দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত এবং অর্থনৈতিক গতিশীলতা বজায় রাখতে গ্যাসের বৈষম্যমূলক দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। এ আহ্বান জানিয়ে গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে (বিইআরসি) চিঠি দিয়েছেন সংস্থাটির নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, এ বিষয়ে একটি পর্যালোচনা এবং প্রভাব বিশ্লেষণ কর্মশালার আয়োজন করা যেতে পারে। 

চিঠিতে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান উল্লেখ করেন, গত ১৩ এপ্রিল বিইআরসি গ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণ করে। এর ফলে নতুন বিনিয়োগকারীদের গ্যাসের জন্য বিদ্যমানদের চেয়ে ৩৩ শতাংশ বেশি দাম পরিশোধ করতে হবে। এই বৈষম্য বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করবে এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজারব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। 

আশিক চৌধুরী চিঠিতে জানান, সম্প্রতি বিডা আয়োজিত বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনে ৪০টি দেশ থেকে প্রায় ৪৫০ জন বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী অংশ নিয়েছেন। বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধা দেখে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছেন। সম্মেলনে বেশ কয়েকজন বিনিয়োগকারী সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং চুক্তি করে বাংলাদেশে বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সম্মেলনের ঠিক পরপরই বিইআরসির বৈষম্যমূলক গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণায় বিনিয়োগে আগ্রহীদের মধ্যে নিঃসন্দেহে একটি নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হবে। 

চিঠিতে আরও বলা হয়, বিনিয়োগকারীরা ইতোমধ্যে এ সিদ্ধান্তকে অন্যায্য বলে মনে করছেন এবং এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। বিডা মনে করে, এ সিদ্ধান্তে দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে। বিডা সরকারের ভর্তুকি কমানোর বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করছে না। ভর্তুকি কমানোর বিষয়টি সর্বজনীন করা যেতে পারে।
মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১৩% হবে : বিল্ডের বিশ্লেষণ বেসরকারি খাতের থিঙ্কট্যাঙ্ক বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড) বলেছে, শিল্পকারখানায় গ্যাসের সাম্প্রতিক দাম বাড়ানোর প্রভাবে উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়বে। এতে করে মূল্যস্ফীতি বেড়ে প্রায় ১৩ শতাংশে পৌঁছাবে। অন্যদিকে সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ সম্মেলন বিনিয়োগকারীদের মাঝে যেখানে  কিছুটা আশার আলো তৈরি করেছিল, সেখানে গ্যাসের বর্ধিত মূল্য নতুন বিদেশি  বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করবে।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন গত ১৩ এপ্রিল এক আদেশে নতুন শিল্পে এবং ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্টগুলোর জন্য গ্যাসের দাম ৩৩ শতাংশ বাড়ায়। এর আগে ২০২৩ সালে শিল্প ও বিদ্যুৎ খাতে গ্যাসের মূল্য ১৭৯ শতাংশ বাড়ানো হয়। এবারের মূল্যবৃদ্ধি ব্যবসায়ীদের জন্য অতিরিক্ত বোঝা হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছে বিল্ড। বিল্ডের মতে, শিল্পে মোট উৎপাদন ব্যয়ের ১০% জ্বালানির জন্য বিবেচনা করলে এবং মূল্য সংযোজনের হার ২৬ শতাংশ ধরে দেশে উৎপাদিত শিল্পপণ্যের দাম ১৩ শতাংশ বাড়বে।

বিল্ড এক বিবৃতিতে বলেছে, গ্যাসের  মূল্যবৃদ্ধি সিদ্ধান্ত এমন সময়ে এসেছে যখন বিশ্বাজারে কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি চলছে। সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫ বিনিয়োগকারীদের মাঝে কিছুটা আশার আলো তৈরি করেছে, নতুন বৈদেশিক বিনিয়োগের অপেক্ষায় থাকা শিল্প খাত এই মূল্যবৃদ্ধির কারণে অনেকটাই নিরুৎসাহিত হবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

রামেক হাসপাতালে ইআরসিপি স্যুট, জটিল রোগের চিকিৎসা মিলবে সহজেই

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে এন্ডোস্কোপিক রেট্রোগ্রেড কোলাঞ্জিও প্যানক্রিয়াটিকোগ্রাফি (ইআরসিপি) স্যুট চালু করা হয়েছে। ফলে, এখানে সহজেই অনেক জটিল রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব হবে। 

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকালে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ ইআরসিপি স্যুট উদ্বোধন করেন।

ইআরসিপি স্যুট একটি অত্যাধুনিক ও বিশেষায়িত ইউনিট, যেখানে গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট, হেপাটোলজিস্ট, হেপাটোবাইলিয়ারি সার্জন ও গ্যাস্ট্রোএন্টারোসার্জনরা চিকিৎসা কার্যক্রম চালাবেন। খাদ্যনালী, পিত্তথলি ও অগ্ন্যাশয়ের জটিল রোগের ক্ষেত্রে পেট না কেটে এখন থেকে শুধু এন্ডোস্কোপি প্রযুক্তির মাধ্যমে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা করা যাবে।হাস

পাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ জানিয়েছেন, এতদিন এই বিশেষায়িত ইউনিটটি অসম্পূর্ণ অবস্থায় ছিল। সম্প্রতি এক ভার্চুয়াল সভায় তিনি স্বাস্থ্য উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এর পর দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি চলে আসে।

তিনি বলেন, “খাদ্যনালী চিকন হয়ে যাওয়া এবং পিত্তথলি ও অগ্ন্যাশয়ের পাথরের চিকিৎসাগুলো এখন থেকে সহজেই করা যাবে। বেসরকারি হাসপাতালে এসব চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। আমরা চেষ্টা করব, এ সেবা যেন সাধারণ মানুষ স্বল্প খরচে পেতে পারেন।”

উদ্বোধনের দিনেই এক রোগীকে সফলভাবে চিকিৎসাসেবা দিয়ে সুস্থ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন রামেক হাসপাতালের পরিচালক।

ঢাকা/কেয়া/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রামেক হাসপাতালে ইআরসিপি স্যুট, জটিল রোগের চিকিৎসা মিলবে সহজেই