সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার এবং ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে দুই বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। দোয়ারাবাজারে কৃষককে গুলি করে খাসিয়ারা এবং মহেশপুরে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে বিএসএফের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্র উভয় ঘটনা নিশ্চিত করেছে।

দোয়ারাবাজার সীমান্তে নিহতের নাম কুটি মিয়া (৫০)। শনিবার রাতে বাগানবাড়ি-রিংকু সীমান্ত হাট দিয়ে নিহতের লাশ হস্তান্তর করার কথা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

জাহিদুল ইসলাম। কীভাবে মৃত্যু হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি এখনও জানা যায়নি। লাশ হস্তান্তরের পর বলতে পারব।’

জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে দোয়ারাবাজারের পেকপাড়া এবং ভারতের মোকামছড়া দিয়ে সাত বাংলাদেশি ভারতে যান। তারা হলেন– মনিরুল্লার ছেলে কুটি মিয়া (৫০), আইয়ুব আলীর ছেলে হানিফ মিয়া (৩০), এরাবুল্লাহর ছেলে জরিফ উদ্দিন (৪৫) ও আকবর আলী (৩১), অজুদ মিয়ার ছেলে খোকন মিয়া (৩৫), ময়না মিয়ার ছেলে ইসহাক (৫০) ও চাঁন মিয়ার ছেলে সোনা মিয়া (৫৫)। তাদের সবার বাড়ি পেকপাড়ায়।

তারা সীমান্ত থেকে আনুমানিক ৭ কিলোমিটার ভারতের অভ্যন্তরে নথরাইয়ের সুপারি বাগানে যান। সেখানে ভারতীয় খাসিয়াদের সঙ্গে কলহে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে খাসিয়ারা ধাওয়া দিলে কুটি মিয়া ছাড়া বাকি ছয়জন ফেরত আসেন। তারা আত্মগোপনে রয়েছেন।

সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল একেএম জাকারিয়া কাদির বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে এ ঘটনা ঘটেনি। ভারতের ভেতরে ৭ কিলোমিটার দূরে ঘটেছে। সেখানকার পুলিশ বিষয়টি দেখভাল করছে। বাংলাদেশ পুলিশও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পেরেছে নিহতের লাশ শিলং হাসপাতালে আছে।

কুটি মিয়ার স্ত্রী রত্না বেগম জানান, তাঁর স্বামী বৃহস্পতিবার সকালে ঘাস কাটতে বাড়ি থেকে বের হন। এখন শুনতে পাচ্ছেন, খাসিয়ারা গুলি করে হত্যা করেছে। স্বামীর লাশ ফেরত চান তিনি।

এদিকে, মহেশপুর সীমান্তে ইছামতী নদীর ভারতীয় অংশে বাংলাদেশি যুবকের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। জায়গাটি পশ্চিমবঙ্গের নদিয়ার ধানতলা থানার হাবাসপুর গ্রামে। তাঁকে বিএসএফ সদস্যরা পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবার। বিকেলে মৃতদেহ ভেসে উঠলেও শুক্রবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে সেটি উদ্ধার করে বিএসএফ নিয়ে যায়।

মহেশপুর উপজেলার নেপা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামছুল আলম মৃধা জানান, নানাভাবে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি, এটি বাংলাদেশি যুবকের মৃতদেহ। তবে নাম-পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। তাঁর বয়স আনুমানিক ২৪ বছর। মৃতদেহটি বাঘাডাঙ্গা গ্রামের আদিবাসী পাড়ার ওয়াসিম আলীর কিনা, সেটাও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। এ নিয়ে বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠক হলে বিস্তারিত জানা যাবে।

বাঘাডাঙ্গা গ্রামের আদিবাসী পাড়ার রমজান আলী অভিযোগ করেন, কয়েক দিন আগে ভারতে যাওয়ার সময় তাঁর ছেলে ওয়াসিম বিএসএফের হাতে আটক হয়েছিল। ঘটনাটি তিনি স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্পে জানিয়েছেন। নিহত যুবক তাঁর ছেলে বলে তিনি দাবি করেন।

ঝিনাইদহ বিজিবি-৫৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল রফিকুল আলম বলেন, মৃতদেহটি নদীর ভারতীয় অংশে ছিল। রাতে বিএসএফ সেটি নিয়ে গেছে। তারা (বিএসএফ) না জানানো পর্যন্ত পরিচয় সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত হতে পারছি না।

তিনি আরও জানান, রমজান আলীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তারা বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।

মহেশপুর থানার ওসি ফয়েজ উদ্দিন মৃধা বলেন, নিখোঁজের বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হত য ব এসএফ র য গ কর

এছাড়াও পড়ুন:

নওগাঁয় ১০ জনকে ঠেলে দিল বিএসএফ

নওগাঁর ধামইরহাট সীমান্ত দিয়ে ১০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। 

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ভোরে ধামইরহাট উপজেলার আগ্রাদ্বিগুন সীমান্ত পিলার ২৫৬/৭ এস কাছ দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হলে বিজিবির সদস্যরা তাদেরকে আটক করেন। তাদের মধ্যে দুজন পুরুষ এবং আটজন নারী। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে এসব তথ্য জানিয়েছেন পত্নীতলা ১৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন।

আরো পড়ুন:

গাংনী সীমান্ত দিয়ে ১৮ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ

বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে ১০ রোহিঙ্গাকে ঠেলে দিয়েছে বিএসএফ

আটকরা হলেন—আছমা বেগম (৪০), খাদিজা বেগম (৩৪), পাখি বেগম (২৪), রুমা বেগম (২৫), কাকলি আক্তার (২৭), রুজিনা আক্তার (৩৩), কোহিনুর বেগম (২৬), নাসরিন বেগম (৩৩), মঞ্জুরুল ইসলাম (৩৬), সুমন হোসেন (২৭)। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তারা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের নাগরিক।

বিজিবি জানিয়েছে, আগ্রাদ্বিগুন বিওপির টহল কমান্ডার জেসিও সুবেদার মো. জিহাদ আলীর নেতৃত্বে একটি টহল দল সীমান্তের শূন্য লাইন থেকে আনুমানিক এক কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মহেষপুরে ওই ১০ জনকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে আটক করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে ভারতে যান। মুম্বাই শহরে পুরুষ দুজন রাজমিস্ত্রি হিসেবে এবং নারী আটজন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। সেখানে তাদেরকে আটক করে ভারতীয় পুলিশ। গত ২৯ জুলাই ভারতের হরিবংশীপুর বিএসএফ ক্যাম্পে তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে বিএসএফ ওই ১০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিলে বিজিবি টহল দল তাদের আটক করে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

ঢাকা/সাজু/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুজিবনগর সীমান্তে ১৭ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর বিএসএফের
  • চুয়াডাঙ্গায় বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠক, ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর
  • দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ 
  • নওগাঁয় ১০ জনকে ঠেলে দিল বিএসএফ
  • নওগাঁর সীমান্ত দিয়ে ১০ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
  • পঞ্চগড়ের দুই সীমান্ত দিয়ে আরও ১৭ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
  • গাংনী সীমান্ত দিয়ে ১৮ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ