ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই মিনহাজুল আবেদিন সাব্বির ও মো. রহিম আহমেদের আউটের ভিডিও ভাইরাল। ফেসবুকে শেয়ার হতে হতে তা মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে দেশ-বিদেশে। ‘স্বেচ্ছা’ এই দুই আউটে শাইনপুকুর ৫ রানে ম্যাচ হারে গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের কাছে। দুটি ক্লাবই বেক্সিমকো গ্রুপের। উভয় ক্লাব লিগে খেলার আর্থিক সংস্থান করেছে কাউন্সিলরশিপ বিক্রি করে। 

গুলশান ও শাইনপুকুরের কোচিং স্টাফ ভিন্ন হলেও পেছন থেকে দল দুটির নিয়ন্ত্রক খালেদ মাহমুদ সুজন। এ কারণেই গুলশানকে সুপার লিগে কোয়ালিফাই করাতে শাইনপুকুরের বিরুদ্ধে ম্যাচ ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ক্রিকেট অঙ্গনে কানাঘুষা সুজনের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার জন্যই মিনহাজুল ও রহিম স্বেচ্ছায় স্টাম্পিং আউট হয়েছেন। 

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রথমবার খেলতে নামা দুই ক্রিকেটারের সন্দেহজনক আউটের ভিডিও ছড়িয়ে পড়া, ফিক্সিংয়ের অভিযোগ ওঠা এবং জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটারদের ফেসবুকে নিন্দনীয়ভাবে সমালোচনামূলক স্ট্যাটাস দেওয়ায় গতকাল সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তদন্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে বিসিবি। দেশের ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থার দুর্নীতি দমন বিভাগ (এসিইউ) মিনহাজুল ও রহিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। একাডেমি মাঠে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষাও নেওয়া হয় দু’জনের। যদিও জিজ্ঞাসাবাদে উভয় ক্রিকেটার ফিক্সিংয়ের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। 

বিসিবি এসিইউ প্রধান মেজর রায়ানের নেতৃত্বে পুরো দল দুই ক্রিকেটারের জিজ্ঞাসাবাদে অংশ নেয়। প্রত্যক্ষদর্শী বোর্ডের এক কর্মকর্তা জানান, প্রথমে দুই ঘণ্টা মৌখিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মিনহাজুল-রহিমকে। তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয় প্রতিপক্ষ বা নিজ দলের ম্যানেজমেন্টের দিক থেকে কোনো চাপ ছিল কিনা? 

গুলশানের কোচ খালেদ মাহমুদের রাজশাহীর একাডেমি বাংলা ট্র্যাকের ক্রিকেটার রহিম। তিনি কোনো নির্দেশনা দিয়েছিলেন কিনা– এ নিয়েও জানতে চাওয়া হয়। আর্থিক লেনদেনের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে উভয় ক্রিকেটার আপত্তি তুলে বলেন, ‘ক্লাব তো চুক্তির টাকাই দেয়নি।’ 

মিনহাজুল তৃতীয় বিভাগ, দ্বিতীয় বিভাগ, প্রথম বিভাগ হয়ে প্রিমিয়ার লিগ খেলছেন এই প্রথম। দরিদ্র কৃষকের ছেলে রহিম ক্রিকেট খেলা শিখেছেন ভাগ্য ফেরাতে। প্রিমিয়ার লিগে খেলার অভিজ্ঞতা না থাকায় এভাবে আউট হয়ে গেছেন বলে দাবি তাঁর। নিজেদের আউটকে অনিচ্ছাকৃত আউট দাবি করেন দু’জনই। বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের উইকেটকিপার আলিফ হোসেন ইমনকেও শুনানিতে ডাকা হবে।

শাইনপুকুর বা গুলশান ক্লাবের কোচ বা কর্মকর্তাদের শুনানিতে ডাকা হবে কিনা জানা যায়নি। খালেদ মাহমুদের দিকেও নানা মহল থেকে অভিযোগের আঙুল ওঠায় জিজ্ঞাসাবাদের দাবি রাখে কিনা জানতে চাওয়া হলে এসিইউ কর্মকর্তাদের কেউই মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড প এল শ ইনপ ক র

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ