপ্রতি ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে জিরাশাইল ৭২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত তিন দিন আগ থেকে চালের বাজার কিছুটা নিম্নমুখী বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) চালের দাম কমেছে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বলেন, চালের সরবরাহ যথেষ্ট আছে। চালের দাম বাড়ার আশঙ্কা নেই এখন।