শাবিপ্রবির ভর্তি ফি নিয়ে হতাশ শিক্ষার্থীরা
Published: 9th, April 2025 GMT
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে এসে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা করছে।
তবে ভর্তি ফি কমানো নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। পূর্বের তুলনায় ফি কিছুটা কমলেও তা শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশার তুলনায় খুবই কম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে শাবিপ্রবির ভর্তি ফি ছিল ১৮ হাজার টাকা। এ বছর ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে তা কমিয়ে ১৭ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ মাত্র ১ হাজার টাকা কমানো হয়েছে, যা নিয়ে শিক্ষার্থীদের অনেকেই ‘প্রতীকী কমানো’ বলে মন্তব্য করেছেন।
বিগত ৪ বছরের ভর্তি ফি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি ফি ছিল ৮ হাজার ১০০ টাকা। ১ বছরের ব্যবধানে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি ফি বাড়িয়ে ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছিল। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করলেও তা কমানোর কোনো উদ্যোগ নেয়নি তৎকালীন প্রশাসন।
এর পরের বছর আরো ২ হাজার ২৫০ টাকা বাড়িয়ে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি ফি নেওয়া হয় ১৭ হাজার ২৫০ টাকা। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে আবারো ভর্তি ফি বাড়িয়ে ১৮ হাজার টাকা নিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সর্বশেষ ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে এসে ১ হাজার টাকা কমিয়ে ১৭ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। সে হিসেবে গত ৪ বছরে ভর্তি ফি বৃদ্ধি পেয়েছে দিগুণেরও বেশি।
ভর্তি ফি বৃদ্ধির জন্য বিগত প্রশাসন গুচ্ছভুক্ত ভর্তি পরীক্ষাকে দায় দিলেও বর্তমানে নিজস্ব পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিয়েও আশানুরূপ ভর্তি ফি না কমানোই নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে এক ভর্তিইচ্ছু শিক্ষার্থী বলেন, “গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে আসার পর ভাবছিলাম, ফি কমে অনেকটাই সহনীয় হবে। কিন্তু মাত্র ১ হাজার টাকা কমেছে। যা একজন দরিদ্র পরিবার থেকে আসা শিক্ষার্থীর জন্য খুবই চাপের।”
এ বিষয়ে সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী শাকারিয়া আলম তার ফেসবুক পোস্টে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “২০২৪- ২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি ফি ১৭ হাজার টাকা! ২০২০-২১ সেশনে ভর্তি ফি ৮ হাজার টাকার কাছাকাছি ছিল। ২০২১-২২ সেশন থেকেই ভর্তি ফি ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে, যার পেছনে অন্যতম দায় গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ার বলে একটা যুক্তি দাড় করানো হয়েছিল। এখন তো গুচ্ছ নেই, প্রাইমারি ভর্তি ফি ৫ হাজার টাকাও প্রদান করতে হবে না। তবুও ভর্তি ফি কেন ১৭ হাজার টাকা? পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কি গরীব, মধ্যবিত্তের জন্য না?”
তবে এ বিষয়ে ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক এছাক মিয়া কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।”
ঢাকা/ইকবাল/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ১৭ হ জ র ট ক র ভর ত
এছাড়াও পড়ুন:
ব্লগার অভিজিৎ হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ফারাবীর জামিন
ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত শফিউর রহমান ফারাবী অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়েছেন। বিচারপতি মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ জামিন দেন।
বিচারিক আদালতের দেওয়া দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে ২০২১ সালে হাইকোর্টে আপিল করেন ফারাবী। ২০২২ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। বিচারাধীন আপিলে জামিন চেয়ে আবেদন করেন ফারাবী, যা আজ আদালতের কার্যতালিকায় ১৭৯ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
আদালতে ফারাবীর পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও আইনজীবী মুহাম্মদ হুজ্জাতুল ইসলাম খান শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. এমরান খান।
পরে আইনজীবী মুহাম্মদ হুজ্জাতুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০১৫ সালের ৩ মার্চ থেকে কারাগারে আছেন ফারাবী। ফারাবী ১৬৪ ধারায় কোনো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। মামলায় চারজন আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁদের কেউই ফারাবীর নাম উল্লেখ করেননি। তদন্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কোনো সাক্ষীর বক্তব্যেও তাঁর নাম আসেনি। এসব যুক্তিতে ফারাবীর জামিন চাওয়া হয়। বিচারাধীন আপিলে ফারাবীকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।’
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণ থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করা হয় অভিজিৎকে। হামলায় অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদও গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় অভিজিতের বাবা অধ্যাপক অজয় রায় বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করে ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ২০১৯ সালের ৬ আগস্ট ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এই মামলায় ২৮ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়।
এই মামলায় ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান রায় দেন। রায়ে পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং এক আসামিকে (শফিউর রহমান ফারাবী) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরই হাইকোর্টে আপিল করেন ফারাবী।