‘সন্ধ্যা নামে প্রলয় মাঝে, বাচ্চারা খেলে না আর, স্কুল ভেঙে গেছে বই পুড়ছে, তবু ওদের সাহসে নেই বাঁধ, ফিলিস্তিন জাগে ফিলিস্তিন জাগে’– বহু দূরের ফিলিস্তিনের নির্যাতিত শিশুদের জন্য নারায়ণগঞ্জে খেলাঘরের শিশুরা সবাই মিলে দাঁড় করিয়েছে একটি কবিতা। শনিবার বিকেলে এই কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়েই পালন করে প্রতিবাদী মানববন্ধন। সেখানে ফিলিস্তিনের নির্বিচার শিশু হত্যার, মানুষ হত্যার প্রতিবাদ জানায় তারা।
‘ফিলিস্তিন জাগে ফিলিস্তিন জাগে’ কবিতার লাইনটি মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের মুখে রূপান্তরিত হয় স্লোগানে। পাশাপাশি উঠে আসে আরেক স্লোগান, ‘খেলাঘর চায় না, শিশুদের কান্না’। শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে খেলাঘর আসর আয়োজিত এ কর্মসূচিতে অংশ নেন নানা দলমতের মানুষ।
জেলা খেলাঘর আসরের সভাপতি জহিরুল ইসলাম জহির বলেন, ‘ফিলিস্তিনি শিশুদের কান্নার রোল আমাদের হৃদয়ে গভীর কষ্ট সৃষ্টি করেছে। তাই আমরা শিশুদের নিয়ে আজ রাস্তায় দাঁড়িয়েছি এসব শিশুর কান্নার সঙ্গে চিৎকার দেওয়ার জন্য। আমরা আমেরিকার সহযোগিতায় ফিলিস্তিনে হামলার প্রতিবাদ জানাচ্ছি ও অনতিবিলম্বে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবি জানাচ্ছি। শুধু মুসলমানরাই নয়, কোনো মানবিক বোধসম্পন্ন মানুষ এই নির্বিচারে গণহত্যা, এই ধ্বংসযজ্ঞ মেনে নিতে পারে না। এই বিশ্বকে আমরা শিশুদের বাসযোগ্য দেখতে চাই, আনন্দময় দেখতে চাই। যুদ্ধমুক্ত পৃথিবীর প্রত্যাশা করি।’
জহিরুল ইসলাম জহিরের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন জেলা মহিলা পরিষদের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লক্ষ্মী চক্রবর্তী, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজল, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাকিদ মুস্তাকিম শিপলু, জেলা উদীচীর সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজল, জেলা বাসদ সমন্বয়ক আবু নাঈম খান বিপ্লব, জেলা সিপিবি সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, ক্রান্তি খেলাঘর আসরের সভাপতি মামুন ভূঁইয়া, রূপগঞ্জ খেলাঘর আসরের সভাপতি জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
‘চট্টগ্রামে সাইক্লিস্ট ওসমানের মৃত্যু দুর্ঘটনা নয়, হত্যা’
গাড়ি চাপা দিয়ে সড়কে নির্মমভাবে সাইক্লিস্ট ওসমান গণিকে (১৯) হত্যা করেছে। ধাক্কা দেওয়ার পর ওসমানের মাথার ওপর গাড়ি চালিয়ে চলে যান আসামি। এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়, হত্যা। এ হত্যার বিচার হতে হবে। এখন আসামির বয়স নিয়ে লুকোচুরি করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম নগরের বড়পোল এলাকায় প্রাইভেট কারের ধাক্কায় নিহত সাইক্লিস্ট ওসমান হত্যার বিচারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনের এসব কথা বলেন উপস্থিত বক্তারা। আজ শুক্রবার বেলা তিনটায় নগরের জামালখান এলাকায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে এ মানববন্ধন আয়োজন করে চট্টগ্রাম সাইক্লিং কমিউনিটি। মানববন্ধন থেকে আসামির শাস্তির দাবি জানানো হয়।
এর আগে গত বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বড়পোল এলাকার সিলভার বেলস স্কুলের সামনে প্রাইভেট কারের ধাক্কায় নিহত হন ওসমান গণি। তিনি বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি থানার পূর্ব বাইশারী গ্রামের মোহাম্মদ নাছিরের ছেলে। এ ঘটনায় বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সড়ক পরিবহন আইনে হালিশহর থানায় মামলা করেন নিহত ব্যক্তির মামা আবুল কাশেম।
মামলায় প্রাইভেটকার চালক তানিম হোসেনকে (১৯) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি নগরের হালিশহর এল ব্লক এলাকার এরশাদ হোসেনের ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, তানিম তাঁর বাবার গাড়ি নিয়ে বিভিন্ন সময় সড়কে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাতেন। কিন্তু তাঁর কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। শুরুতে তাঁর বয়স ১৬ থেকে ১৭ বলা হলেও মামলার এজাহারে তাঁর বয়স ১৯ উল্লেখ করা হয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন নিহত ওসমানের বাবা মোহাম্মদ নাছির, মামা আবুল কাশেম, বাংলাদেশ সাইক্লিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল, সদস্য সুবীর মিত্র, জাতীয় পর্যায়ের সাইক্লিস্ট রাকিবুল ইসলাম প্রমুখ। এ ছাড়া সারা দেশের অন্তত ১০টি সাইক্লিং গ্রুপের সদস্যরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে ওসমানের বাবা মোহাম্মদ নাছির বলেন, ‘আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। তাঁর মৃত্যুতে আমাদের পরিবার ভেঙে পড়েছে। গ্রামের মানুষ, এলাকার লোকজন সবাই শোকাহত। ছেলে যে বাসায় কেয়ারটেকার ছিল সেখানে বাজার-সদাই সে করতে। সেদিনও সে একই উদ্দেশ্যে বেড়িয়েছিল।’
অন্য বক্তারা বলেন, লাইসেন্স ছাড়া কীভাবে সড়কে গাড়ি নিয়ে বের হয়? আবার তাঁকে এখন শিশু বানানো হচ্ছে। বাবার টাকা থাকলেই কী হত্যাকারীরা বের হয়ে যাতে পারে? আসামি একজন প্রাপ্ত বয়স্ক, তাঁকে শিশু বানিয়ে তাঁর বাবা ছাড়িয়ে আনার চেষ্টা করছে। তাঁর ফেসবুকে তাঁর বেপরোয়া গাড়ি চালানোর ভিডিও সবাই দেখেছেন। বারবার প্রশ্রয় পেয়ে তিনি এমন বেপরোয়া হয়েছেন।