আজকালকার শহুরে জীবন মানে ছোট বাড়ি, ছোট রান্নাঘর। ছোট রান্নাঘরে কাজ করতে গেলে প্রায়ই মনে হয় রান্নার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা নেই। এ সংকটে আপনি খুঁজে পেতে পারেন এক স্মার্ট সমাধান এবং সৃজনশীলতা। কিছু সহজ ও কার্যকর কৌশল আপনার ছোট রান্নাঘরকে পরিপাটি রাখতে সাহায্য করবে।
দেয়ালকে বানান স্টোরেজ স্পেস
রান্নাঘরের এক কোণে যদি স্টোরেজ বক্স বা ক্যাবিনেট বসানোর সুযোগ না থাকে, তবে দেয়াল হতে পারে আপনার সমাধান। ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ ব্যবহার করে রাখুন ছুরি, কাঁটা চামচ, স্ক্যাবার। এভাবে শুধু জায়গা বাঁচবে না, খাবার তৈরির প্রস্তুতিও হবে আরও সহজ। দেয়ালটি যদি খালি পড়ে থাকে, তাহলে কিছু হুক বা শেলফ বসিয়ে রান্নার সরঞ্জাম, প্লেট বা কাপ সাজিয়ে রাখতে পারেন। যদি আপনার রান্নাঘরের দেয়ালে কাঠ বা মেটাল সুরক্ষা থাকে, তাহলে রান্নাঘরের সজ্জার জন্য শেলফ এবং ছোট বক্সও ব্যবহার করতে পারেন। এতে পুরো কিচেনের ধারণা আরও সৃজনশীল দেখাবে।
মাল্টি-ফাংশনাল ফার্নিচার বেছে নিন
যে কোনো ছোট রান্নাঘরকে কার্যকর এবং ফাংশনাল করা যায় মাল্টি-ফাংশনাল ফার্নিচার দিয়ে। যেমন এক টেবিল যেখানে ড্রয়ার বা সিটের নিচে থাকবে ছোট্ট স্টোরেজ। এতে শুধু রান্নার সময় প্রয়োজনীয় জিনিস পেতে সুবিধা হবে না, পাশাপাশি আপনার ক্যাবিনেটের জায়গাও বাঁচবে। এ ছাড়া ফোল্ডেবল বা অর্গানাইজেবল ফার্নিচারও উপকারী। যেমন ফোল্ডিং চেয়ার বা টেবিল, যা আপনি পরবর্তী সময়ে দরকার অনুযায়ী খুলে ব্যবহার করতে পারেন।
তাছাড়া টেবিলের নিচে ক্যাবিনেট বা টোকেন স্টোরেজ রাখলে রান্নাঘরের ছোট জায়গায় আপনি আরও বেশি আয়োজন করতে পারবেন।
কনটেইনারের জাদু
পুরোনো শাড়ি, প্লাস্টিকের কনটেইনার বা অন্য ধরনের বাক্সে ব্যবহারিক কিছু জিনিস রাখা সম্ভব। ছোট রান্নাঘরে সবকিছু গুছিয়ে রাখতে বেশ খানিকটা সাহায্য করবে কনটেইনার বা বাক্সগুলো। ট্রান্সপারেন্ট কনটেইনার ব্যবহারের সুবিধা হলো, এটি দিয়ে আপনি সহজে বুঝতে পারবেন কোনো মসলা বা রান্নার উপকরণ কোথায় রাখা আছে। এ ছাড়া প্রতিরোধক ব্যাগ বা ভ্যাকুয়াম সিলিং ব্যবহার করলে খাবার দীর্ঘদিন সতেজ থাকে এবং রান্নাঘরের অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও কমে যায়।
ওপেন শেলফিং এবং ডিসপ্লে
গোছানো রান্নাঘরেও কিছুটা স্টাইল থাকা প্রয়োজন। রান্নাঘরের ওপেন শেলফে আপনার দৈনন্দিন ব্যবহারের আইটেমগুলো রাখলে শুধু তা দেখতে সুন্দরই হবে না, অল্প জায়গায় প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর যথেষ্ট অ্যাক্সেস পাবেন।
গ্লাস, প্লেট, বাটি, মসলা বা বেকিং আইটেমগুলো সজ্জিত করতে ওপেন শেলফের ব্যবস্থা খুব উপকারী। পাশাপাশি, ওপেন শেলফকে ব্যবহার করে আপনি আপনার রান্নাঘরের ব্যক্তিগত টাচও যোগ করতে পারেন।
ওয়ার্ক ট্রায়াঙ্গল বজায় রাখুন
রান্নাঘরের তিনটি মূল জায়গা কুকিং, ওয়াশিং এবং স্টোরেজ। এ তিনটি যদি একসঙ্গে ঠিকভাবে বসানো যায়, তবে রান্না করা অনেক সহজ হয়ে যাবে। এ ‘ওয়ার্ক ট্রায়াঙ্গল’ কনসেপ্ট অনুসরণ করলে রান্নার জায়গা ও ওয়াশিং অ্যান্ড স্টোরেজের জায়গায় হাঁটার সময় কম হবে এবং সময়ও বাঁচবে।
তাছাড়া যদি রান্নাঘরে স্পেস সীমিত থাকে, তবে কাউন্টারটপ স্পেস ব্যবহার করে এসব কাজের স্থল আরও কার্যকর করতে হবে।
প্রাকৃতিক আলো এবং আয়না ব্যবহার
ছোট রান্নাঘরের জন্য প্রাকৃতিক আলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জানালা দিয়ে আলো প্রবাহিত হোক, এমন ব্যবস্থা করুন। যদি জানালা না থাকে, তবে রান্নাঘরের চারপাশে হালকা রং ও রিফ্লেক্টিভ সারফেস যেমন আয়না বা শাইনিং টাইলস ব্যবহার করুন। এভাবে ছোট জায়গাটি বড় এবং উজ্জ্বল দেখাবে। ছোট রান্নাঘর আরও বেশি পরিপাটি দেখাতে আধুনিক ফ্লোরিং বা লাইটিং ব্যবহার করতে পারেন। রান্নাঘরের আয়না ব্যবহার করার মাধ্যমে জায়গাটাকে দুই গুণ বড় মনে হবে। রান্না শুধু খাবারের ব্যাপার নয়, এটি একটি অনুভূতি, একটি অভিজ্ঞতা। তাই আপনার রান্নাঘরকে যতটা সম্ভব কার্যকর, আনন্দদায়ক এবং স্টাইলিশ করে গড়ে তুলুন। v
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ছ ট র ন ন ঘর ব যবহ র কর র ন ন ঘর র ব যবহ র ক ক র যকর র করত আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেট নগরে প্যাডেলচালিত রিকশা ভাড়া ন্যূনতম ২০, সর্বোচ্চ ১০০ টাকা
সিলেট নগরে প্যাডেলচালিত রিকশার ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করে খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে মহানগর পুলিশ। তালিকা অনুযায়ী ন্যূনতম ভাড়া ২০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১০০ টাকা ধরা হয়েছে। প্রস্তাবিত নতুন ভাড়া ২০২৭ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
আজ সোমবার সকালে মহানগর পুলিশের কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরী স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সিলেট শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে যাতায়াতের জন্য নতুন করে প্রস্তাবিত রিকশা ভাড়ার হার নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভাড়ার তালিকা প্রণয়নের সময় নগরের রাজনীতিক, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, চাকরিজীবী, ছাত্র-ছাত্রী, প্যাডেল রিকশা সমিতি, সাধারণ জনগণের প্রতিনিধিদের মতামত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২০১৫ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ প্যাডেলচালিত রিকশা ভাড়ার তালিকা নির্ধারণ করেছিল। তবে ওই ভাড়া তালিকা শুরু থেকে মেনে নেননি রিকশাচালকেরা। এর ১০ বছর পর পুলিশের পক্ষ থেকে রিকশা ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে।
পুনর্নির্ধারিত প্রস্তাবিত ভাড়া তালিকায় দেখা গেছে জিন্দাবাজার মোড় (পয়েন্ট) থেকে লামাবাজার, মিরাবাজার, আম্বরখানা, ভাতালিয়া পর্যন্ত ৩০ টাকা। সুবিদবাজার, পাঠানটুলা, ঈদগাহ, শেখঘাট পর্যন্ত ৪০ টাকা। শিবগঞ্জ, ওসমানী মেডিকেল পর্যন্ত ৫০ টাকা। বালুচর, টিলাগড়, বাগবাড়ি, চৌকিদেখি, পাঠানটুলা, মদিনা মার্কেট পর্যন্ত ৬০ টাকা।
কোর্ট পয়েন্ট থেকে টিলাগড় পর্যন্ত ৬০ টাকা। শিবগঞ্জ, নতুন ব্রিজ ৪০ টাকা। মিরাবাজার ও যতরপুর ৩০ টাকা। উপশহর (এ, বি, সি, ডি, ই, এফ, জি, এইচ, আই, জে, কে ব্লক) ৫০ টাকা। নতুন ব্রিজ হয়ে দক্ষিণ সুরমা বাস টার্মিনাল ৭০ টাকা। রেলওয়ে স্টেশন, গোপশহর মকন দোকান, গোয়াবাড়ি, আখালিয়া বিজিবি ক্যাম্প গেট, ভাঙ্গাটিকর, টুলটিকর, মিরাপাড়া পর্যন্ত ৮০ টাকা। ঝেরঝেরিপাড়া, শিবগঞ্জ সোনাপাড়া, ইলেকট্রিক সাপ্লাই, উত্তর কাজীটুলা, গোয়াইটুলা, আম্বরখানা, মাহিমপুর, দর্শন দেউরী, সুবিদবাজার, ভাতালিয়া, ওসমানী মেডিকেল, কুমারপাড়া (ঝরনারপাড়) ৫০ টাকা। দর্জিবন্দ, শাহী ঈদগাহ, লেচুবাগান, হাউজিং এস্টেট, লন্ডনী রোড ও পাঠানটুলা, বাগবাড়ি, বর্ণমালা পয়েন্ট, এতিম স্কুল, নবাব রোড (শেখঘাট পিচের মুখ, কলাপাড়া ডহর), ঘাসিটুলা বেতেরবাজার, আম্বরখানা, কলবাখানী, মেন্দিবাগ, সাদাটিকর ৫০ টাকা। জল্লারপাড়, তোপখানা ২০ টাকা।
এ ছাড়া কোর্ট পয়েন্ট থেকে নতুন ব্রিজ হয়ে কদমতলী, লাউয়াই, বিসিক শিল্পনগরী, বরইকান্দি, চৌকিদেখি, লাক্কাতুরা, শাপলাবাগ ৭০ টাকা। কাজীটুলা, রাজারগলি, শাহজালাল দরগাহ গেট, মিরের ময়দান, শেখঘাট, রিকাবীবাজার, দাড়িয়াপাড়া, মির্জাজাঙ্গাল, পশ্চিম কাজিরবাজার, ছড়ারপার, কুমারপাড়া পয়েন্ট, মিরাবাজার আগপাড়া, সোবহানীঘাট, চালিবন্দর ৩০ টাকা। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস গেট ৯০ টাকা। কুমারগাঁও বাস টার্মিনাল ১০০ টাকা। খোজারখোলা, সরকারি কলেজ ছাত্রাবাস, বালুচর, বাদাম বাগিচা, মদিনা মার্কেট, কানিশাইল খেয়াঘাট, পীর মহল্লা কুশিঘাট ৬০ টাকা।
আম্বরখানা পয়েন্ট থেকে সুবিদবাজার, শাহী ঈদগাহ, কাজীটুলা ২০ টাকা। মদিনা মার্কেট, পাঠানটুলা, চৌকিদেখি ৩০ টাকা। লাক্কাতুরা, মিরাবাজার, নয়াসড়ক ৪০ টাকা। শিবগঞ্জ ৬০ টাকা। টিলাগড়, উপশহর (এবিসি পয়েন্ট), নতুন ব্রিজ ৬০ টাকা।
শিবগঞ্জ পয়েন্ট থেকে টিলাগড়, সেনপাড়া, খরাদিপাড়া ২০ টাকা। নতুন ব্রিজ, বালুচর ৩০ টাকা। ঈদগাহ ৫০ টাকা। আম্বরখানা, লামাবাজার, শেখঘাট ৬০ টাকা। পাঠানটুলা, মদিনা মার্কেট, ওসমানী মেডিকেল, হুমায়ুন রশীদ চত্বর, শেখঘাট, সুবিদবাজার ৭০ টাকা এবং কদমতলী বাস টার্মিনাল ৮০ টাকা।
দক্ষিণ সুরমা কিনব্রিজ থেকে রেলগেট ২০ টাকা। হুমায়ুন রশীদ চত্বর, টেকনিক্যাল, পর্যন্ত লাউয়াই ৩০ টাকা। শিববাড়ি ও গোটাটিকর পর্যন্ত ৪০ টাকা। বরইকান্দি ও আলমপুর পর্যন্ত ৫০ টাকা এবং মকন দোকান পর্যন্ত ৭০ টাকা।
বিজ্ঞপ্তিতে নির্ধারিত রুটের বাইরে যাতায়াতের ক্ষেত্রে প্রতি ১০০ গজের জন্য অতিরিক্ত ১০ টাকা ভাড়া প্রযোজ্য হবে। তবে নির্ধারিত রুটে উল্লিখিত নয় এমন নিকটবর্তী গন্তব্যে যাত্রীর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সর্বোচ্চ ১০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া যাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।