অবশেষে কারাগারেই বিয়ে হল শিমুল-লিমার
Published: 11th, April 2025 GMT
প্রেম করে তরুণীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা করে পালিয়ে গিয়েছিলেন সিলেটের গোলাপগঞ্জ ভাদেশ্বরের শিমুল আহমদ। দীর্ঘদিন ছিলেন লাপাত্তা। এরপর ওই তরুণীর ঘরে জন্ম নেয় একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান। সন্তানের পিতৃপরিচয় ও বিয়ের স্বীকৃতি নিয়ে বরের বাড়িতে হাজির হন কয়েকবার।
বার বার প্রত্যাখাত হয়ে এসএমপির শাহপরাণ থানায় মামলা করেন আলফাতুন্নেসা লিমা। সম্প্রতি আদালত তরুণী লিমাকে বিয়ের নির্দেশ দিলে বৃহস্পতিবার কাজী ডেকে দুই পরিবারের সম্মতিতেই কারাগারেই বিয়ের আয়োজন করা হয়। শুক্রবার বিষয়টি জানাজানি হলে সিলেট জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এ সময় ৪ বছরের মেয়ে শিশুটিও উপস্থিত ছিল।
কারাগার সূত্রে জানা গেছে, ভাদেশ্বরের কলাশহরের মৃত আব্দুল করিমের ছেলে শিমুল আহমদ। তার সঙ্গে গড়ে ওঠে তরুণী লিমার প্রেমের সম্পর্ক। একপর্যায়ে তরুণী লিমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখান শিমুল। এরপর থেকেই দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা। তাদের ঘনিষ্টতায় অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন লিমা। বিষয়টি শোনার পর পালিয়ে যান শিমুল। এ ঘটনায় ২০২২ সালের ৭ মার্চ এসএমপির শাহপরাণ থানায় মামলা করেন লিমা। ওই মামলায় গেল বছরের ১৯ এপ্রিল পুলিশ গ্রেপ্তার করে শিমুলকে। এরপর থেকেই হাজতবাস করছেন তিনি।
এরপর মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক রোকনুজ্জামানের আদালতে জামিনের আবেদন করেন শিমুল। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেন। পরবর্তীতে উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন জানালে আদালত একই আদেশ দেন। সম্প্রতি আদালত বিয়ের নির্দেশনা দিলে বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট কারাগার কর্তৃপক্ষ বিয়ের আয়োজন করে। বিয়েতে উভয় পরিবারের কর্তাব্যক্তি ছাড়াও আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিয়ের কাজী সজীব আহমদ জানান, আদালতের নির্দেশে উভয়পক্ষের স্বজনদের উপস্থিতিতে ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয়েছে শিমুল আর লিমার। আমি তাদের বিয়ে পড়িয়ে দিয়েছি। দীর্ঘদিন বর পলাতকও ছিল। তাদের ঘরে ৪ বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।
সিলেট মেট্রোপলিটন কারাগারের জেলার আরিফুর রহমান বলেন, বিবাহ সম্পর্কিত একটি আদেশ আমাদের দপ্তরে আসে। এরপর আমরা আদালতের সেই নির্দেশ পালন করি। উভয়পক্ষের লোকজন ও আইনজীবীদের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় তারা দুজনেই ছিলেন খুশি। এক অপরকে মিষ্টিমুখও করিয়ে দেন তারা। আদালতে তাদের বিয়ের প্রতিবেদন দেওয়া হলে আর কোনো প্রকার মামলা না থাকলে শিমুল মুক্তি পেতে পারেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপস থ ত
এছাড়াও পড়ুন:
২ বছরের ভেতরে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আপত্তি নেই বিএনপির
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের খসড়া পাঠানো হয়েছে। সেই খসড়ায় বলা হয়েছে, দুই বছরের মধ্যে ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। এ বিষয়ে বিএনপির কোনো আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ২১তম দিনের আলোচনার বিরতিতে সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা যেটা পেয়েছি, এটা জুলাই জাতীয় সনদ নামে একটা খসড়া পেয়েছি। সেটা ভূমিকা, বিস্তারিত বিষয়গুলো নেই। এই খসড়ার সঙ্গে আমরা মোটামুটি একমত। কিন্তু খসড়ার কিছু বাক্য, শব্দ ও গঠনপ্রণালি নিয়ে কারও কোনো মতামত আছে কি না, তা জানতে রাজনৈতিক দলগুলোকে খসড়াটি দিয়েছে কমিশন। আমাদের যে সংশোধনী থাকবে, আমরা তা কাল জমা দেব।’
খসড়ায় যে অঙ্গীকারের কথা বলা হয়েছে, সে বিষয়ে বিএনপি একমত বলে জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। তিনি বলেন, ‘খসড়ায় দুই বছরের ভেতরে প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে অঙ্গীকার চাওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে আমরা একমত।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ আইনের মাধ্যমে করতে চাই। এতে আইনি ত্রুটি থাকলে সংশোধন সহজ হবে।’ তিনি বলেন, ‘কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য একটি সক্রিয় নির্বাহী বিভাগ প্রয়োজন। তবে সেই নির্বাহী বিভাগকে চেক অ্যান্ড ব্যালান্সের মধ্যে রাখতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংবিধানে যত বেশি যুক্ত করা হবে, সংশোধন তত বেশি জটিল হয়ে পড়বে। তাই আমরা চাই, আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করা হোক এবং সেই আইনে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন আনা সহজ হবে।’
নারী প্রতিনিধিত্ব বিষয়ে বিএনপির অবস্থান প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রথম ধাপে প্রস্তাব করেছি, আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৫টি আসনে নারীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। পরবর্তী নির্বাচনে তা ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৩০টি হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই, নারীরা সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হোক। কিন্তু সমাজের বাস্তবতা বিবেচনায় আমরা ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে চাই।’
সংস্কার কমিশনের ৭০০–এর বেশি সুপারিশ সম্পর্কে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এর মধ্যে প্রায় ৬৫০টির মতো প্রস্তাবে বিএনপি একমত হয়েছে। বাকিগুলোর বিষয়ে পরামর্শ বা সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘সব প্রস্তাব সনদে আসবে না। তবে যেগুলো মৌলিক, যেমন সংবিধান সংশোধনসংক্রান্ত, সেগুলো অবশ্যই গুরুত্ব পাবে।’