হাসিনার পতনের পর নতুন রাজনৈতিক দল গঠন কতটা কঠিন
Published: 15th, April 2025 GMT
বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন যে প্রকৃতপক্ষেই কঠিন বা আপাত-অসম্ভব এক বাস্তবতা, সে বিষয় আবারও উঠে এল যোগাযোগ পেশাজীবী ও শিক্ষক খান মো. রবিউল আলমের প্রকাশিত লেখায়। ‘হাসিনার পতনে গ্রামেগঞ্জে প্রভাব ও আওয়ামী কর্মীদের ভাবনা কী’ শীর্ষক ওই লেখায় তিনি দেশের গ্রামাঞ্চলের নির্জলা বাস্তবতাই তুলে ধরেছেন।
খান মো.
খান মো. রবিউল আলমের লেখা থেকে উদ্ধৃত করা যাক, ‘স্থানীয় জনগণ নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে। সেই চেষ্টায় জনগণ বিএনপিকে আগামী দিনের প্রতিনিধিত্বশীল রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে বিবেচনা করছে। গ্রামীণ রাজনৈতিক ক্ষমতাকাঠামোয় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের বাইরে জনগণ বিশেষ কিছু ভাবছে না। কারণ, জনগণের রাজনৈতিক আচরণের অভ্যস্ততা কেবল ভোটের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; জীবন-জীবিকা, সামাজিক নিরাপত্তা, প্রাতিষ্ঠানিক সুরক্ষা মাড়িয়ে এর শিকড় অনেক গভীরে। জনগণের ক্ষমতাপ্রিয়তা বা ক্ষমতাসখ্যের তীব্র অনুভূতি প্রচলিত রাজনীতির একটি বিশেষ দিক, যার ভিত্তি হলো রাজনৈতিক দলকেন্দ্রিক এক বিশেষ সুবিধাবাদী ব্যবস্থা। মতাদর্শের চেয়ে অনেক বেশি অনুগামী ব্যক্তি বা দলীয় স্বার্থে।’
বিষয়টি হলো, বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রায় ৮৫ শতাংশ অনানুষ্ঠানিক খাতনির্ভর। অর্থাৎ দেশের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই। তাঁরা নানাভাবে কমাই-রোজগার করছেন ঠিকই, কিন্তু তাঁদের জীবনে রাষ্ট্রের ভূমিকা খুবই সীমিত। সম্প্রতি সরকারের এক জরিপেও উঠে এসেছে, দেশে গত ১০ বছরে অনানুষ্ঠানিক খাতের আকার বেড়েছে, যদিও এই সময় জিডিপিও বেড়েছে কয়েক গুণ। ঠিক সেখানেই দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা সামনে চলে আসে। বিশেষ করে বড় বড় শহরের শ্রমজীবী মানুষের জীবন এই নেতাদের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। গ্রামাঞ্চলেও তার ব্যতিক্রম হয় না। উপবৃত্তি, কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির মতো বিভিন্ন কর্মসূচির আওতায় আসতে গ্রামের মানুষদের রাজনৈতিক নেতার দ্বারস্থ হতে হয়। সেই সঙ্গে জমিজমার বিবাদ, সালিশ, বিচার—এমন কোনো বিষয় নেই, যার সঙ্গে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সম্পৃক্ততা নেই।
রাজনৈতিক অর্থনীতির এই অমোঘ নিয়ম থেকে কারও নিস্তার নেই। শহরাঞ্চলে এই মানুষের বস্তিতে থাকা, বিভিন্ন ধরনের নাগরিক সেবা লাভ, এমনকি রুটিরুজির সঙ্গে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মীরা এমনভাবে জড়িত যে এই ব্যবস্থায় অন্য কারও পক্ষে প্রবেশ করা একপ্রকার অসম্ভব। যদিও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নানাভাবে সেই চেষ্টা করছে বলে প্রতীয়মান হয়।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, জুলাই-আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতনে দেশে যে পরিবর্তন এসেছে, শহরের শিক্ষিত মধ্যবিত্তের কাছে তা যতই ফ্যাসিবাদের পতন বা নতুন বন্দোবস্তের সূচনা মনে হোক না কেন, গ্রামাঞ্চলের মানুষের কাছে বিষয়টি নিছক ক্ষমতারই পটপরিবর্তন। লেখক বলছেন, ‘একটি পর্যবেক্ষণ হলো, গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা ঢাকার বাইরে নেওয়া সম্ভব হয়নি। শেখ হাসিনার সরকারের পতন ও ভারতে পালিয়ে যাওয়া স্থানীয় জনগণ গণ-অভ্যুত্থানের মুখে একটি সরকারের পতন হিসেবেই দেখছে। গণ-অভ্যুত্থানের মর্মবাণী ঢাকার ফ্রেমে আটকে আছে। এটা মর্মান্তিক ব্যাপার। “রাজনৈতিক বন্দোবস্ত” বা “নতুন বয়ান” কিংবা “অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ” বিনির্মাণের স্বপ্ন মাঠঘাটে নেই।’
লেখকের এই পর্যবেক্ষণের মধ্য দিয়ে নির্মম বাস্তবতাই উঠে আসে। এই গণ–অভ্যুত্থান যে সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক চেতনা বা প্রচারণার ভিত্তিতে হয়নি, বরং সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় সাবেক সরকারের নির্মম দমন-পীড়নের মধ্য দিয়ে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অভূতপূর্ব ঐকমত্যের ভিত্তিতে হয়েছে, এর মধ্য দিয়ে সেই বাস্তবতার প্রতিভাত হয়।
তা–ও না হয় হলো, এরপর যে বিজয়ীদের আচরণ ও কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে তার প্রতিফলন ঘটবে, সেটাই তেমন একটা হয়নি। বরং ক্ষেত্রবিশেষে বিজয়ীদের আচরণের সঙ্গে সাবেক সরকারের আচরণের বিশেষ তফাত দেখা যাচ্ছে না।
এই বিষয়ও লেখকের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, ‘বিজয়ীদের ঔদ্ধত্য বাড়ছে। উদ্ধত আচরণ জনবিচ্ছিন্নতা তৈরি করে। বিজয়ী কতটা উন্নত, তা বোঝা যায় বিজিতের প্রতি সে কেমন আচরণ করে তা দিয়ে। বিজয়ের স্বাদ বিজিতদের বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া কাজের কথা হতে পারে না। বিজয় উদ্যাপনের চেয়ে তার মর্মকে বাস্তবে রূপ দেওয়া জরুরি কাজ। ভেঙে যাওয়া সম্পর্কগুলো, সমাজের গভীর ক্ষতগুলো সারিয়ে তোলা দরকার। সুসম্পর্কের গভীর নেতিবাচক অভিঘাত নিয়ে কোনো সমাজ বেশিদূর এগোতে পারে না।’
লেখকের এই পর্যবেক্ষণের মধ্য দিয়ে এক গভীর সত্যের উদ্ভাস ঘটে। সেটা হলো, বাংলাদেশের মানুষ ক্ষমতার বাড়াবাড়ি বা ঔদ্ধত্য পছন্দ করে না। আওয়ামী লীগের পতনের অন্যতম কারণ ছিল গ্রামাঞ্চলে দলটির নেতা–কর্মীদের টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকাজনিত দুর্বিনীত ঔদ্ধত্য। সেই ঔদ্ধত্য মানুষ কখনোই ভালোভাবে নেয়নি। যখন সময়-সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, এক ধাক্কায় মানুষ সেই দলকে ফেলে দিয়েছে।
এবারই প্রথম নয়, ২০০৭ সালের এক–এগারো সৃষ্টি হওয়ার পেছনেও তৎকালীন বিএনপির নেতা–কর্মীদের চরম ঔদ্ধত্য বড় কারণ ছিল। এক–এগারো হওয়ার পর মানুষ খুশিই হয়েছিল। বড় বড় দুর্নীতিবাজ নেতা-মন্ত্রীকে গ্রেপ্তারের পর মানুষের মধ্যে উল্লাস দেখা গেছে। রাজনৈতিক যোগাযোগে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আবারও সেই বারবার বলা হওয়া সেই ক্লিশে কথাটিই বলতে হয়—ইতিহাসের শিক্ষা হলো, ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না। এই ফাঁদে আমরা সবাই কমবেশি পড়ছি।
আইয়ব খানের মৌলিক গণতন্ত্র ও সুবিধাভোগী-সুবিধাদাতার সম্পর্ক১৯৫৮ সালে ক্ষমতা দখলের পর আইয়ুব খান মনে করেন, পশ্চিমা ধাচের সংসদীয় গণতন্ত্র পাকিস্তানের জন্য অনুপযুক্ত। রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়ী করেন এবং ১৯৬০ সালে ‘মৌলিক গণতন্ত্র’ নামে নতুন ব্যবস্থা চালু করেন। এই ব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্য ছিল কর্তৃত্ববাদী শাসনের সঙ্গে কিছু গণতান্ত্রিক রীতিনীতির মিশ্রণ ঘটানো।
এ ব্যবস্থার অধীন নির্বাচিত মৌলিক গণতন্ত্রীরা কেবল স্থানীয় সরকারের কার্যক্রমই সম্পাদন করতেন না, বরং তাঁরা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নির্বাচকমণ্ডলীর ভূমিকাও পালন করতেন। ১৯৬০ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন এবং ১৯৬৫ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এই মৌলিক গণতন্ত্রীরাই আইয়ুব খানকে নির্বাচিত করেন।
বিষয়টি হলো, আমাদের মতো কমজোরি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনগণের মৌলিক অধিকারের সুরক্ষা না থাকায় প্যাট্রন-ক্লায়েন্ট বা সুবিধাদাতা-সুবিধাভোগী সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আইয়ুব খানের মৌলিক গণতন্ত্র এই প্যাট্রন-ক্লায়েন্ট সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করে।
স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা (যেমন ভূস্বামী, মাতবর) মৌলিক গণতন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে সরকারের সঙ্গে সম্পর্কিত হন। ফলে তাঁরা সরকারের কাছ থেকে বিভিন্ন সুবিধা (যেমন লাইসেন্স, ঋণ, সরকারি চাকরি) লাভ করতেন এবং বিনিময়ে সরকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন বজায় রাখতেন। দেশে সেই যে সুবিধাদাতা-সুবিধাভোগীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে, সেই কাঠামো থেকে আমরা এখনো বের হতে পারিনি। স্বাধীনতার পর মূলত আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এবং একাংশে জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামী মাধ্যমে সেই ব্যবস্থা এখনো জারি আছে। দীর্ঘদিনের চর্চা ও রীতিনীতির মধ্য দিয়ে এই ব্যবস্থার মূল অনেক গভীরে চলে গেছে।
ক্ষমতা হারানো ভীতিকরএ ব্যবস্থার অনিবার্য ফল হলো, ক্ষমতা হারানো একধরনের ভীতিকর বিষয়। লেখকের বিবরণে বিষয়টি উঠে এসেছে, ‘ক্ষমতাহীনতার তিক্ত স্বাদ এবং অসহায়ত্ব তাঁদের পেয়ে বসেছে। পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দুয়ারীবাজারের এক আওয়ামী লীগ সমর্থক জানান, অনেক মামলা তাঁর। এতে তাঁর সমস্যা নেই। সমস্যা হলো ব্যবসা শেষ হয়ে গেছে। আর অর্থনীতি শেষ হয়ে গেলে মানুষের দাঁড়ানোর জায়গা থাকে না। অর্থনীতি ও রাজনীতি কীভাবে মিলেমিশে গেছে, তার চমৎকার ব্যাখ্যা দিলেন তিনি।’
এমনকি নিজের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, ক্ষমতা হারানোর পর জীবন বাঁচাতে বিরোধী দলের কর্মীকে সরকারি দলে যোগ দিতে হয়েছে। শুধু তা–ই নয়, নিজ দলের বড় নেতার কোপানলে পড়ে দলীয় কর্মীদের বাড়িঘর হারিয়ে দেশত্যাগ করতে হয়েছে—এমন ঘটনাও দেখেছি। অর্থাৎ স্থানীয় রাজনীতি সব সময় আদর্শ বা দলীয় আনুগত্যের ভিত্তিতে হয় না, বরং স্থানীয়, গোষ্ঠী ও ব্যক্তিস্বার্থ এর মধ্যে জড়াজড়ি করে থাকে। একটি থেকে আরেকটি বিচ্ছিন্ন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। রাজনৈতিক-অর্থনীতির আলোকে বলা যায়, এ পরিস্থিতির উত্তরণে সুশাসন এবং সবার জন্য কমবেশি সম–অধিকার নিশ্চিত করার বিকল্প নেই।
এবার বিশেষ বাস্তবতা ছিল; গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সরকারের পতন হয়েছে। কিন্তু আগেও আমরা দেখেছি, সরকার পরিবর্তন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিজিত বা বিরোধী দলগুলোর ওপর নির্মম নির্যাতনের খড়গ নেমে এসেছে। গত ১৫ বছরে বিপুলসংখ্যক বিরোধীদলীয় কর্মীকে ক্রসফায়ারে হত্যা ও গুম করা হয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডের বড় একটা নজির হলো, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার ওপর চালানো মর্মান্তিক গ্রেনেড হামলা। সেই হামলায় শেখ হাসিনা বেঁচে গেলেও আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মী হতাহত হন। সবচেয়ে বড় কথা, ওই ঘটনার মধ্য দিয়ে দ্বিদলীয় ব্যবস্থার অবসান ঘটে। গত ১৫ বছরে যা ঘটেছে, তা মূলত ওই ঘটনার প্রতিক্রিয়া—এ কথা বললে নিশ্চয়ই অত্যুক্তি হবে না।
যাহোক, লেখকের পর্যবেক্ষণ কেবল একটি এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। এটি পূর্ণাঙ্গ জরিপ বা গবেষণা নয়। যদিও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বলা যায়, এ বাস্তবতা বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলের। এ বাস্তবতা স্বীকার করেই নতুন রাজনৈতিক দলকে কাজ করতে হবে।
প্রতীক বর্ধন প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ল ক গণতন ত র সরক র র পতন ব যবস থ র সরক র র প ই ব যবস থ ত ন র জন কর ম দ র ব স তবত য় জনগণ জনগণ র র জ বন হওয় র ব ষয়ট ক ষমত ব এনপ আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
মাওলানা রঈস উদ্দিন হত্যার বিচার দাবি ১০৪ নাগরিকের
মাওলানা রইজ উদ্দিন হত্যার বিচারের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ১০৪ নাগরিক। গত রোববার গাজীপুর নগরীর হায়দারাবাদ এলাকার আখলাদুল জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা রঈস উদ্দিনকে ২ মাস আগের একটি অভিযোগের ভিত্তিতে মব ভায়োলেন্সের মাধ্যমে অকথ্য নির্যাতন করা হয়। পরে কারাগারে মৃত্যু হয় তার।
বুধবার রাতে মোহাম্মদ আবু সাঈদ, রাফসান আহমেদ ও এএইচএম শাহীনের পাঠানো বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, মাওলানা রঈস উদ্দিনের এই মৃত্যুতে সরাসরি দুটি বিষয় জড়িত- মব ভায়োলেন্সে অকথ্য নির্যাতন আর পুলিশ ও কারা কর্তৃপক্ষের নির্মম আচরণ। স্বৈরাচার পতনের ৮ মাস পরও এমন মব ভায়োলেন্স, পুলিশের নির্মম ও অমানবিক আচরণ সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। কেন আমরা পুলিশি ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন চাই তার একটি দৃষ্টান্ত এই ঘটনা। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
বিবৃতি আরও বলা হয়, স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে একজন নাগরিকের এমন নির্মম মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। ন্যাক্কারজনক ঘটনায় জড়িত মব ভায়োলেন্সের উদ্যোক্তা এবং অংশগ্রহণকারী, মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা থানা পুলিশ ও কারা কর্তৃপক্ষ—প্রত্যেককে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
সুপ্রিম কোর্টের অধীনে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এই মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিতের জোর দাবি জানাচ্ছি। আমরা আশা করছি, এই মামলার তদন্ত ও বিচারের মাধ্যমে মব ভায়োলেন্স নামে রাহাজানি এবং নির্মম পুলিশী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সামিনা লুৎফা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আর রাজী, শিল্পী ও লেখক দেবাশিস চক্রবর্তী, অনুবাদক ও শিক্ষক জিএইচ হাবীব, জার্মানির কোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পুন্নি কবীর, কবি ও সংগঠক মোহাম্মদ রোমেল, চিন্তক ও শিল্পী অরূপ রাহী, অধিকারকর্মী শোয়েব আব্দুল্লাহ, লেখক ও আর্কাইভিস্ট মোহাম্মদ আবু সাঈদ, অ্যাক্টিভিস্ট তাশরিক হাসান, সাংবাদিক ইয়াসির আরাফাতসহ ১০৪ জন বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন।