রাজশাহীর চারঘাটে মদ পানের পর অসুস্থ হয়ে মাসুদ রানা (৩৫) ও নাদিম ইসলাম (২৮) নামের দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। 

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকালে দুই ঘণ্টার ব্যবধানে তাদের মৃত্যু হয়। তাদের দুজনের বাড়ি উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নে। তবে পরিবারের দাবি গ্যাস্ট্রিক জনিত কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে। 

মাসুদ রানা ইসলাম সকালে সাড়ে সাতটার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ও নাদিম ইসলাম হাসপাতালে নেওয়ার পথে ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে মারা যান। এ ঘটনায় মোহাম্মদ টনি (২৯) নামের আরও এক ব্যক্তি গুরুতর অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। 

মারা যাওয়া মাসুদ রানা নিমপাড়া ইউনিয়নের কালাম আলীর ছেলে এবং নাদিম নিমপাড়া ইউনিয়নের হাবিবপুর এলাকার শামসুল হকের ছেলে। চিকিৎসাধীন টনি নিমপাড়া ইউনিয়নের হাবিবপুর এলাকার মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে। টনি নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। 

মদ খেয়ে চিকিৎসাধীন মোহাম্মদ টনি বলেন, “আমার গাড়ি না থাকায় মাসুদ রানার ভ্যান রিজার্ভ নিয়ে চলাফেরা করি। আর নাদিম আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু। রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মাসুদ রানা, নাদিম আমি ও মেহেদী নামে একজনসহ চারজন উপজেলার ঝিকরা এলাকার মামুন নামের এক ব্যাক্তির কাছে মদ খেতে গিয়েছিলাম। আমি সামান্য একটু খেতেই শরীর ঝিম ঝিম লাগে এজন্য বেশি খাইনি। কিন্তু নাদিম ও রানা বেশি পরিমাণে মদ পান করে।”

তিনি আরো বলেন, “সেদিন রাত থেকেই আমরা তিনজন অসুস্থ হয়ে পড়ি। শরীর খারাপ থাকায় ও ঘুমে বিছানা থেকে সোমবার কেউ উঠতে পারিনি। সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে মাসুদ রানা ও নাদিম আরো বেশি অসুস্থ হয়ে যায়। পরবর্তীতে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করে। আমারও অসংখ্যবার বমি হয়েছে। এখনো বিছানা থেকে উঠতে পারছি না। মদ পানের কারণেই আমার বন্ধুদের মৃত্যু হয়েছে।”

মৃত মাসুদ রানার স্ত্রী সাবিনা খাতুন বলেন, “আমার স্বামী রবিবার রাত ৮টার দিকে বাড়িতে এসেছে। মদ খেয়ে এসেছিল কিনা আমাকে কিছু বলেনি। রাতে দুইটি বিস্কুট ছাড়া আর কিছু খায়নি। গতকাল সারাদিন ঘুমিয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে পেট ব্যাথা শুরু হলে অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যা ভেবে রাত দুইটার দিকে হাসপাতালে নিলে সকালে তার মৃত্যু হয়।”

চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, “নিমপাড়া এলাকার দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে আছে। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/কেয়া/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এল ক র

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারি কার্যালয়ে মাইক্রোসফট টিমসের ব্যবহার নিষিদ্ধ করছে জার্মানির একটি স্টেট, কেন

সরকারি কার্যালয়ে মাইক্রোসফটের টিমসসহ বেশ কয়েকটি সফটওয়্যারের ব্যবহার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানির উত্তরাঞ্চলীয় শেলসভিগ-হোলস্টেইন স্টেট। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে আগামী তিন মাস পর পুলিশ, বিচার বিভাগ ও প্রশাসনের অধিকাংশ কর্মকর্তা মাইক্রোসফট টিমস ব্যবহার করতে পারবেন না। তথ্য সংরক্ষণে বিদেশি প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে নিজস্ব ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে তুলতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

স্টেট গভর্নমেন্টের ডিজিটাল রূপান্তরবিষয়ক মন্ত্রী ডির্ক শ্রোয়েডটার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমরা তথ্যের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চাই। এ জন্যই মাইক্রোসফট টিমসের ব্যবহার বন্ধ করে দিচ্ছি।’ নতুন সিদ্ধান্তের আওতায় প্রাথমিকভাবে শেলসভিগ-হোলস্টেইন স্টেটের ৬০ হাজার সরকারি কর্মচারীর মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার কর্মী এই পরিবর্তনের আওতায় আসবেন। পরবর্তী ধাপে আরও প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষককে একই ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

স্টেট গভর্নমেন্ট ২০২৪ সাল থেকেই ধাপে ধাপে মাইক্রোসফটের সফটওয়্যার ব্যবহারের বিকল্প খুঁজে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এই পরিবর্তনের অংশ হিসেবে অফিস ব্যবস্থাপনায় মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ও এক্সেলের পরিবর্তে ‘লিব্রে অফিস’ এবং ই–মেইল ও ক্যালেন্ডার ব্যবস্থাপনায় ‘মাইক্রোসফট আউটলুক’–এর জায়গায় ‘ওপেন-এক্সচেঞ্জ’ ব্যবহার শুরু হয়েছে।

পরবর্তী ধাপে অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ বাদ দিয়ে একটি লিনাক্সভিত্তিক বিকল্প চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। ডির্ক শ্রোয়েডটার জানান, ইউক্রেন যুদ্ধের পর ইউরোপজুড়ে জ্বালানিনির্ভরতা নিয়ে যেমন সচেতনতা তৈরি হয়েছে, তেমনি ডিজিটাল নিরাপত্তা ও তথ্য নিয়ন্ত্রণ নিয়েও নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। তার ভাষায়, ‘এই যুদ্ধ আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে, আমরা শুধু জ্বালানিতেই নয়, তথ্যপ্রযুক্তিতেও কতটা নির্ভরশীল। এখন সময় এসেছে এসব নির্ভরতা কাটিয়ে ওঠার।’ স্টেট গভর্নমেন্ট জানিয়েছে, মাইক্রোসফটের নিয়ন্ত্রণে থাকা কোনো ক্লাউড সেবার বদলে জার্মানির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ক্লাউড প্ল্যাটফর্মেই তারা সরকারি তথ্য সংরক্ষণ করবে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর ইউরোপের নির্ভরতা নিয়ে কয়েক বছর ধরেই বিতর্ক চলছে। বিশেষত মাইক্রোসফটের বাজার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি প্রতিযোগিতাবিষয়ক তদন্ত শুরু করে। অভিযোগ ছিল, মাইক্রোসফট তাদের ব্যবসায়িক অ্যাপ্লিকেশনের সঙ্গে টিমস সফটওয়্যার বান্ডিল করে বিক্রি করে, যা বাজারে প্রতিযোগিতার সুযোগ কমিয়ে দেয়। ডির্ক শ্রোয়েডটার বলেন, ‘শেলসভিগ-হোলস্টেইনের নেওয়া এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমাদের কাছে পরামর্শ চাওয়া হচ্ছে।’

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ