যবিপ্রবিতে ভুয়া বেতন বিল তৈরি অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন
Published: 13th, April 2025 GMT
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
অভিযোগে আউটসোর্সিং জনবল হিসেবে কর্মরত পাঁচজন অনুপস্থিত কর্মচারীর নামে ভুয়া বেতন বিল তৈরি ও সিকিউরিটি সার্ভিস কোম্পানি ‘বিএসএস’ এর সঙ্গে অবৈধ আর্থিক লেনদেন হয়েছে বলে জানা গেছে।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) যবিপ্রবি রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো.
জানা গেছে, যবিপ্রবিতে আউটসোর্সিং জনবল হিসেবে কর্মরত অনুপস্থিত পাঁচজন কর্মচারীর তিন মাসের ভুয়া বেতন বিল তৈরি ও সিকিউরিটি সার্ভিস কোম্পানি ‘বিএসএস’ এর সঙ্গে অবৈধ আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠে যবিপ্রবির ডেপুটি রেজিস্ট্রার (স্টেট ও নিরাপত্তা শাখা) মো. জাহাঙ্গীর কবিরের বিরুদ্ধে।
এছাড়া গত মাসের বেতন শিটে কর্মচারীদের স্বাক্ষরে গড়মিল থাকায় অডিট আপত্তি জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিট সেল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
তদন্ত কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এস এম নুর আলমকে আহ্বায়ক ও সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ রিয়াজুল হককে সদস্য সচিব করা হয়েছে ।
এছাড়া কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন, মুন্সী মেহেরুল্লাহ হলের প্রাধ্যক্ষ সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রউফ সরকার এবং তাপসী রাবেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ সহযোগী অধ্যাপক ড. নাজনীন নাহার।
ঢাকা/ইমদাদুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুনজর কখন পড়বে
চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নে দ্বিতল ভবনবিশিষ্ট একটি মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রে ওষুধ নেই, চিকিৎসক নেই, বিদ্যুৎ–সংযোগ নেই। ফলে তেমন একটা রোগীও নেই। এই ‘নাই নাই’ হাসপাতালটির নাম মাস্টারদা সূর্য সেন মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্র। এভাবে কি একটা হাসপাতাল চলতে পারে? প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে যাওয়ার এমন নমুনা আমাদের হতাশ করে। দেশজুড়ে এ রকম আরও চিত্র আমরা দেখতে পাই, যা আমাদের স্বাস্থ্য খাত নিয়ে ইতিবাচক কোনো বার্তা দেয় না।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং ২০০৩ সালে চালু হওয়া এই ১০ শয্যার হাসপাতালটির মূল সমস্যা জনবলসংকট। ১৬টি পদের ১টিতেও স্থায়ী জনবল পদায়ন করা হয়নি। অন্য হাসপাতাল থেকে প্রেষণে এসে মাত্র তিনজন কর্মচারী (একজন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, একজন মিডওয়াইফ ও একজন আয়া) সপ্তাহে কয়েক দিন করে দায়িত্ব পালন করেন। এটি একটি জরুরি প্রসূতিসেবাকেন্দ্র, যা ২৪ ঘণ্টা চালু থাকার কথা। কিন্তু বিদ্যুৎ নেই, ডাক্তার নেই এবং প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে এর কার্যক্রম এখন প্রায় স্থবির।
হাসপাতালের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় প্রায় তিন মাস ধরে বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন। ফলে পানীয় জলের ব্যবস্থাও নেই। বিনা মূল্যের ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে প্রায় ছয় মাস ধরে। এ পরিস্থিতিতে একজন রোগী কীভাবে এখানে স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসবেন? যেখানে হাসপাতালের বাইরের সাইনবোর্ডে জরুরি প্রসূতিসেবার জন্য ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকার কথা লেখা, সেখানে মূল ফটকে তালা ঝোলানো। এটি জনগণের সঙ্গে একধরনের প্রতারণা। হাসপাতালটি চালু না থাকায় মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবার জন্য স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতাল বা চট্টগ্রাম শহরে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। এতে সময় ও অর্থ—দুটোরই অপচয় তো বটেই, চরম ভোগান্তিরও শিকার হতে হয় মানুষকে।
যে মিডওয়াইফরা এখানে কাজ করছেন, তাঁরা জানান, এখন মাসে মাত্র চার-পাঁচজন প্রসূতি সেবা নিতে আসেন, যেখানে আগে শতাধিক প্রসূতি সেবা পেতেন। নিরাপত্তা প্রহরীরা দুই বছর ধরে বেতন পাচ্ছেন না। তবু নিয়মিত বেতন পাওয়ার আশায় তাঁরা এখনো কাজ করে যাচ্ছেন। এ অসহনীয় দুর্ভোগের কারণ হলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতা। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জানান, তাঁরা বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জনবলসংকটের কথা জানিয়েছেন, কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি।
একটি মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু রাখতে কেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার ধরনা দিতে হবে? জনবল নিয়োগ, কর্মচারীদের বকেয়া বেতন পরিশোধ, বিদ্যুতের ব্যবস্থা কার্যকর করা—সব ধরনের সংকট দূর করতে হাসপাতালটির দিকে আন্তরিক মনোযোগ দেওয়া হবে, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।