চীনের অর্থায়নে এক হাজার শয্যার প্রস্তাবিত মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালটি পঞ্চগড়ে স্থাপনের দাবিতে গণজমায়েত ও মানববন্ধন হয়েছে। বুধবার দুপুরে ‘পঞ্চগড়বাসী’র ব্যানারে জেলা শহরের জজকোর্ট এলাকায় এ কর্মসূচি পালিত হয়। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়ক ঘুরে শেরেবাংলা মোড়ে শেষ হয়।
জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি জুলফিকার রহমানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে কেন্দ্রীয় বিএনপির পল্লি উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ, জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির ইকবাল হোসাইন, জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলাম, জেলা জাগপার সহসভাপতি নয়ন মাস্টার, জাসদের যুগ্ম সম্পাদক শেখ সাজ্জাদ হোসেন, সম্মিলিত স্বেচ্ছাসেবী ফোরামের আহ্বায়ক হাসান হাবিব, ইসলামী আন্দোলনের জেলা সভাপতি আব্দুল হাই, খেলাফত মজলিসের জেলা সভাপতি মীর মোর্শেদ তুহিন, গণধিকার পরিষদের সভাপতি মাহফুজুর রহমান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বক্তারা বলেন, পাশের জেলা দিনাজপুর, রংপুর ও নীলফামারীতে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল রয়েছে। দূরত্ব বেশির কারণে পঞ্চগড় থেকে একজন গুরুতর অসুস্থ রোগী রংপুর বা দিনাজপুরে নেওয়ার পথেই মারা যান। এ কারণে এ জেলায় একটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল দ্রুত প্রয়োজন। এছাড়া চীনের অর্থায়নে এক হাজার শয্যার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল করার জন্য সরকারিভাবে উত্তরাঞ্চলে জমি খোঁজা হচ্ছে। আমরা মনে করি, পঞ্চগড়ের মানুষ এ মেডিকেল কলেজের সঠিক দাবিদার। এখানে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল হলে ভুটান, নেপাল ও চীনের শিক্ষার্থীরাও পড়াশোনা করতে আসবে। চিকিৎসাসেবা নিতে আসবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চামড়াশিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে
কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে পতিত ফ্যাসিস্ট আমলের পুরোনো চক্র ও সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলন। এই সিন্ডিকেট ও চামড়াশিল্প ধ্বংসের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংগঠনটি আয়োজিত ‘চামড়া শিল্পের নৈরাজ্য ও সিন্ডিকেট রুখো’ শীর্ষক মানববন্ধনে এসব কথা বলা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক মির্জা শরিফুল আলম। সভায় বক্তব্য দেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান, কলামিস্ট মীর আবদুল আলীম, রাজনীতিবিদ নুরুজ্জামান হীরা, মানবাধিকারকর্মী আব্দুল্লাহ আল-মামুন প্রমুখ।
কয়েক বছর ধরে কাঁচাচামড়ার দাম কমছে। দাম না পেয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া নদী বা খালে ফেলে দিয়েছেন কিংবা মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন– এমন ঘটনাও ঘটছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। চলতি বছর ৮৫ থেকে ৯০ লাখ পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ট্যানারি মালিকদের। এর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ সংগ্রহ হয় কোরবানির সময়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান বলেন, এবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। কিছু ক্ষেত্রে বর্গফুটের হিসাবে চামড়ার দাম আরও কম পড়েছে। কোরবানিদাতাদের থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকায় গরুর চামড়া কিনেছেন। সেসব চামড়া আড়তদার ও ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেছেন ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে চামড়া সংগ্রহ করলেও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। সিন্ডিকেটের কারণে চামড়ার দাম পড়ে গেছে তলানিতে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও বেশির ভাগ ছাগলের চামড়া নষ্ট হয়েছে। বিদেশি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। দেশে ও বিশ্ববাজারে চামড়াজাত পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। অথচ কোরবানির চামড়া শিল্প নিয়ে গভীর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চলছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, বিদেশি চক্রান্তে দেশের সোনালি আঁশখ্যাত পাট শিল্পকে সুকৌশলে ধ্বংস করা হয়েছে। এবার আরেক সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্পকে শেষ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। গত বছরের মতো এবারও কম দামে সব ধরনের চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে। এতে করে গরিব-অসহায় মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।