Samakal:
2025-11-04@00:41:45 GMT

‘আমার জন্য কেউ আগাইয়া আসলো না’

Published: 10th, April 2025 GMT

‘আমার জন্য কেউ আগাইয়া আসলো না’

সুখের সংসারই ছিল মুক্তার হোসেনের। গত বছর ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। এর পরই অন্ধকার নেমে আসে তাঁর জীবনে। চিকিৎসা খরচ জোগাতে নিজের উপার্জনের ভ্যান ও অটোরিকশা বিক্রি করে এখন তিনি নিঃস্ব। পাননি সরকারি কোনো সহযোগিতা।

মুন্সীগঞ্জ শহরের মানিকপুর এলাকার বাসিন্দা মুক্তার (৪৪) একজন ভ্যানচালক। মা-বাবা, স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তাঁর সংসার। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আট মাস পেরিয়ে গেলেও শরীরে বুলেটের ক্ষতচিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। ফিরতে পারছেন না স্বাভাবিক জীবনে। আর কাজে যেতেও পারেন না। সংসারে তাই নিত্য টানাপোড়ন। স্ত্রী বিলকিস বেগম অন্যের বাড়িতে কাজ করে চালাচ্ছেন সংসারের খরচ। জীবনের এমন কঠিন সময়ে স্ত্রী-সন্তানের ভবিষ্যৎ ভাবনায় দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন মুক্তার। 

২০২৪ সালের ৪ আগস্টের সকাল। মুন্সীগঞ্জ শহরের থানারপুল এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধে শামিল হন মুক্তার। এক পর্যায়ে পুলিশের রাবার বুলেটে ঝাঁজরা হয় তাঁর শরীর। এ সময় অস্ত্রধারী এক ছাত্রলীগ নেতাকে জাপটে ধরে ফেললে সেই নেতা মুক্তারের পায়ে গুলি করে। এতে সড়কে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে ছাত্র-জনতা তাঁকে উদ্ধার করে। ইতোমধ্যে চিকিৎসা দিয়ে তাঁর শরীর থেকে ৬৫টি রাবার বুলেট ও একটি শর্টগানের গুলি বের করা হয়েছে। পায়ের গুলির ক্ষতচিহ্ন এখনও রয়ে গেছে। একই সঙ্গে শরীরের নিচে রয়ে গেছে বুলেট। সেই ব্যথা নিয়ে কাতরান মুক্তার। সাহায্যের আশায় মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘোরেন। অণ্ডকোষের পাশে গুলি আটকে থাকায় স্বাভাবিক চলাফেরাও ব্যাহত হচ্ছে তাঁর।

মুক্তার হোসেন জানান, শহরের থানারপুল এলাকার একটি ইলেকট্রনিক প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক কাজ করতেন। ওই প্রতিষ্ঠানের বিক্রি হওয়া পণ্য তাঁর ভ্যানে করে ক্রেতার বাড়িতে পৌঁছে দিতেন। এ থেকে দিনে হাজার দেড়েক টাকা রোজগার হতো। পাশাপাশি কিস্তিতে একটি অটোরিকশা কিনে ভাড়া দিয়েছিলেন। ভাড়া পেতেন দৈনিক ৩০০ টাকা। এ দিয়েই সংসার চলত। কিন্তু  চিকিৎসার খরচ মেটাতে ভ্যান ও অটোরিকশা বিক্রি করে দিয়েছেন। গণঅভ্যুত্থানে আহতের গেজেটেড তালিকায় নাম এলেও এখনও কোনো অর্থ সহায়তা পাননি। এ ছাড়া জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ে চিকিৎসা সহায়তার আবেদন জানালেও সাড়া মেলেনি। বিএনপি নেতাকর্মী ও সমন্বয়কদের কাছে গিয়েও ফিরেছেন খালি হাতে। 

মুক্তার আক্ষেপ করে বলেন, ‘এখন আফসোস লাগে, কাগো জন্য কী করলাম। আমার জন্য কেউ আগাইয়া আসলো না।’ 

সিভিল সার্জন ডা.

মঞ্জুরুল আলম বলেন, গণঅভ্যুত্থানের সরকারি আহতের তালিকায় জেলায় এ ক্যাটেগরিতে ১৩ জন, বি ক্যাটেগরিতে ২৩ জন ও সি ক্যাটাগরিতে স্থান পেয়েছেন ১৪৪ জন। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত অর্থ সহায়তা পেয়েছেন মাত্র তিনজন। মুক্তার চিকিৎসার জন্য অর্থ সহায়তা চেয়ে আবেদন করলে তারা নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সেঞ্চুরির অপেক্ষায় মুশফিকুর, তিন দিনেই জয় রাজশাহীর

জাতীয় ক্রিকেট লিগে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে তিনদিনেই জয় পেয়েছে রাজশাহী বিভাগ। ৭ উইকেটে তারা হারিয়েছে খুলনা বিভাগকে। এদিকে সিলেটে সেঞ্চুরির অপেক্ষায় জাতীয় দলের ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। ডানহাতি ব্যাটসম্যান ৯৩ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন।

তার ব্যাটে ভর করে ঢাকা বিভাগের বিপক্ষে লড়ছে সিলেট। ঢাকার করা ৩১০ রানের জবাবে সিলেটের ৭ উইকেটে রান ২৬০। ৫০ রানে পিছিয়ে তারা। ১৭০ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৯৩ রান করে অপরাজিত আছেন মুশফিকুর। তার সঙ্গে ৫ রানে অপরাজিত আছেন ইবাদত হোসেন। এছাড়া শাহানুর ৩০ ও তোফায়েল ২৭ রান করেন।

আরো পড়ুন:

মাহিদুল-মজিদের সেঞ্চুরির দিনে মুমিনুলের ৮ রানের আক্ষেপ

স্বীকৃতির ১০ বছর পর জাতীয় ক্রিকেট লিগে ময়মনসিংহ

মিরপুরে খুলনার দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিংও যুৎসই হয়নি। এবার ২৫৫ রানে থেমে যায় তাদের ইনিংস। ১ উইকেটে ৬৮ রানে দিন শুরু করে তারা। এনামুলের ইনিংস থেমে যায় ৩৪ রানে। মোহাম্মদ মিথুন খুলতে পারেননি রানের খাতা। মিরাজ ৪৮ ও জিয়াউর এবং ইয়াসির মুনতাসির ৩২ রানের দুটি ইনিংস খেলে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাতেও তাদের স্কোর বড় হয়নি।

১৪৭ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ২৫৫ রানের বেশি করতে পারেনি। তাতে ১০৯ রানের লক্ষ্য পায় রাজশাহী। ৭ উইকেট হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

হাবিবুর রহমান সোহান ৬৮ বলে ৬২ রান করেন ৪ চার ও ৩ ছক্কায়। ২৫ রান আসে সাব্বির হোসেনের ব্যাট থেকে। সাব্বির রহমান ১২ ও মেহরব ৪ রানে অপরাজিত থেকে জয় নিয়ে ফেরেন। প্রথম ম্যাচ হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ে ফিরল তারা।

কক্সবাজারে ময়মনসিংহ বিভাগ ও রংপুর বিভাগের ম্যাচ বাজে আউটফিল্ডের কারণে ভেস্তে যায়। একটি বলও মাঠে গড়ায়নি। ২ উইকেট হারিয়ে রংপুরের রান ১৮। এখনও তারা ৫৩৭ রানে পিছিয়ে। ময়মনসিংহ প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটে ৫৫৫ রানে ইনিংস ঘোষণা করে।

পাশের মাঠে ঘণ্টাখানেকের বেশি সময় খেলা হয়েছে। আগের দিনের ২ উইকেটে ১১৫ রানের সঙ্গে ৫১ রান যোগ করেন বরিশাল বিভাগ। খেলা হয়েছে কেবল ১৫ ওভার। জাহিদুজ্জামান খান ৩২ ও সালমান হোসেন ইমন ৭৫ রানে অপরাজিত আছেন। প্রথম ইনিংসে এখনও তারা ১৯২ রানে পিছিয়ে।

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেঞ্চুরির অপেক্ষায় মুশফিকুর, তিন দিনেই জয় রাজশাহীর