আইন ভেঙে বেড়া নির্মাণচেষ্টা, বাধায় পিছু হটল বিএসএফ
Published: 17th, April 2025 GMT
বিএসএফের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সীমানা আইন লঙ্ঘন করে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। তবে বিজিবির বাধায় কাজ বন্ধ করে পিছু হটে বিএসএফ।
গতকাল বুধবার দুপুরে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর সীমান্তে এই ঘটনা ঘটে। ভবানীপুর বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা দেশের মাটি রক্ষায় এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন নেত্রকোনা-৩১ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এএসএম কামরুজ্জামান (পিবিজিএম)।
জানা গেছে, বুধবার দুপুরে সীমান্তবর্তী ১১৫৬ নম্বর পিলারের কাছে সীমানা আইন লঙ্ঘন করে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের জন্য কাজ শুরু করেন বিএসএফ সদস্যরা। খবর পেয়ে বিজিবি সদস্যরা ওই স্থানে অবস্থান নিয়ে তাদের নিষেধ করেন। বিএসএফ ফের নিষেধ উপেক্ষা করে বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করলে বিজিবির সঙ্গে এলাকাবাসীও যোগ দিয়ে প্রতিবাদ জানান। প্রতিবাদের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হন বিএসএফ সদস্যরা।
স্থানীয় কৃষক তোতা মিয়া বলেন, ‘এই পরিস্থিতির জন্য সীমান্তবর্তী রাস্তা ও ব্রিজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান কিছুটা দায়ী। প্রায় এক বছর ধরে রাস্তা নির্মাণকাজ নিয়ে গড়িমসি করছেন ঠিকাদার। আমাদের দেশের রাস্তায় ও ব্রিজের কাজ চলমান থাকায় ভারতের একটু রাস্তা ব্যবস্থার করতে হয় আমাদের। ওই চলাচল দেখে বিএসএফ প্রায় সময়ই গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে আসে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজিবি সদস্য জানান, বর্তমানে রাস্তার নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। বুধবার সকালে হঠাৎ বিএসএফের একটি দল ওই সীমান্ত এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের জন্য আসে। আইন অনুযায়ী দুই দেশের সীমান্ত পিলার থেকে দেড়শ গজের মধ্যে ফসল চাষ ছাড়া স্থায়ী কোনো স্থাপনা কিংবা বেড়া দেওয়ার নিয়ম নেই। কিন্তু বিএসএফ সদস্যরা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে বেড়া নির্মাণ করতে আসে। জানতে পেরে বাধা দেওয়া হয়। বাধার মুখে কাজ না করেই ফিরে যান বিএসএফ সদস্যরা।
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাভিদ রেজওয়ানুল কবীর বলেন, বাংলাদেশ সীমান্তে রাস্তা নির্মাণ না হলে সহজে সমস্যার সমাধান হবে না। ওই এলাকায় রাস্তা ও ব্রিজ নির্মাণকাজে নদী থেকে বালু ব্যবহার নিয়ে একটু জটিলতা রয়েছে। সামনে বর্ষা মৌসুম, ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলে বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে মানুষের চলাচলের বিকল্প রাস্তা নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নেত্রকোনা-৩১ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এএসএম কামরুজ্জামানের ভাষ্য, বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিক বিজিবির সদস্যদের প্রতিবাদের ফলে বেড়া স্থাপনের কাজ বন্ধ করেছে বিএসএফ। বাংলাদেশ সীমান্তে রাস্তা ও ব্রিজ নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় এখানকার মানুষ ভারত সীমান্ত দিয়ে চলাচল করে। দ্রুত রাস্তা নির্মাণকাজ শেষ না করা হলে এই সমস্যা থেকেই যাবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নওগাঁয় ১০ জনকে ঠেলে দিল বিএসএফ
নওগাঁর ধামইরহাট সীমান্ত দিয়ে ১০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ভোরে ধামইরহাট উপজেলার আগ্রাদ্বিগুন সীমান্ত পিলার ২৫৬/৭ এস কাছ দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হলে বিজিবির সদস্যরা তাদেরকে আটক করেন। তাদের মধ্যে দুজন পুরুষ এবং আটজন নারী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এসব তথ্য জানিয়েছেন পত্নীতলা ১৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন।
আরো পড়ুন:
গাংনী সীমান্ত দিয়ে ১৮ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ
বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে ১০ রোহিঙ্গাকে ঠেলে দিয়েছে বিএসএফ
আটকরা হলেন—আছমা বেগম (৪০), খাদিজা বেগম (৩৪), পাখি বেগম (২৪), রুমা বেগম (২৫), কাকলি আক্তার (২৭), রুজিনা আক্তার (৩৩), কোহিনুর বেগম (২৬), নাসরিন বেগম (৩৩), মঞ্জুরুল ইসলাম (৩৬), সুমন হোসেন (২৭)। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তারা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের নাগরিক।
বিজিবি জানিয়েছে, আগ্রাদ্বিগুন বিওপির টহল কমান্ডার জেসিও সুবেদার মো. জিহাদ আলীর নেতৃত্বে একটি টহল দল সীমান্তের শূন্য লাইন থেকে আনুমানিক এক কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মহেষপুরে ওই ১০ জনকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে আটক করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে ভারতে যান। মুম্বাই শহরে পুরুষ দুজন রাজমিস্ত্রি হিসেবে এবং নারী আটজন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। সেখানে তাদেরকে আটক করে ভারতীয় পুলিশ। গত ২৯ জুলাই ভারতের হরিবংশীপুর বিএসএফ ক্যাম্পে তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে বিএসএফ ওই ১০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিলে বিজিবি টহল দল তাদের আটক করে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা/সাজু/রফিক