বাড়ির পাশের বাঁশবাগানের গরুর খাদ্য হিসেবে বাঁশের পাতা সংগ্রহ করতে বেরিয়েছিলেন পঞ্চাশোর্ধ এক গৃহবধূ। এরপর তাঁকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না পরিবারের লোকজন। এক দিন পর সন্ধ্যায় বাগানের পাশের একটি বাড়ির শৌচাগারের সেপটিক ট্যাংক থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

লাশ উদ্ধারের প্রায় পাঁচ মাস পর লাশের ভিসেরা প্রতিবেদন এসেছে পুলিশের কাছে। তাতে ওই গৃহবধূকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

যশোরের অভয়নগর উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়ন থেকে গত বছর ২৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওই নারীর (৫২) লাশ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ যশোরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। পরে লাশের নমুনা সংগ্রহ করে ভিসেরা পরীক্ষার জন্য নমুনা সিআইডির খুলনা বিভাগীয় ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। সম্প্রতি ভিসেরা প্রতিবেদন এসেছে। পুলিশ জানিয়েছে মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) তৈরির কাজ চলছে।

এ ঘটনায় ওই নারীর স্বামী বাদী হয়ে ২৫ সেপ্টেম্বর অভয়নগর থানায় মামলা করেন। মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয়। তাঁরা হলেন অভয়নগর উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের নিয়ামুল শেখ (২৫), তাঁর বাবা রমজান শেখ (৪৮) ও চাচা ইউনুস শেখ (৪১)। পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। এর মধ্যে নিয়ামুল শেখ কারাগারে আছেন। রমজান শেখ ও ইউনুস শেখ জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

আরও পড়ুনসকালে নিখোঁজ, পরের দিন প্রতিবেশীর সেপটিক ট্যাংকে গৃহবধূর লাশ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ওই নারীর স্বামী পেশায় চা বিক্রেতা। এ ছাড়া তিনি শিঙাড়া ও পুরি ভেজে বিক্রি করেন। স্থানীয় বাজারে তাঁর একটি চা এবং সিঙ্গাড়া ও পুরি বিক্রির দোকান আছে। ওই নারী স্বামীর কাজে সহায়তা করতেন। তাঁদের দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। স্বামী-স্ত্রী দুজনে বাড়িতে থাকতেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে স্বামী-স্ত্রী দুজনে বাড়িতে সকালের নাশতা খান। দুপুরের খাবার নিয়ে স্বামী দোকানে চলে যান। সকাল নয়টার দিকে ঘরে তালা দিয়ে ওই নারী একটি ঝুড়ি নিয়ে গরু দুটির খাদ্য বাঁশের পাতা সংগ্রহ করতে পাশের বাঁশবাগানে যান। এর পর থেকে তিনি আর বাড়িতে ফেরেননি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে পরদিন ২৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বাঁশবাগানের এক পাশে নিয়ামুল শেখের শৌচাগারের সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা কিছুটা উঁচু দেখতে পাওয়া যায়। এলাকার কয়েকজন সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা উঁচু করতেই একটি হাত বেরিয়ে আসে। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। এরপর উপজেলার ভাটপাড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্র থেকে পুলিশ গিয়ে সেপটিক ট্যাংক থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে।

পুলিশ জানায়, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ওই নারীর লাশের ভিসেরা প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। এতে বলা হয়েছে, ওই নারীকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর শরীরে ধর্ষণের চিহ্ন রয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপজেলার ভাটপাড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের উপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম বলেন, ওই নারীর লাশের ভিসেরা প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। এতে ওই নারীকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মামলাটির তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স প ট ম বর ওই ন র র উপজ ল র তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

টাকার জন্য দেশে ছেড়েছি, এখন টাকা খরচের সময় নেই: পিয়া বিপাশা

লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে পা রাখেন পিয়া বিপাশা। এরপর অভিনয় করেছেন মিউজিক ভিডিও, নাটক ও সিনেমায়। কিন্তু হুট করেই নাই হয়ে গেলেন। পরে জানা গেল অভিনেত্রী আমেরিকায়। গেল পাঁচ বছর সেখানেই বাস করছেন তিনি। সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রবাসজীবনসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।

পিয়া বিপাশা জানান, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভালোবাসা তৈরি হয়। তারপর তাঁরা বিয়ে করেন। দুজনে মিলে বিয়ে করলেও আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেওয়ার ইচ্ছা।

পিয়া বিপাশা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভালো লাগত না। কারণ, লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটা সিনেমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়নি। এরপর আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসলে কাজ করতে চেয়েছিলাম টাকা কামানোর জন্য। কাজ না করতে পারলে টাকা কামাব কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।’

বিপাশার কথায়, ‘টাকা রোজগারের জন্য আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেছিলাম। কারণ, আমার একটা মেয়ে ছিল। মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকার বিষয় ছিল। পরে দেখলাম, যেভাবে কাজ হয়, আমাকে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমেরিকায় চলে আসার। এখানে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। অনেক টাকাও আয় করছি।’

পিয়া বিপাশা বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন আমার এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও হয়।  আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি। টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, ভালো স্বামী—সবই আমার হয়েছে। টাকা নিয়ে এখন কোনো চিন্তা নেই আমার—যা আয় করি, তা ব্যয় করার সময় পাই না।’ 

পিয়া বিপাশা জানান, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের যেসব পোস্ট করেন, তার জন্য বেশ ভালো সম্মানী পান। তাঁর দাবি, এই সম্মানী কখনো দুই হাজার ডলার, আবার কখনো তিন হাজার ডলারের মধ্যে।

২০১৩ সালে ‘দ্বিতীয় মাত্র’ নাটকে তাহসান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করতেন। বই পড়ার সময় গল্পের নায়িকার চরিত্রে নিজেকে কল্পনাও করতেন। বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছিলেন। ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’ নামের সেই ছবি মুক্তি পায়। এরপর ‘রাজনীতি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। পরে সেই ছবিতে পিয়া বিপাশার পরিবর্তে অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৈষম্যবিরোধীদের তোপের মুখে যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ
  • শ্রীলঙ্কার মাটিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ
  • মিরাজ বীরত্বে দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখলো বাংলাদেশ
  • সেঞ্চুরির পর ৫ উইকেট, মিরাজ ধন্যবাদ দিলেন ৬ জনকে
  • পেশায় বাসচালক, আড়ালে করেন ইয়াবার কারবার
  • ঢাকায় চালান পৌঁছে প্রতি মাসে পান ৬ লাখ টাকা
  • ১৭ মাস পর দেশের মাটিতে টেস্ট জয় বাংলাদেশের
  • নদীতে মিলল স্কুলছাত্রের লাশ, চার সহপাঠী আটক
  • টাকার জন্য দেশে ছেড়েছি, এখন টাকা খরচের সময় নেই: পিয়া বিপাশা
  • যশোরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শিশুর মৃত্যু