নিয়োগ পেতে নেতা-সমন্বয়কের পেছনে দৌড়ানো বন্ধ করুন: সারজিস
Published: 11th, April 2025 GMT
পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা বা সমন্বয়কদের পেছনে না দৌড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
তিনি বলেছেন, ফিটনেস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই রিটেন ভাইবার প্রিপারেশন বাদ দিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা বা সমন্বয়কদের পিছনে দৌড়ানো বন্ধ করুন। জেলা পুলিশ পঞ্চগড় নিশ্চিত করেছেন, পঞ্চগড়ে শতভাগ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে। কোনো প্রকার সুপারিশকে গ্রহণ করা হবে না।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এসব কথা লিখেছেন।
ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, পঞ্চগড়ে পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ হচ্ছে। এখন ফিটনেস পরীক্ষা চলছে। এরপরে ৫০ মার্কের লিখিত পরীক্ষা হবে। সবশেষে ১৫ মার্কের ভাইভা হবে। ফিটনেস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে লিখিত এবং ভাইভার ৬৫ মার্কের ওপর নির্ভর করবে তার চাকরি হবে কিনা। অর্থাৎ এখানে রিটেন পরীক্ষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যে রিটেনে যত ভালো করবে তার চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা ততো বেশি।
সারজিস লিখেছেন, গতবার প্রায় ৫০০+ পরীক্ষার্থী ফিটনেসে উত্তীর্ণ হয়ে রিটেন এবং ভাইভা দিয়েছিল। এর মধ্যে ফাইনালি ২৮ জন নিয়োগ পেয়েছিল। ভাইভাতে মোটামুটি বেসিক জ্ঞান থাকলে ১৫’র মধ্যে ৭-৮ এমনিতেই পায়। সেখানে ভাইভাতে সুপারিশ করে ২-৪ মার্ক বাড়িয়ে কোনো লাভ নেই যদি আপনি রিটেনে ভালো না করতে পারেন। যেহেতু রিটেনে ভাইভার তিনগুণ মার্কস রয়েছে তাই যদি আপনি পুলিশের কনস্টেবল হতে চান তাহলে লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি ভালোভাবে নিন।
তিনি লেখেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথায় আসি। ফিটনেস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই রিটেন ভাইবার প্রিপারেশন বাদ দিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা বা সমন্বয়কদের পেছনে দৌড়ানো বন্ধ করুন। জেলা পুলিশ পঞ্চগড় নিশ্চিত করেছেন, পঞ্চগড়ে শতভাগ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে। কোনো প্রকার সুপারিশকে গ্রহণ করা হবে না। কোটা না মেধা; এই স্লোগান দিয়ে একটা অভ্যুত্থান হয়েছে। দেড় হাজারের অধিক মানুষ জীবন দিয়েছে। অর্ধ-লক্ষের অধিক মানুষ রক্ত দিয়েছে। সেখানে ‘মেধা’র বিপরীতে ‘সুপারিশ’ এই অভ্যুত্থানের শহীদের রক্তের সঙ্গে প্রতারণার নামান্তর।
তিনি আরও লেখেন, দয়া করে নিয়োগের ক্ষেত্রে আমার কাছে কেউ কোনো প্রকার সুপারিশের আশায় আসবেন না এবং আহ্বান থাকবে অন্য কোনো দলের কোনো নেতার কাছেও যাবেন না। বরং আমরা চাইবো বাংলাদেশ পুলিশ শতভাগ স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করবে এবং সব রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ আমরা সেখানে সহযোগিতা করবো, মেধার জয় নিশ্চিত করবো।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনস প জ ত য ন গর ক প র ট
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।