গাজায় ইসরায়েলের চলমান নৃশংস গণহত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। একই সঙ্গে অবিলম্বে গণহত্যা বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে।

গণতন্ত্র মঞ্চ গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে ১৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করবে।

আজ বুধবার দুপুরে নাগরিক ঐক্যের কার্যালয়ে মঞ্চের বর্তমান সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে গণতন্ত্র মঞ্চের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সভায় এ কথা বলা হয়। পরে গণতন্ত্র মঞ্চ এ নিয়ে গণমাধ্যমে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠায়।

বিজ্ঞপ্তিতে গাজা খালি করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আবাসন তৈরির পাঁয়তারাকে বেসামাল আগ্রাসী অপতৎপরতা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। পাশাপাশি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি সমর্থন ও সংহতিও ব্যক্ত করা হয়।

সভায় দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবনতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং প্রশাসনের স্থবিরতা ও অকার্যকারিতায় সামাজিক নৈরাজ্যের বিস্তার ঘটছে, মব–সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়ছে। জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে জনমনে উৎকণ্ঠা বাড়ছে। এ ছাড়া রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের মনস্তাত্ত্বিক দূরত্ব বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে বলেও সভায় বলা হয়।

গণতন্ত্র মঞ্চের ওই সভার প্রস্তাবে বলা হয়, সামাজিক নৈরাজ্যের এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে বিনিয়োগসহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডেও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সহসভাপতি কে এম জাবের। নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার প্রমুখ।

নতুন সমন্বয়ক

আগামীকাল ১০ এপ্রিল থেকে পরবর্তী তিন মাসের জন্য গণতন্ত্র মঞ্চের নতুন সমন্বয়কের দায়িত্বপালন করবেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম। মঞ্চের বর্তমান সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আজকের সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর স থ ত গণহত য ন সমন

এছাড়াও পড়ুন:

কথার আগে গুলি চালায় ‘কাকন বাহিনী’, দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পদ্মার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় সাঁড়া ইউনিয়নের ইসলামপাড়া। পদ্মায় ড্রেজার বসিয়ে বালু তুলছিলেন ইজারাদার সুলতান আলী বিশ্বাসের লোকজন। হঠাৎ নদীর কুষ্টিয়া প্রান্ত থেকে স্পিডবোট ও বড় নৌকায় আচমকা গুলি ছুড়তে ছুড়তে ছুটে আসে একদল দুর্বৃত্ত। আতঙ্কে শ্রমিকেরা দৌড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যান। প্রায় ৫০টি গুলি করার ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও নদীপারের বেশ কয়েকটি বাড়ির টিনের বেড়া ও চালা গুলিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

এ ঘটনা ১৩ অক্টোবরের। স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগীরা বলছেন, বালুমহালের ইজারাকে কেন্দ্র করে এভাবে হঠাৎ এসে গুলি ছুড়ে আতঙ্ক তৈরি করেন ‘কাকন বাহিনী’র সদস্যরা। বালু লুট, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, জমির দখল নিয়ে এই বাহিনীর সদস্যদের নামে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। তাঁদের কাছে এখন রাজশাহীর বাঘা, নাটোরের লালপুর, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর ও পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার বিস্তীর্ণ পদ্মার চরের মানুষেরা জিম্মি।

সর্বশেষ গত সোমবার (২৭ অক্টোবর) দৌলতপুরের পদ্মা নদীর দুর্গম চরে এই বাহিনীর গুলিতে দুই কৃষক নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। ওই ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও দুজন। নিহত দুজন মণ্ডল গ্রুপের আমান মণ্ডল (৩৬) ও নাজমুল মণ্ডল (২৬) বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে। সূত্রটি বলছে, একই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে কাকন বাহিনীর সদস্য লিটনও (৩০) নিহত হয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রধানের নাম অনুসারে বাহিনীর নাম ‘কাকন বাহিনী’। এই বাহিনী পদ্মা নদীতে স্পিডবোট নিয়ে নিয়মিত সশন্ত্র মহড়া দেয়। সম্প্রতি ড্রোন দিয়ে স্থানীয় ভুক্তভোগীরা তার ভিডিও ধারণ করে প্রশাসনকে দিয়েছেন। এ নিয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছে। তারপরও কাকন বাহিনীর দাপটে এলাকার কৃষকেরা তাঁকে চাঁদা না দিয়ে ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। গত সোমবার কাশবন দখলের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই গোলাগুলির সূত্রপাত ঘটেছিল।

বাহিনীটির বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি (উপমহাপরিদর্শক) মোহাম্মদ শাহজাহান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আপনারা দেখতে পাবেন, পুলিশ এদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছে।’

আরও পড়ুনদুজনকে হত্যার ঘটনায় ‘কাকন বাহিনীর’ কাকনকে প্রধান আসামি করে মামলা২৯ অক্টোবর ২০২৫

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্গম চরে একাধিক সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। এসব বাহিনীর সদস্যরা চরের বালু ও জমি দখল নিয়ে গোলাগুলির ঘটনা ঘটান। তাঁরা এক চরে অপরাধ করে আরেক চরে গিয়ে আশ্রয় নেন। কখনো চরের বিশাল কলাবাগান, আবার একেবারে সীমান্তের শূন্যরেখায় মাঠের মধ্যে গিয়ে আস্তানা গড়ে তোলেন তাঁরা।
চার জেলাজুড়ে বিস্তৃত পদ্মার দুর্গম এই চরাঞ্চলে প্রায় ২০ বছর আগেও দুটি সন্ত্রাসী বাহিনীর উত্থান ঘটেছিল। তাদের ভাগ না দিয়ে কেউ চরের ফসল ঘরে তুলতে পারতেন না। এ নিয়ে দ্বন্দ্বে তাদের হাতে ওই সময় ৪১ জন মানুষ খুন হন বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। তখন চরের মাটিতে পা দিতে গা ছমছম করত। দুই বাহিনীর নাম ছিল ‘পান্না বাহিনী’ ও ‘লালচাঁন বাহিনী’। পান্নার ওস্তাদ ছিলেন এই কাকন।

২০০৫ সালের ২৫ এপ্রিল প্রথম আলোতে ‘বাঘা-লালপুর দৌলতপুরের তিন গ্রামে পান্না বাহিনীর সন্ত্রাস, ৬০ পরিবার বাড়িছাড়া’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তার কিছুদিন পরেই ‘ক্রস ফায়ারে’ পান্না নিহত হন। একইভাবে তাঁর প্রতিপক্ষ লালচাঁনসহ দুই বাহিনীর অন্তত ২৫ জন সদস্য নিহত হন। তারপর শান্ত হয়েছিল পদ্মার চর।

যেভাবে উত্থান ‘কাকন বাহিনীর’বাহিনীর প্রধান মো. রোকনুজ্জামান কাকন ওরফে ইঞ্জিনিয়ার কাকন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৩০০ আসনে প্রার্থী বাছাই প্রায় চূড়ান্ত: তারেক রহমান
  • গণতন্ত্রের পথে সংকট দেখছেন তারেক
  • এমন তো হবার কথা ছিল না: তারেক রহমান
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ, নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা
  • সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠাই এখন জাতির দাবি
  • জনগণের বৃহত্তর ঐক্য ছাড়া এই ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থার পতন হবে না: সাকি
  • গণভোট নিয়ে উত্তাপ নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না: প্রেস সচিব
  • দ্রুত নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করুন: আকবর খান
  • কথার আগে গুলি চালায় ‘কাকন বাহিনী’, দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পদ্মার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল