৮০০ কোটি রুপি বাজেটের সিনেমায় আল্লু অর্জুন
Published: 9th, April 2025 GMT
দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার সুপারস্টার আল্লু অর্জুন। তাঁর নামের আগে এখন উচ্চারিত হয় পুষ্পা। একের পর বড় বাজেটের সিনেমায় অভিনয় করে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি কুড়িয়েছেন এই নায়ক।
এবার আরও বড় বাজেটের সিনেমাতে অভিনয় করতে যাচ্ছেন তিনি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম পিঙ্কভিলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আল্লু অর্জুন ব্লকবাস্টার পরিচালক অ্যাটলির সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। তাদের এই সিনেমার বাজেট ৮০০ কোটি রুপির বেশি। মঙ্গলবার আল্লু অর্জুনের জন্মদিনে এলো এই ছবির ঘোষণা। ছবিটিরি সান পিকচার্সের ব্যানারে নির্মিত হবে। রাজামৌলির ‘এসএমবি ২৯’-এর পর এটিই ভারতীয় সিনেমার দ্বিতীয় সবচেয়ে ব্যয়বহুল ছবি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সিনেমার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র পিঙ্কভিলাকে জানিয়েছে, ‘এই সিনেমার পারিশ্রমিক বাবদ আল্লু অর্জুনকে প্রায় ১৭৫ কোটি রুপি দেওয়া হচ্ছে। প্রযোজনা জায়ান্ট সান পিকচার্স এই প্রকল্পের লাভের ১৫ শতাংশ অংশীদারিত্বের চুক্তিতে রয়েছে। অন্যদিকে অ্যাটলি তাঁর ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সিনেমার জন্য ১০০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নেবেন।’
এ ছাড়াও আনুমানিক ৮০০ কোটি রুপির প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয় ২০০ কোটি রুপি ধরা হয়েছে ও ২৫০ কোটি রুপির ভিএফএক্সের ওপর ভিত্তি করে ক্যানভাস তৈরি করা হবে। সূত্রটি আরও বলেছে, ‘সিনেমার নির্মাতারা এটিকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে চান এবং একটি প্যান-ইন্ডিয়ান ব্লকবাস্টার করতে সব ধরনের চেষ্টা করবেন।’
এদিকে মঙ্গলবার সান পিকচার্স এক ঘোষণামূলক ভিডিও শেয়ার করে সিনেমাটির বিষয়ে কিছুটা হলেও ধারণা দেন। যেখানে কলানিথি মারান, আল্লু ও অ্যাটলিকে একসঙ্গে দেখা যায়। এরপর তাদের দেখা যায় সোজা লস অ্যাঞ্জেলেসে পা রাখতে– হলিউডের প্রথম সারির এক ভিএফএক্স সংস্থার টিমের সঙ্গে এই ছবি নিয়ে জোর আলোচনা করতেও দেখা যায় তাদের। সেখানেই আল্লু অর্জুনকে দেখা যায় একের পর এক মাস্ক ও গিয়ার ট্রাই করতে, নিজের ব্যক্তিত্বের ৩-ডি ক্যারেক্টারকে পর্দায় দেখানোর প্রক্রিয়াও পরোক্ষ করতে দেখা যায় তাঁকে।
এ ছবির গল্প শুনে হলিউড টিমও রীতিমতো চমকে গিয়েছেন। ‘আয়রন ম্যান ২’এবং ‘ট্রান্সফর্মাস: রাইজ অব দ্য বিটস’-এর ভিএফএক্স গুরু জেমস ম্যাডিগান ও স্পেকট্রাল মোশনের আর্ট ডিরেক্টর মাইক এলিজালদের এই গল্প শুনে চমকে গিয়েছেন।
মজার ব্যাপার হলো, এসএস রাজামৌলির সঙ্গে মহেশ বাবুর সিনেমাটি প্রায় ১০০০ কোটি রুপি বাজেটে নির্মিত হচ্ছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
লাখপুরের রংবাহারি রাম্বুটান
১৯ জুলাই সকাল ১০টা। নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মরজাল বাজারে গাড়ি থেকে নামলাম। ততক্ষণে ব্যাপারীদের পাইকারি কেনাকাটা শেষ। মালপত্র বেঁধেছেঁদে গাড়িতে তোলা হচ্ছে। কিন্তু ফুটপাতে তখনো ভিড়। খুচরা ক্রেতারা পছন্দের জিনিস কিনতে দরদাম করছেন। ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়লাম, দেখা যাক কী পাওয়া যায়।
কাঁঠালের দোকানে তেমন ভিড় নেই। লটকনের দোকান বেশি, বিক্রিও ভালো। আকার অনুযায়ী দাম। এখানে না এলে জানতামই না, এত বড় আকারের লটকন হতে পারে! এক গৃহস্থ টুকরিতে কলম্বো লেবু নিয়ে বসে আছেন। এই লেবু আকৃতি ও সুগন্ধের জন্য বিখ্যাত। আরেকটু এগিয়ে গিয়ে থামতেই হলো। কয়েকটি দোকানে সাজানো হলুদ আর লাল রঙের রাম্বুটান!
দেখতে ফুলের মতো আকর্ষণীয় রঙের এই ফল সবার নজর কাড়ছে। ক্রেতারা দাম জানতে চাইছেন। কেউ কেউ কিনছেনও। জানতে চাইলাম, এই রাম্বুটান কোথা থেকে এল? দোকানির উত্তর শুনে চোখ ছানাবড়া। নরসিংদীর কয়েকটি গ্রামেই নাকি ইদানীং চাষ হচ্ছে রাম্বুটান। দারুণ ব্যাপার। এ খবর জানা ছিল না।
কাছাকাছি দূরত্বে কোনো গ্রামে গেলে কি রাম্বুটানের বাগান দেখতে পাওয়া যাবে? এ প্রশ্নের উত্তর দিলেন স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা মো. সুজন মিয়া। তিনি জানালেন,Ñকাছেই বেলাব উপজেলার লাখপুর গ্রামে চমৎকার একটি বাগান আছে।
আমরা দ্রুত বাগানের পথ ধরি। বাগানে যেতে যেতে মনে হলোÑ ঘন গাছপালার ছাউনির ভেতর দিয়ে ক্রমেই যেন হারিয়ে যাচ্ছি! এখানকার বেশির ভাগ গাছই লটকনের। বাগানগুলো এতই বড় যে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ভালোভাবে দেখা যায় না।
অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে গেলাম লাখপুর গ্রামে। উয়ারী ও বটেশ্বর–লাগোয়া এই গ্রামে রাম্বুটানের বাগানে গিয়ে চমকে উঠি। বেশ বড় বড় অনেক গাছ। গাছে গাছে দুই রঙের রাম্বুটান। চমৎকার দৃশ্য।
এ রংবাহারি ফল দেখার জন্য সারা দিন অনেক মানুষ ভিড় করেন সেখানে। কেউ কেউ দেখছেন, আবার কিনছেনও। একটু সময় নিয়ে বাগানটি ঘুরে দেখি। ছয়-সাত বছর বয়সী সব গাছই ফলভারে আনত। পাকা ফলগুলো দেখতে রঙের ঝরনাধারার মতো, বহুবর্ণিল। বাগান থেকে তরতাজা কিছু ফল কিনি। মন ভরে ছবি তুলি।
একসময় রাম্বুটান চিনতাম না। ২০০৫ সালে হংকংয়ে বেড়াতে গিয়ে বন্ধু মোস্তাফিজুর রহমান শাহিনের বাসায় প্রথম এ ফল খাই। পরে কুয়ালালামপুর শহরের আশপাশে রাম্বুটানের অনেক গাছ দেখেছি। দুই বছর পর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টারে গাছভর্তি রাম্বুটান দেখে চমৎকৃত হয়েছিলাম। বীজ থেকে তৈরি চারাগুলো সেখানে প্রথম লাগানো হয় ১৯৯৮ সালে। প্রায় সাত বছর পর গাছগুলোতে ফল আসতে শুরু করে। আকৃতি ও স্বাদের দিক থেকেও ফলগুলো সমমানের।
বাগানে সুদর্শন হলুদ রঙের রাম্বুটান