রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দলীয় কার্যালয়ের সাইনবোর্ড ভাঙচুরে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ দাবি জানিয়েছে দলটি।

বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ১০ এপ্রিল রাতে সেগুনবাগিচায় বাসদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পাঁচ ও ছয়তলার দুটি সাইনবোর্ড খুলে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এ সময় বাসদের কর্মীদের বাধার মুখে দুর্বৃত্তরা একটি সাইনবোর্ড নিয়ে পালিয়ে যায়।

বিবৃতিতে বলা হয়, এর আগের রাতেও (৯ এপ্রিল) সাইনবোর্ড ভাঙচুর ও খুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়। বাসদের কর্মীদের বাধার মুখে সেটা সম্ভব হয়নি। বিবৃতিতে বাসদের রাজনৈতিক কার্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে।

বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রতিবাদ

বাসদের কার্যালয়ের সাইনবোর্ড ভাঙচুরের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। আজ জোটের এক বিবৃতিতে এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি দাবি জানিয়েছে তারা।

এই বিবৃতিদাতারা হলেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, সিপিবির সভাপতি শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স), বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদ মার্ক্সবাদীর সমন্বয়ক মাসুদ রানা ও সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ