রংপুরের বদরগঞ্জে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক কর্মী নিহতের ঘটনায় দলের আট নেতাকে বহিষ্কারের পর এবার দলের পক্ষ থেকে তাঁদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে রংপুর জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শফি কামাল বাদী হয়ে জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৃষ্ণ কমল রায়ের আদালতে (আমলি আদালত, বদরগঞ্জ) মামলাটি করেন।

রংপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আফতাব উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন এবং অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন সদ্য বহিষ্কৃত জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকার, বদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শহিদুল হক, পৌর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক সুমন সরদার, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এমদাদুল হক, উপজেলার মধুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক, কালুপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সামছুল হক ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো.

গোলাম কিবরিয়া। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও দেড় শ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার আরজিতে বাদী উল্লেখ করেন, বদরগঞ্জ পৌর শহরে জাহিদুল নামের একজনের দোকানকে কেন্দ্র করে আসামিরা সংঘর্ষ সৃষ্টি করেন। সংঘর্ষে আহত লাভলু সরকার নামের একজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আসামিরা নিজেদের মধ্যে ব্যক্তিস্বার্থে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কলহ ও বিবাদে জড়িত। তাঁরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলীয় সুনাম ক্ষুণ্ন করে মানহানিকর অপরাধ করেছেন। বিএনপির দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে দেশের জনপ্রিয় ও সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে আসামিরা মানহানিকর অপরাধ করেছেন। এ ঘটনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলায় কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশের আলোকে এ মামলা করা হয়েছে।

আরও পড়ুনরংপুরের বদরগঞ্জে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১৫০৫ এপ্রিল ২০২৫

বাদী শফি কামাল সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে মামলা করা হয়েছে। এতে বহিষ্কৃত আট নেতাসহ অজ্ঞাত দেড় শ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাঁরা দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করায় তাঁদের বিরুদ্ধে ৫০০ ধারায় মানহানির অভিযোগ করা হয়েছে।

মামলার আবেদন করার সময় আদালতে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আনিছুর রহমান লাকু উপস্থিত ছিলেন। তাঁর দাবি, বিএনপির নামে জমি দখল, দোকান দখলসহ অন্যান্য কোনো অপরাধে কেউ জড়িত হলে তাঁদের কোনোভাবে ছাড় দেওয়া হবে না। দল থেকে বহিষ্কারসহ তাঁদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হয়েছে।

গত শনিবার রংপুরের বদরগঞ্জে একটি দোকান নিয়ে মালিক ও ভাড়াটের দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষে জড়ায় জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকার ও উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হকের অনুসারীরা। রক্তক্ষয়ী এ সংঘর্ষে বিএনপির কর্মী লাভলু সরকার নিহত হন।

আরও পড়ুনবদরগঞ্জে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার পর ৮ নেতা বহিষ্কার০৭ এপ্রিল ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র দ ব এনপ র স বদরগঞ জ কর ছ ন রহম ন সদস য সরক র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পেহেলগামে হামলার পর প্রতিশোধের আশঙ্কায় দিন কাটছে ভারতীয় মুসলিমদের


ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সম্প্রতি সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার পর মুসলিমদের ব্যাপকভাবে ধরপাকড় ও তাঁদের ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে। মানবাধিকারকর্মীদের আশঙ্কা, উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা পেহেলগামের হামলাকে ব্যবহার করে দেশের বৃহত্তম সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ওপর দমন–পীড়ন আরও বৃদ্ধি করছে।

কাশ্মীরের পেহেলগাম শহরের কাছে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছিলেন, যাঁদের মধ্যে একজন বাদে বাকি প্রায় সবাই হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। পর্যটক হিসেবে তাঁরা ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে পেহেলগামে গিয়েছিলেন। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে, যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ জোরালোভাবে নাকচ করে দিয়েছে।

পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার জবাবে ভারত সামরিকভাবে পাকিস্তানকে জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করে তাদের ঘাঁটি ধ্বংস করে দেওয়া হবে। পাকিস্তান সরকারের একজন মন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁরা বিশ্বাস করেন ভারত শিগগিরই সামরিক হামলা চালাতে পারে।

এই মুহূর্তে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার মূলত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে। যেমন আন্তসীমান্ত নদীগুলোর পানিপ্রবাহ বন্ধের হুমকি দিচ্ছে। একই সঙ্গে বিজেপি সরকার ও উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মুসলিমদের হয়রানি করছে। তারা এটিকে ‘অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান’ বলে দাবি করছে।

মোদির বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোতে কর্তৃপক্ষ এই সুযোগে ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ এবং ‘রোহিঙ্গাদের’ বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। রোহিঙ্গারা মূলত মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসেছেন। ‘পাকিস্তানি’ বা ‘বাংলাদেশি’ তকমা অনেক সময়েই হিন্দুত্ববাদীরা ভারতের অভ্যন্তরীণ মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে থাকে।

উত্তর প্রদেশ ও কর্ণাটক—এই দুই রাজ্যে মুসলিমদের হত্যার খবর পাওয়া গেছে। গণমাধ্যমের খবরে সেগুলোকে বিদ্বেষমূলক অপরাধ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী কাশ্মীরে ইতিমধ্যেই শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে যাঁদের সন্দেহ করা হচ্ছে, তাঁদের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এক সরকারি কর্মকর্তার মতে, প্রায় দুই হাজার মানুষকে আটক করা হয়েছে, যা অনেকটা সমষ্টিগত শাস্তির মতো।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাঠ নিয়ে শ্রাবণের আফসোস
  • একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
  • বড় বন্দরে ভারী কাজ করেও চলে না সংসার 
  • নাটোরে ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল একজনের
  • ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতির মেয়ে
  • ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতি মেয়ে
  • ৫০ পেরোনো নারীর খাদ্যাভ্যাস যেমন হতে হবে
  • যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করছে চীন
  • সেলফি’র ধাক্কায় গণস্বাস্থ্যের কর্মীর মৃত্যু, ৬ বাস আটক
  • পেহেলগামে হামলার পর প্রতিশোধের আশঙ্কায় দিন কাটছে ভারতীয় মুসলিমদের