যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরোপের বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা গতকাল সোমবার ট্রাম্প প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছেন। আমরা ইতিবাচক কিছু প্রত্যাশা করছি। আমরাও সহযোগিতা করব, তারাও সহযোগিতা করবে। এটা উভয়ের জন্য লাভজনক হয়, এমন ব্যবস্থা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।’

আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ এ কথাগুলো বলেন। এ সময় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনও উপস্থিত ছিলেন।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘ওনারা (যুক্তরাষ্ট্র) করে ফেলল আমরা সমন্বয় করব, বিষয় সেটা নয়। আমরা আমাদের ইস্যুটা তুলে ধরব। আমি বিশ্বাস করি যে বিষয়টা সমাধান হবে। ইতিবাচক কিছু হবে। ইতিবাচক বলতে তাদেরও লাভ হবে, আমাদেরও লাভ হবে।’

এদিকে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘বাণিজ্য–ঘাটতি কমাতে আরও ১০০ পণ্যকে শুল্কমুক্ত তালিকায় যুক্ত করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। আমাদের মূল বিষয় হচ্ছে বাণিজ্য–ঘাটতি কমানো। আমরা এ নিয়ে কাজ করছি।’

সামগ্রিকভাবে শুল্ক আরোপের ফলে মানুষের মনে শঙ্কা তৈরি হয়েছে, এটা সামাল দিতে কৌশল কী হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘বিভিন্ন রকমের বিশ্লেষণ করছি। আসলে বিষয়টা অতি পরিবর্তনশীল একটা বিষয়।’

সাংবাদিকদের উদ্দেশে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, গতকাল আমেরিকান প্রশাসন বলেছে, চীন যে ট্যারিফ ঘোষণা করেছে, এর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে আরও ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে পারে। এ ধরনের পরিবর্তনশীল অবস্থায় যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া জটিল।

ক্রয় কমিটি যা অনুমোদন

ক্রয় কমিটি যা অনুমোদন দেওয়া হয়, তা জানান অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আজ অনুষ্ঠিত ক্রয় কমিটির বৈঠকে মসুর ডাল, চাল ও এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পণ্যগুলোর দামও আগের তুলনায় কম। কারণ হচ্ছে, আমরা একটু প্রতিযোগিতা করতে চাচ্ছি। আগে গুটিকয় সরবরাহকারী পণ্য দিতেন, উন্মুক্ত করার কারণে প্রতিযোগিতা বেড়েছে। ফলে আমরা কম দামে পণ্য পাচ্ছি। এতে অনেক সাশ্রয় হচ্ছে।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৪,৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক

ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তিতে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিব আহমদ কায়কাউসের বিরুদ্ধে অভিযোগটি অনুসন্ধানের দায়িত্ব পেয়েছেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক রেজাউল করিম। গতকাল বুধবার এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন। 

দুদক গত ১৬ এপ্রিল এ নিয়ে আদেশ জারি করলেও গতকালই বিষয়টি জানাজানি হয়। দুদকের আদেশে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) পাশ কাটিয়ে আদানির সঙ্গে চুক্তি করে সরকারের সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি দিয়েছেন আহমদ কায়কাউস। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে এ চুক্তি-সংক্রান্ত কাগজপত্র খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এ জন্য চুক্তির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যাবতীয় নথিপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি, বিদ্যুৎ কেনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম, পদবি, বর্তমান ঠিকানা এবং এ নিয়ে কোনো বিভাগীয় তদন্ত করা হয়েছে কিনা– খতিয়ে দেখতে হবে।   

আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তিটি শুরু থেকেই বিতর্কিত। ২৫ বছরের এ চুক্তির পদে পদে রয়েছে অসমতা। চুক্তিতে এমন অনেক শর্ত রয়েছে, যেগুলোর কারণে ২৫ বছরে প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা বাড়তি নিয়ে যাবে আদানি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ