পহেলা বৈশাখের বাজারে ‘রাজা’ রূপে ইলিশ
Published: 11th, April 2025 GMT
২০২১ সালে পহেলা বৈশাখ ও প্রথম রমজান একই দিন ছিল। এর পরের আরও দুটি পহেলা বৈশাখ রমজানের মধ্যে পালিত হয়। গত বছর ঈদুল ফিতরের দুই দিন পর পহেলা বৈশাখ হওয়ায় দুটি উৎসব একাকার হয়ে গিয়েছিল। এসব কারণে গত চারটি বাংলা বর্ষবরণে ছিল না পান্তা-ইলিশের আয়োজন। ইলিশের দামে প্রভাবও ছিল না।
আর এক দিন পর বর্ষবরণ উৎসব। এক সপ্তাহ আগে থেকে বাজারে ইলিশের সংকট দেখা দিয়েছে। যা পাওয়া যাচ্ছে, সেটা সাধারণের কেনার ক্ষমতার মধ্যে নেই। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে দাম বেড়েছে প্রকারভেদে ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা।
বরিশাল পোর্ট রোড ও বরগুনার পাথরঘাটার ইলিশ মোকামের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ৫টি অভয়াশ্রমে ইলিশ আহরণে ১ মার্চ থেকে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা চলছে। পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে দাম বাড়ানোর কৌশল হিসেবে এক সপ্তাহ আগে মোকামে ইলিশ সরবরাহ কমেছে। যতটুকু আসছে সেগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহের জন্য কিনে আড়তদাররা মজুত করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরের পোর্ট রোড মোকামে গত দুই দিন ধরে ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ আড়াই হাজার টাকা, ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজন ১ হাজার ৮০০ টাকা এবং ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ওজন ১ হাজার ৪০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতারা আরও ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশিতে বিক্রি করছেন।
পোর্ট রোডের বিসমিল্লাহ আড়তঘরের মালিক নাসির উদ্দিন ও প্যাদা মৎস্য আড়তঘরের মালিক হিরাজ প্যাদা জানান, এক সপ্তাহ ধরে মোকামে ২০ থেকে ৩০ মণ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে এর পরিমাণ ছিল অর্ধশতাধিক মণ। সরবরাহ কমার সঙ্গে সঙ্গে দাম বাড়ছে। ৩০ চৈত্র পর্যন্ত এ অবস্থা অব্যাহত থাকবে। রাজধানীতে অনেক চাহিদা থাকলেও সংকটে সরবরাহ করতে পারছেন না।
বরগুনার পাথরঘাটা মোকামের অবস্থা পোর্ট রোডের চেয়েও খারাপ বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) পাথরঘাটার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদ শিকদার জানান, সারাদেশে ইলিশ সংকট। গত এক মাসে পাথরঘাটা মোকামে ইলিশ বিক্রি হয়েছে ২৯ মণ। সাগরে ৩০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। মোহনাসংলগ্ন বলেশ্বর ও বিষখালী নদীতে পাওয়া ইলিশ বৈশাখ উপলক্ষে খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে। এর দাম অনেক চড়া।
৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩ হাজার টাকা। পাইকারি ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম জানান, তিন মাস ধরে ইলিশ কিনে ফ্রিজে মজুত করেছিলেন। এখন পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে তা সরবরাহ করছেন। পাথরঘাটার সব পাইকারি ব্যবসায়ী এ কৌশল করেছেন।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুম কোম্পানি জানান, ইলিশের জন্য কিছুদিন আগে সাগরে ট্রলার পাঠিয়েছিলেন। প্রত্যেকটি ট্রলার শূন্য হাতে ফিরেছে। এ কারণে কেউ সাগরে ট্রলার পাঠাচ্ছে না।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ র ম ওজন প থরঘ ট সরবর হ ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ
ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।
বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’
এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’
জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।