ওয়াকফ আইন নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় বাংলাদেশকে জড়ানোর চেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাতে নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানান তিনি। একই সঙ্গে ভারতে মুসলমানদের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান রাখেন তিনি। 

ফেসবুক পোস্টে শফিকুল আলম লিখেছেন, “মুর্শিদাবাদের সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় বাংলাদেশকে জড়ানোর যেকোন প্রচেষ্টাকে আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি।” 

আরো পড়ুন:

ওয়াকফ নিয়ে সহিংসতা
বিজেপিকে ধুয়ে দিলেন মমতা, তুললেন ইউনূস-মোদি বৈঠকের কথাও

ওয়াকফ আইন: বিক্ষোভে উত্তাল মুর্শিদাবাদ, নিহত ৩

“আমরা মুসলমানদের ওপর হামলার নিন্দা জানাই এবং তাদের প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির তীব্র নিন্দা জানাই।”

প্রেস সচিব লিখেছেন, “আমরা ভারত ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সংখ্যালঘু মুসলমান জনসংখ্যার পূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সব পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”

ভারতে ওয়াক্ফ (সংশোধিত) আইন নিয়ে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দেয়; যা বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতা ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় রূপ নে। কারণ, এর পক্ষে-বিপক্ষে শক্তিশালী রাজনৈতিক সমর্থন রয়েছে; সেই সঙ্গে রয়েছে ভারতে মুসলমানদের অধিকার নিয়ে উদ্বেগের বিষয়।  

ওয়াকফ নিয়ে ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংঘাত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে; যেখানে কয়েকজন হতাহত হয়েছেন; গ্রেপ্তার হয়েছেন ১১৮ জন। 

কয়েকদিন ধরে মুর্শিদাবাদে ব্যাপক সহিংসতার মধ্যে বুধবার এই বিষয়ে কথা বলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সহিংসতকে পরিকল্পিত বর্ণনা করে এর পুরো দায় বিজেপির কাঁধে দেন তিনি। 

মমতা তার বক্তব্যে হঠাৎ বাংলাদেশ ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রসঙ্গ টেনে আনেন।

নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে শীতল সম্পর্কের বরফ না গলতেই অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে মোদির থাইল্যান্ডের বৈঠককে ‘গোপনীয় বৈঠক’ আখ্যা দেন মমতা।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে ইমাম-মুয়াজ্জিন-বুদ্ধিজীবীদের সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, “প্ল্যান করে এই অশান্তি পাকানো হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে লোক ঢুকতে দিয়েছে বিএসএফ। বাইরে থেকে লোক এনেছে বিজেপি। তারাই অশান্তির আগুন জ্বেলেছে।”

তিনি বলেন, “প্লেন চলছে, প্লেনে কারা আসছে, কীভাবে আসছে.

.. আগে এয়ারপোর্টে আমাদের পুলিশ থাকত, আমরা রিপোর্ট পেতাম। এখন সেটা উঠিয়ে দিয়েছে। তাই কোনো রিপোর্ট পাই না।”

‘পর্দার আড়ালে খেলা চলছে’ বলে অভিযোগ করে মমতা বলেন, “আপনারা কি মনে করেন যে, লুকিয়ে লুকিয়ে খেলা খেলবেন? পর্দার পিছনে কী আছে, আমরা সব বুঝতে পারি।”

এরপরেই বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক নিয়ে খোঁচা দেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ইউসূসের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী গোপন বৈঠক করতেই পারেন। দেশের ভালো হলে ভালো। কিন্তু আপনাদের উদ্দেশ্যটা কী? অন্য দেশ থেকে লোক নিয়ে এসে দাঙ্গা করা? আপনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি জানেন না?”

তিনি বলেন, “বাংলার প্রতিবেশী দেশ হল বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান এবং শ্রীলঙ্কা। গতকাল আমি এএনআই-এর একটি টুইট দেখেছি যেখানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে যে, দাঙ্গার ঘটনা বাংলাদেশের সঙ্গে জড়িত। যদি এটি সত্যি হয়, তাহলে এর জন্য কেন্দ্রীয় সরকার দায়ী। সীমান্তের দেখাশোনা করে বিএসএফ, রাজ্য সরকার নয়।” 

“কেন বিজেপির লোকদের বাইরে থেকে এসে গোলমাল করতে দেওয়া হলো, তাদের পালিয়ে যেতে দেওয়া হলো,” যোগ করেন মমতা। 

এমনকি সহিংসতার মধ্যে বিএসএফ বাচ্চাদের দিয়ে পাথর ছুড়িয়েছে বলেও অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। 

তিনি বলেন “আমি খুঁজে বের করব, সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ কাকে কাকে হাত করেছে। কিছু বাচ্চা ছেলেকে ৫-৬ হাজার রুপির বিনিময়ে পাথর ছুড়িয়েছে। এটা ভালো করে তদন্ত করব, আমাদের তদন্ত চলছে।”

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর নাম উচ্চারণ না করে তার উদ্দেশে মমতা বলেন, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কালীদাসের মতো হয়ে গেছে। যে ডালে বসে আছে, সেই ডাল কাটছে। আপনার এত তাড়া কীসের? আপনি তো প্রাইম মিনিস্টার কখনো হবেন না। মোদি চলে গেলে কী হবে? আপনাকে তো হামাগুঁড়ি দিতে হবে। মোদিজিকে বলব, ওনাকে একটু কন্ট্রোল করতে। সমস্ত এজেন্সিকে দিয়ে দিয়েছেন ওনার হাতে। মুর্শিদাবাদে যা ঘটেছে, তা পুরোটাই পরিকল্পিত।”

ক্ষোভ উগরে বক্তব্য দেওয়ার সময় মমতা বলেন, বাংলার প্রতিবেশী দেশ হলো বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কা। 

এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন মমতা। মূলত শুধু বাংলাদেশ ছাড়া বাকি দেশগুলো ভারতের প্রতিবেশী; পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নয়।

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম খ যমন ত র ম সলম ন ব এসএফ ন মমত ইউন স সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনে কর্মকর্তা নিয়োগ, বেতন ৫১,০০০ টাকা

পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ৩টি পদে জনবল নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। স্থায়ী ভিত্তিতে এসব পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। আবেদনের শেষ সময় ১৫ নভেম্বর ২০২৫।

পদের নাম ও বিবরণ

১. সহকারী ব্যবস্থাপক (সিস্টেম)
পদসংখ্যা: ০১
২. সহকারী ব্যবস্থাপক (সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড নেটওয়ার্ক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন)
পদসংখ্যা: ০১

৩. সহকারী ব্যবস্থাপক (জিআইএস অ্যান্ড রিমোট সেন্সিং)
পদসংখ্যা: ০১
বেতন-ভাতা (সব পদের জন্য): ৫১,০০০ টাকা।
বয়সসীমা (সব পদের জন্য): সর্বোচ্চ ৩২ বছর।

আরও পড়ুন‘দই মই’ অর্থনীতি–‘ক্লাউড সিডিং’–পিএস মাহসুদ ও বুরেভেসতনিক কী৩০ অক্টোবর ২০২৫

আবেদনের শেষ সময়

১৫ নভেম্বর ২০২৫

আগ্রহী প্রার্থীগণকে উল্লিখিত পদগুলোর Terms of Reference (ToR) দেখার জন্য পিকেএসএফ ওয়েবসাইট ভিজিট করার অনুরোধ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন৪৮তম বিশেষ বিসিএসে আর পদ বাড়ানোর সুযোগ নেই৩০ অক্টোবর ২০২৫আরও পড়ুন১০ ব্যাংক ও ১ আর্থিক প্রতিষ্ঠান নেবে ১৮৮০ অফিসার, ফি ২০০৩০ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিলেট সীমান্তে বাংলাদেশে ঢুকে খুঁটি উপড়ে ফেলে বিএসএফ, স্থানীয়দের প্রতিবাদ
  • পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনে কর্মকর্তা নিয়োগ, বেতন ৫১,০০০ টাকা