বিশেষ ক্ষমতা আইনে মেঘনা আলমকে আটক মানবাধিকার লঙ্ঘন: এইচআরএফবি
Published: 13th, April 2025 GMT
বিশেষ ক্ষমতা আইন ব্যবহার করে মেঘনা আলমকে আটক করে কারাগারে পাঠানোর ঘটনাকে মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি)। তারা মেঘনা আলমের মুক্তির পাশাপাশি বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছে।
আজ রোববার এক বিবৃতিতে এইচআরএফবি এসব কথা বলেছে। গত বুধবার রাতে মডেল মেঘনা আলমকে রাজধানীর বসুন্ধরার বাসা থেকে আটক করে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশ অনুযায়ী, পরদিন বৃহস্পতিবার রাতে আদালত তাঁকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিন আটক রাখার আদেশ দেন। তিনি এখন কারাগারে।
মেঘনা আলমকে আটকের ঘটনার সমালোচনা করে এইচআরএফবি বলেছে, রাতের আঁধারে যেকোনো নাগরিকের বাসায় বলপূর্বক প্রবেশ করে কাউকে আটক করা মানবাধিকার মানদণ্ডের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩(১) ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তিকে বিচার না করেই, শুধু ‘জননিরাপত্তা’বা ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষা’র অজুহাতে আটক রাখা যেতে পারে। এই আইনকে মানবাধিকারকর্মী ও আইনজ্ঞরা নিপীড়নমূলক আইন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের হাতিয়ার হিসেবে মনে করেন। দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় মানবাধিকার সংগঠন এবং মানবাধিকারকর্মীরা এর অপব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন। এইচআরএফবি এই আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছে। তারা আরও বলেছে, এই আইনের ব্যবহার বাংলাদেশের সংবিধানের ৩১ (আইনের আশ্রয়) ও ৩২ (জীবন ও ব্যক্তিস্বাধীনতার অধিকার) অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। মেঘনার গ্রেপ্তারের ঘটনাটি এই সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘনের একটি স্পষ্ট উদাহরণ।
মেঘনা আলমের মুক্তি দাবি করে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানিয়ে এইচআরএফবি বলেছে, ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সজাগ থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
এই বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতাদের মধ্যে রয়েছেন হামিদা হোসেন, সুলতানা কামাল, জেড আই খান পান্না, ইফতেখারুজ্জামান, খুশী কবির, শাহীন আনাম, রাজা দেবাশীষ রায়, সারা হোসেন, রোকেয়া রফিক বেবী, ফওজিয়া মোসলেম, সঞ্জীব দ্রং, শামসুল হুদা, জাকির হোসেন, রঞ্জন কর্মকার, সালেহ আহমেদ, সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ, পল্লব চাকমা প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব শ ষ ক ষমত র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
ডিবির অভিযানে আ.লীগের সাবেক এমপিসহ গ্রেপ্তার ৭
রাজধানীতে ২৪ ঘণ্টায় ঝটিকা মিছিল বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপিসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল থেকে ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার (২৮ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জাফর আলম, তুরাগ থানা ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম বাবু, বংশাল থানা ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. ওয়ারেজ সিকদার, তুরাগ থানা যুবলীগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহেদ আলম, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য শহীদুল হক চৌধুরী রানা, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও সম্প্রতি যাত্রাবাড়ী এলাকায় আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল সমন্বয়কারী জাহিদুল ইসলাম তুষার এবং তুরাগ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি মো. রেজাউল করিম।
আরো পড়ুন:
পুলিশ সপ্তাহ শুরু মঙ্গলবার, নির্বাচনী নির্দেশনা পাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
মোবাইল গেমে আসক্ত এইচএসসি পরীক্ষার্থীর কাণ্ড
ডিবি জানায়, ২৭ এপ্রিল দুপুর সাড়ে ৩টায় রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে মো. জাফর আলমকে গ্রেপ্তার করে ডিবি-রমনা বিভাগের একটি টিম। অন্যদিকে ডিবি-মতিঝিল বিভাগের একটি আভিযানিক দল রাজধানীর বংশাল থানাধীন ইংলিশ রোড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বিকেল সোয়া ৩টায় মো. শাহেদ আলমকে গ্রেপ্তার করে। এছাড়া দুপুর পৌনে ২টায় ডিবি-লালবাগ বিভাগের একটি টিম রাজধানীর বংশাল এলাকা থেকে মো. ওয়ারেজ সিকদারকে গ্রেপ্তার করে।
ডিবি সূত্র জানায়, ডিবি-রমনা বিভাগের একটি টিম রাজধানীর গোপীবাগ এলাকা থেকে সকাল ৭টায় শহীদুল হক চৌধুরী রানাকে এবং ডিবি-উত্তরা বিভাগের একটি টিম সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কামারপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মো. সিরাজুল ইসলাম বাবুকে গ্রেপ্তার করে।
এছাড়া ডিবি সাইবার বিভাগের একটি টিম রাত পৌনে ১২টায় রাজধানীর শনির আখড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে জাহিদুল ইসলাম তুষারকে গ্রেপ্তার করে।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, ২৮ এপ্রিল রাত সাড়ে ১২টায় ডিবি সাইবার টিম কর্তৃক উত্তরা পূর্ব থানার ১৮ নম্বর সেক্টর থেকে মো. রেজাউল করিমকে গ্রেপ্তার করে।
উপ-কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। তারা সংঘবদ্ধ হয়ে আইনশৃঙ্খলা বিনষ্টের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল করার মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করার অপচেষ্টায় লিপ্ত।
ঢাকা/এমআর/এসবি