নির্বাচনে প্রচারের সময় থেকেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে অভিবাসীদের বের করে দেওয়ার কথা বলে আসছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিন থেকেই এ নিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। মেয়াদের প্রথম বছরে আরও অভিবাসীকে বহিষ্কারের জন্য আগ্রাসীভাবে চাপ দিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন।

ফেডারেল কর্মকর্তাদের মতে, আলোচনায় বারবার প্রথম বছরে বহিষ্কার করতে চাওয়া একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী সংখ্যা উঠে আসছে, তা হলো ১০ লাখ। পরিকল্পনা সম্পর্কে অবগত চারজন বর্তমান ও সাবেক ফেডারেল কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস। 

ট্রাম্প প্রশাসন এক বছরে ১০ লাখ অভিবাসীকে বের করে দিতে পারলে তা হবে বিশাল একটি রেকর্ড। কারণ সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময় বছরে সর্বোচ্চ এ সংখ্যা ছিল চার লাখের কিছু বেশি। 
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর্মকর্তারা বলেছেন, কীভাবে এ সংখ্যা গণনা করা হচ্ছে, তা প্রকাশ করা হচ্ছে না। বিশ্লেষকরা বলছেন, তহবিল, কর্মীদের স্তর ও দেশ থেকে বের করে দেওয়ার আগে বেশির ভাগ অভিবাসীর আদালতের শুনানির অধিকার রয়েছে, তা বিবেচনা করলে এ লক্ষ্য অবাস্তব। যদিও তা অসম্ভব নয়। 

বর্তমান ও সাবেক দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টা স্টিফেন মিলার এই লক্ষ্য অর্জনে প্রায় প্রতিদিনই হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ এবং অন্যান্য ফেডারেল সংস্থার কর্মকর্তার সঙ্গে কৌশল তৈরি করছেন। কর্মকর্তারা বলছেন, দ্রুত সংখ্যা বৃদ্ধির একটি কৌশল হলো ১৪ লাখ অভিবাসীর মধ্যে যাদের চূড়ান্ত নির্বাসন আদেশ রয়েছে, তাদের ফেরত পাঠানো। তাদের নিজ দেশ ফিরিয়ে নিতে না চাইলে তৃতীয় কোনো দেশে পাঠিয়ে দেওয়া। সম্প্রতি আদালতে দায়ের করা এক মামলায় প্রশাসন জানিয়েছে, তারা হাজার হাজার অভিবাসীকে তৃতীয় দেশ হিসেবে পরিচিত এমন গন্তব্যগুলোয় পাঠানোর আশা করছে। এমন ৩০টিরও বেশি দেশের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। 

মার্কিন প্রশাসন বছরের পর বছর ধরে তৃতীয় দেশে অভিবাসীদের পাঠানোর চেষ্টা করে আসছে। ট্রাম্প মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি অভিবাসীকে তৃতীয় দেশে পাঠিয়ে দিতে চান। কর্মকর্তারা ইতোমধ্যেই মেক্সিকো, কোস্টারিকা, পানামাসহ এমন দেশগুলোয় তাদের পাঠানো শুরু করেছেন। 

এ বিষয়ে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কুশ দেশাই সরকারের লক্ষ্য সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দেননি। তিনি একটি ই-মেইলে বলেছেন, সীমান্ত নিরাপত্তা ও অভিবাসন নিয়ে বাইডেন প্রশাসনের ব্যবস্থাপনা মেরামত করার জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের ভোটারদের কাছ থেকে একটি ম্যান্ডেট ছিল। তিনি বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন এই ম্যান্ডেট পূরণে একমত। স্বেচ্ছাচারী নয়, সন্ত্রাসী ও অপরাধী অবৈধ অভিবাসীদের গণনির্বাসন নিশ্চিত করার জন্য নিয়মতান্ত্রিকভাবেই তাদের পাঠানো হবে। 

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ দিনের বেশি অবস্থান করা বিদেশিদের সবাইকে নিবন্ধন করার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যারা নিবন্ধন করতে ব্যর্থ হবেন, তারা আর্থিক জরিমানা ও কারাদণ্ডের মুখে পড়বেন বলে সতর্ক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে এক্সে একটি পোস্টে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বিদেশি যারা যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ দিনের বেশি সময় ধরে আছেন, তাদের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অবশ্যই নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন না করলে তা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। ফলে ভোগ করতে হবে আর্থিক জরিমানা ও কারাদণ্ড। 

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েমের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রণালয় লিখেছে, অবৈধ অভিবাসীর প্রতি তাদের স্পষ্ট বার্তা হলো– যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ুন এবং স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফিরে যান।


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র কর মকর ত র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুর গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা, নির্বাচনী আচরণবিধির সংশোধন চায় ছাত্রদল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা এবং নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধনে নির্বাচন কমিশনকে স্মারকলিপি দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের কাছে এ স্মারকলিপি দেন ছাত্রদলের নেতারা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘আসন্ন জকসু নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন গোষ্ঠী জকসু সংবিধি এবং নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশন একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য দায়বদ্ধ। ন্যায্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিতে আমাদের অনুরোধ, ভোটার তালিকা প্রকাশের সময় প্রত্যেক ভোটারের ছবিসহ তালিকা প্রকাশ করতে হবে। নির্বাচনে অমোচনীয় কালি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং স্বচ্ছ, নাম্বারযুক্ত ব্যালট বক্স রাখা আবশ্যক।’

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ব্যালট ছাপার সংখ্যা, ভোট প্রদানকারীর সংখ্যা এবং নষ্ট ব্যালটের তথ্য প্রকাশ করতে হবে। মিডিয়া ট্রায়াল বা ভুল তথ্য প্রচার হলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কেন্দ্র থেকে সরাসরি ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার অনুমোদিত সব মিডিয়াকে নির্বাচনকালীন সময়ে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ডাকসুর তফসিল ঘোষণার ৪১ দিন, চাকসুর ৪৪ দিন, রাকসুর ৮০ দিন এবং জাকসুর তফসিল ঘোষণার ৩১ দিন পর নির্বাচন হয়েছে। যেহেতু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একটি অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়, তাই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। এ ছাড়া বাকি চার বিশ্ববিদ্যালয়ের তফসিল ঘোষণার সময় ও নির্বাচনের মধ্যবর্তী পার্থক্য বিবেচনা করে জকসু নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করতে হবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে সুষ্ঠু একটা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়, এজন্য ছাত্রদল নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। আশা করছি, নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন আমাদের দাবিগুলো মেনে নেবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ