স্ত্রীর প্রেমের সম্পর্কের জেরে তালাক, দুধ দিয়ে গোসল করলেন প্রবাসী স্বামী
Published: 12th, April 2025 GMT
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সাইপ্রাস প্রবাসীর স্ত্রী অন্যত্র প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে। এরপর গ্রামের লোকজনের সামনে দুধ দিয়ে গোসল করেন ওই নারীর স্বামী বদু শিকদার নামের এক সাইপ্রাস প্রবাসী। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার চুমুরদী ইউনিয়নের পূর্ব শদরদী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এসময় স্থানীয়রা প্রবাসীর দুধ দিয়ে গোসলের ভিডিও ধারণ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়। এতে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, প্রায় ১৫ বছর আগে পার্শ্ববর্তী গ্রাম ঘারুয়া ইউনিয়নের ঘারুয়া গ্রামের প্রয়াত ফকির সুলতান আহমেদের মেয়ে সুমা আক্তারের সঙ্গে চুমুরদী ইউনিয়নের পূর্বশদরদী গ্রামের বাসিন্দা ও সাইপ্রাস প্রবাসী বদু শিকদারের সামাজিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে দুই সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু প্রবাসী বদু শিকদার দীর্ঘদিন বিদেশে থাকায়, তার স্ত্রী সোমা বেগম অন্য এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এরপর দীর্ঘদিন তাদের মধ্যে সম্পর্ক চলার পর বিষয়টি পারিবারিকভাবে জানাজানি হয়। এই নিয়ে একাধিকবার পারিবারিক ও গ্রাম্য সালিশ হয়। এ নিয়ে সম্প্রতি বদু বিদেশ থেকে দেশে ফিরেই তার স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটায়। এরপর শুক্রবার সবার সামনে দুধ দিয়ে গোসল করেন।
বদু শিকদার বলেন, ‘বিদেশে গিয়ে অনেক কষ্টে টাকা ইনকাম করি শুধুমাত্র পরিবার ও স্বজনরা ভালো থাকবে বলে। কিন্তু আমার সেই উপার্জিত টাকাগুলো পরোকীয়ায় জড়িয়ে একাধিক যুবকের পেছনে খরচ করেছে আমার স্ত্রী। এতে আমার জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তাই স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দুধ দিয়ে গোসল করেছি এবং তওবা করেছি।’
এ বিষয়ে সোমা বেগমের বক্তব্য জানতে একাধিকবার কল করা হলেও মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করে চুমুরদী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম সোহাগ জানান, প্রবাসী বদু শিকদারের স্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবত মনোমালিন্য চলছিল, এই নিয়ে একাধিকবার গ্রাম্য সালিশ হয়েছে। শুক্রবার বদু শিকদারের সঙ্গে তার স্ত্রীর বিবাহ বিচ্ছেদের পর দুধ দিয়ে গোসলের ঘটনায় গ্রামে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।