সৃজনে-মননে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে দেশজুড়ে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানবিক কাজ করছে সমকাল সুহৃদ সমাবেশ। এ যাত্রায় ঈশ্বরদীর সুহৃদরাও পিছিয়ে নেই। সেরা সুহৃদ উদযাপন, কার্যক্রমের মূল্যায়ন এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে উপজেলার সুহৃদদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় ‘সুহৃদ উৎসব’
এবার ঈদ আনন্দ একটু বেশিই ছিল ঈশ্বরদীর সুহৃদ সমাবেশের সদস্যদের। ভালো কাজের মূল্যায়ন ও অনুপ্রেরণা জোগাতে ২০২৩-২৪ সালে পরিচালিত কার্যক্রমের ওপর ভিত্তি করে ‘সেরা সুহৃদ’ হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন তারা। ফলে সুহৃদদের মধ্যে বাড়তি উচ্ছ্বাস কাজ করছিল। তবে অনেক আগেই পরিকল্পনা ছিল সমকালের ২০ বছর উদযাপন, ঈদ পুনর্মিলনী ও সুহৃদ উৎসব আয়োজনের। ঈদের আগে থেকেই চলছিল উৎসব আয়োজনের প্রস্তুতি। দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার। ঈশ্বরদীর গোকুলনগরে গোল্ডেন জাজিরা পার্টি সেন্টারে বিভিন্ন স্থান থেকে
একে একে আসতে শুরু করেন সুহৃদরা। নির্ধারিত সময়ের আগেই মিলনমেলায় পরিণত হয় ভেন্যু প্রাঙ্গণ। গল্প-আড্ডায় মেতে ওঠেন সুহৃদরা। একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি চলে ছবি তোলার প্রতিযোগিতা।
এবারের উৎসবে মূল আকর্ষণ ছিল সেরা সুহৃদ হিসেবে পুরস্কার অর্জন। গত ২০ মার্চ পটুয়াখালী, রাজবাড়ী ও অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ঈশ্বরদীর সুহৃদরাও পুরস্কৃত হন। তারা বিজয়ী ইউনিটের সঙ্গে মিলিত হন ঢাকা সুহৃদদের সঙ্গে। সমকাল কার্যালয় থেকে ফিরে উৎসবে এবারই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে মিলিত হলেন সুহৃদরা।
নতুন সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী সমকালে যোগ দেওয়ার দিনেই তাঁর সঙ্গে পরিচিতি হওয়ার সুযোগ, উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খানের দিকনির্দেশনা, সুহৃদ সম্পাদক আসাদুজ্জামানের সঙ্গে প্রাণবন্ত আলোচনার পাশাপাশি ঢাকার সুহৃদদের সঙ্গে পরিচয় ও আড্ডার গল্প শোনান পুরস্কার গ্রহণকারী সদস্যরা। দেশসেরা হওয়ার গল্প সুহৃদদের এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা জোগায়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিনিয়র আইনজীবী জামিল আখতার এলাহী। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা মাহ্বুবুর রহমান পলাশ, ঈশ্বরদীর পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মো.
জামিল আখতার এলাহী বলেন, সুহৃদরা ঈশ্বরদীতে যেভাবে কাজ করে চলেছেন, তা দেখে অন্যরাও অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। ভালো কাজগুলো অব্যাহত রাখতে হবে। সাংগঠনিক চর্চার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
মাহ্বুবুর রহমান পলাশ বলেন, সুহৃদদের এ ঐক্যবদ্ধ পথচলা সমাজে দারুণ প্রভাব ফেলেছে। সামনের দিনে সুহৃদদের সঙ্গে আমরাও থাকব।
সুহৃদ আব্দুল আলিম বিশ্বাস মিঠু বলেন, দেশসেরা পুরস্কারপ্রাপ্তির মধ্য দিয়ে আমরা আরও ভালো কাজ করার অনুপ্রেরণা পেয়েছি। এ যাত্রা অব্যাহত থাকবে।
সুহৃদ সমাবেশ ঈশ্বরদীর সভাপতি আব্দুল আলিম বিশ্বাস মিঠুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সমকালের ঈশ্বরদী প্রতিনিধি সেলিম সরদার। আলোচনা পর্বে বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইমদাদুল হক আমান, ঈশ্বরদী সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের সহসভাপতি জাহিদুল আলম সনু, যুগান্তর স্বজন সমাবেশের সভাপতি আফছার আলী, ‘সবুজ পৃথিবী’ ঈশ্বরদীর সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম বাবু, প্রধান শিক্ষক গোলাম রসুল, রাজনীতিক নুরুল ইসলাম আক্কেল মালিথা, ব্যবসায়ী আব্দুস সামাদ, রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, খন্দকার তৌফিক আলম সোহেল। অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক কর্মী নুরুল ইসলাম বাবলু, সুহৃদ ফিরোজ আহমেদ, হাসান চৌধুরী, দুর্জয় ইসলাম লিমন, আব্দুল্লাহ শামীম চঞ্চল, নাজমুল হক রঞ্জন, সজিবুর রহমান, তানহা ইসলাম শিমুল, রাকিবুল ইসলাম রূপম, খায়রুল ইসলাম সবুজ, আলমাস হোসেন হিটু, পরিতোষ পালসহ শতাধিক সুহৃদ ও শুভার্থী উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ঈশ্বরদীর সুহৃদ ইউনিটকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়। পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন প্রত্যয় ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে শেষ হয় আয়োজন। v
সমন্বয়ক সুহৃদ সমাবেশ, ঈশ্বরদী
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র ল ইসল ম অন ষ ঠ ন র রহম ন ক জ কর স হ দর অন প র প রস ক সমক ল
এছাড়াও পড়ুন:
ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।
কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।
এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।
অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।
একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।
যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’