Samakal:
2025-11-03@19:38:52 GMT

ছড়া কবিতা

Published: 18th, April 2025 GMT

ছড়া কবিতা

ফা রু ক  ন ও য়া জ 
বৃথাই খুঁজে ফেরা

চাঁদের বাটি উথলে পড়া আলোয় আমি 
জোছনারাতের চাঁদদিঘিটা খুঁজি
বুঝি আমি, ভালো করেই বুঝি
সেই দিঘিটা পাবো না আর যতোই খুঁজি তারে 
আলোর দিঘি হারিয়ে গেছে কালের অন্ধকারে।

জলথইথই ঢেউয়ের দোলা ছোট্টো নদী 
সাঁঝ-অবধি মন নাচাতো আমার
পাড়ের ওপর শস্যঝাড়া খামার
খামারঘেঁষা মৈঠালি পথ খুঁজে বেড়াই আমি
বৃথাই খোঁজা; খোঁজার নেশা মিছে এ পাগলামি! 

ক্যাঁচক্যাঁচানো গরুর গাড়ি মাটির পথে 
হাটের দিনে কড়কড়ানো দুপুর
মাঝ-আকাশে সূর্য তখন উপুড় 
পথের পাশে বটের ঝুড়ি দুলদুলুনি খেলা 
হারানো সেই গাঁয়ের ছবি খুঁজতে ফুরোয় বেলা।

হাঁটতে হাঁটতে থমকে যাওয়া দখিনবনের
ঘুঘুর ঘু-ঘু মনউচাটন ডাকে 
পরান কেমন উদাস হয়ে থাকে
হন্যে হয়ে সেই উদাসী দিনকে খুঁজি শুধু
বৃথাই খোঁজা; নিরাশ হয়ে মনটা করে ধু-ধু!   

 

অ ঞ্জ ন  মে হে দী  
বাবার ছবি

আকাশ পানে তাকিয়ে থাকি দূরের ছায়াপথে
দু’হাত তুলে ডাকি যখন বাবা তোমার নামে
দিদুন বলে বাবা নাকি দূরের কোনো তারা
সত্যি কি তাই? চিঠি পাঠাই জানতে সবুজ খামে! 

জোনাক জ্বলা রাতের বেলা যখন গোটা পাড়া- 
ঘুমিয়ে থাকে চুপটি করে পুতুল মণির মত
মায়ের চোখে সাগর-নদী-ঝর্ণা জলের ধারা
জায়নামাজের উদার জমিন ভিজছে অবিরত।

ছোট্টবেলায় হোঁচট খেলে কিংবা জ্বরের ঘোরে
যখন আমি ঘুমের দেশে ভীষণ কেঁপে উঠি
সেই দিনরাত মায়ের মতো আমার কপাল ভূমি
স্নেহমাখা তোমার আঙুল করতো লুটোপুটি!

তোমার কাছে প্রথম শিখি বর্ণমালা পড়া
চাঁদের দেশে চাঁদের বুড়ির গল্পটা ফিসফিস  
তোমার নামে রাত পোহালে আবার রূপোর ভোরে
সজনে ডালে দোয়েল পাখি আজও বাজায় শিস।

কোন দুয়ারে তোমায় ডাকি, কোন পথে যে খুঁজি?
বাবা ছাড়া বিশ্বভূবন সত্যি লাগে ফাঁকা
রইলো পড়ে তোমার সকল চশমা হাতের ঘড়ি
বুকের ভাঁজে সোনা রঙে তোমার ছবি আঁকা।

 

আ খ তা রু ল  ই স লা ম  
বিশাল আকাশ

আমাদের আছে বিশাল আকাশ আকাশের বুকে তারা 
তারারা আমার খুব প্রিয় তাই, হই আমি দিশেহারা।
আকাশের গায়ে নীলের চাদরে মেঘদের ছবি আঁকা
মেঘ মেদুরের ছবিগুলো কত রঙবেরঙের মাখা।

মেঘেরা আমার কবিতার কথা পৃথিবীটা যেন ঘুরে
সীমানা পেরিয়ে ছুটে চলে ওই হাওয়ার রোদ্দুরে।
আকাশটা কত ছায়া মায়া দেয়, দেয় ভালোবাসা সুখ
গ্রহ নক্ষত্র হাতছানি দেয় হই আমি উন্মুখ।

সাদা কালো কত স্বপ্নেরা ডাকে, ডাকে যে পাহাড় নদী
সময়ের স্রোতে ঘুরে ফিরে আসে হারায় নিরবধি।
মেঘে মেঘে আমি খুঁজি যেন ওই আকাশের বিশালতা
মনটা তখন মন থাকে না রে পাই কত স্বাধীনতা।

কখনো কখনো কালো মেঘে ছেয়ে নীরবে আকাশ কাঁদে
নীল কষ্টের বৃষ্টির জলে মাটিতে মিতালি বাঁধে।  
ঝলমলে রূপ সোনালি আকাশে মেঘরোদ্দুরে খেলা
আমাকে শেখায় দুখেতে হাসতে ঝরঝরে সারাবেলা।

আমার আকাশ পৃথিবী জুড়েই দিচ্ছে বিশাল ছাতা
ছাতার ভেতরে আমরা মানুষ রেখেছি সবার মাথা!
 

 

মা লে ক  মা হ মু দ 
আমের ছড়া 

রাত হলো নিঝুম 
চোখ জুড়ে আয় ঘুম
ঝড় নেই নেই ঝড়
গাছে আম পাকছে
পাখিরাও আম খেতে
একে ওকে ডাকছে
ধুপ ধুপ পড়ে আম
যেই কানে শুনছি
তাড়াতাড়ি ভোর হও
প্রহর তো গুনছি!


দুই.

আয় ঝড় আয় রে
মন ছুটে যায় রে
জোরে তুলি হাই রে
আম খেতে চাই রে
গাছতলা দাঁড়িয়ে
ভাবনাটা নাড়িয়ে 
আছি হাত বাড়িয়ে 
তাড়াতাড়ি আয় ঝড় 
আম পড় আম পড়!

 

প্র জী ৎ  ঘো ষ 
গাজার শিশু

আমরা যারা গাজার শিশু
কাঁদি অনাহারে;
বিশ্ব বিবেক আবেগ দিয়ে 
সইতে কি তা পারে?

আমরা যারা গাজার শিশু
উঠছি ভয়ে কেঁপে;
বিশ্ব বিবেক কম্পিত কি 
সেই তরঙ্গ মেপে?

আমরা যারা গাজার শিশু
হচ্ছি গুলিবিদ্ধ;
এই ঘটনায় কারো হৃদয়
হচ্ছে না কি ঋদ্ধ?

আমরা যারা গাজার শিশু
এতিম অভাজন;
কে দেখাবে পথ আমাদের 
কে বা ইশান কোণ? 

আমরা যারা গাজার শিশু
চিকিৎসাহীন প্রাণ;
কে শোনাবে মানবতার
সুস্থ করার গান?

আমরা যারা গাজার শিশু
বোমার সাথে খেলি;
চিনি না কি জুঁই চামেলী
চিনি না রোজ, বেলী।

আমরা যারা গাজার শিশু
নিরুপায় নির্বাক;
বিশ্ব বিবেক জাগ্রত হোক 
এ খেলা মুক্তিপাক।

কোন্ কারণে এই বলিদান 
কোন্ কারণে ধ্বংস;
কোন্ কারণে হৃদয় কাঁদে 
যায় উড়ে বুনো হংস।

আমরা যারা গাজার শিশু
হে খোদা! দয়াময়;
আমাদের তুমি রক্ষা করো
তোমারই হবে জয়।

আমরা যারা গাজার শিশু
অবুঝ কচি প্রাণ;
মাতৃভূমির তরে জীবন 
যাচ্ছি করে দান।

আমরা যারা গাজার শিশু
আর যতক্ষণ বাঁচি;
এই চিৎকার, এই হাহাকার
পৌঁছাক কাছাকাছি।
 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

নিউইয়র্ক ছাড়িয়ে জাতীয় মুখ মামদানি

ডেমোক্র্যাট ভোটার লিয়া অ্যাশ বহু বছর ধরে কোনো রাজনীতিককে নিয়ে আশাবাদী অনুভব করেননি। তবে সম্প্রতি সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এ বছর আমার জন্য তিনিই একমাত্র আলোর দিশা। তিনি সত্যিই মানুষের কথা শুনতে চান—যাঁদের তিনি মেয়র হতে যাচ্ছেন।’

২৬ বছর বয়সী অ্যাশ যে ব্যক্তির কথা বলছেন, তিনি হলেন জোহরান মামদানি, যিনি নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী।

মামদানি তাঁর নির্বাচনী প্রচারে জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর বিষয়টি প্রাধান্য দিচ্ছেন। এ কারণেই অ্যাশ নিঃসংকোচে মামদানিকে ভোট দিতে চান। তবে তিনি মামদানিকে ভোট দিতে পারছেন না। কারণ, তিনি থাকেন নিউইয়র্ক থেকে প্রায় ১ হাজার ২০০ মাইল দূরে, মিসিসিপির গালফপোর্ট শহরে।

অ্যাশ বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করতে চাই, কোনো একদিন গালফপোর্ট, মিসিসিপিতেও এক জোহরান মামদানি আসবেন।’

জাতীয় পর্যায়ে আলোচিত মুখ

মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই ৩৪ বছর বয়সী ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট মামদানি এক প্রান্তিক প্রার্থী থেকে জাতীয় পর্যায়ের আলোচিত মুখে পরিণত হয়েছেন। গত জুন মাসের দলীয় নির্বাচনে তিনি অপ্রত্যাশিতভাবে বিজয়ী হন। ওই নির্বাচনে ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের ভোটার উপস্থিতি ছিল সবচেয়ে বেশি।

আগামীকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে মেয়র নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর আগের সব জরিপেই দেখা গেছে, নিউইয়র্ক শহরের সাবেক মেয়র অ্যান্ড্রু কুমোর চেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মামদানি এগিয়ে রয়েছেন। মামদানি আশা করছেন, আগেরবারের মতো এবারও তরুণ ভোটাররা তাঁর পাশে থাকবেন। তবে শুধু নিউইয়র্কের মধ্যেই নয়, জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় মোকাবিলার তাঁর অঙ্গীকার পুরো দেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যেও সাড়া ফেলেছে। অনেক জেন–জি ও মিলেনিয়ালস প্রজন্মের মানুষ বলছেন, তাঁদের সবচেয়ে বড় উদ্বেগের জায়গায় হাত রেখেছেন মামদানি। তরুণ প্রজন্ম যখন রাজনীতিকদের প্রতি আশা হারিয়ে ফেলেছেন এবং প্রচলিত নিয়ম ভেঙে নতুন কণ্ঠস্বরের অপেক্ষায় আছেন, তখনই মামদানির উত্থান।
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সার্কেলে তরুণ ভোটারদের নিয়ে গবেষণা করেন রুবি বেল বুথ। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো প্রার্থী জনগণের উদ্বেগ নিয়ে কথা বলেন এবং সেই উদ্বেগকে স্বীকৃতি দেন, তখন সেটি বিশাল প্রভাব ফেলে, বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের ক্ষেত্রে।’

রুবি বেল বুথ আরও বলেন, ‘তরুণেরা যখন সত্যিই অনুভব করেন যে তাঁদের কথা শোনা হচ্ছে, তাঁদের প্রতি সম্মান দেখানো হচ্ছে, তখন যেকোনো প্রার্থী সফল হতে পারেন। তবে এখন সেটি করছেন মামদানি। আর এর আগে হয়তো সেটা করেছিলেন ট্রাম্প।’

রক্ষণশীলদের মধ্যেও জনপ্রিয়

রক্ষণশীল রাজ্য মিসিসিপিতে বসবাস করলেও লিয়া অ্যাশ সব সময়ই ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের ভোট দিয়ে আসছেন। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি রাজনৈতিক নেতাদের ওপর হতাশ ও উপেক্ষিত বোধ করছেন। এই অনুভূতি আরও তীব্র হয়েছে তাঁর অর্থনৈতিক বাস্তবতা থেকে। অন্যদিকে অ্যান্ড্রু টেইট ভার্জিনিয়ার এক গ্রামীণ এলাকায় একটি ছোট খামারে তাঁর সঙ্গী ও সন্তানদের নিয়ে থাকেন এবং স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করেন। তিনিও মূল্যস্ফীতি ও পরিবারের আর্থিক ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন।
অ্যাশ বলেন, ‘দেশের অন্যতম দরিদ্র রাজ্য হয়েও মিসিসিপিতে বাড়ির দাম বেড়েই চলেছে। এটা সত্যিই মন খারাপ করে দেয়।’ তবু অ্যাশ আশা করছেন, যদি মামদানি নির্বাচনে জয়ী হন, তাহলে সেটি দেশের অন্যান্য শহরের ডেমোক্র্যাট নেতাদের জন্য একটি বার্তা হয়ে যাবে।

জোহরান মামদানি তাঁর নির্বাচনী প্রচারণায় একাধিক অঙ্গীকার করেছেন, বিশেষ করে বাসস্থান নিয়ে। তাঁর লক্ষ্য শহরের খরচ কমানো। তবে সমালোচকেরা বলছেন, এসব পরিকল্পনা বাস্তবসম্মত নয়। আর রক্ষণশীলদের, বিশেষ করে ট্রাম্পের সমর্থকদের কাছে মামদানির দৃষ্টিভঙ্গি বিপজ্জনক। তবু এসব সতর্কতা তরুণ মার্কিন ভোটারদের খুব একটা বিচলিত করছে না। তাঁরা রাজনৈতিক দলের লেবেলের পরিবর্তে মামদানির বাস্তব জীবনের সমস্যা ও সমাধানমুখী বার্তাতেই বেশি আকৃষ্ট হচ্ছেন।

গবেষক বেলি বুথ বলেন, ‘মামদানিই এমন একজন প্রার্থী, যিনি প্রচলিত ব্যবস্থাকে নানা দিক থেকে চ্যালেঞ্জ করছেন।’

২৬ বছর বয়সী ডেমোক্র্যাট এমিলি উইলসনের মতে, জীবনযাত্রার ব্যয়ের সংকট দলীয় বিভাজনের ঊর্ধ্বে থাকা উচিত। ফ্লোরিডার সেন্ট পিটার্সবার্গে বসবাসরত এমিলি দূর থেকেই মামদানিকে সমর্থন করছেন। মিশিগানের অ্যান আরবারের কাছে এক ছোট শহরে বসবাসরত ২৫ বছর বয়সী ডেইজি লুপাও একইভাবে ভাবেন। তাঁর মতে, মামদানির প্রচারাভিযানটা নতুন এক দৃষ্টিভঙ্গি এনে দিয়েছে। তাঁর অনেক প্রস্তাব গ্রামীণ আমেরিকাসহ নিজ সম্প্রদায়ের জন্যও কার্যকর হতে পারে। লুপা বলেন, ‘নিউইয়র্কে তিনি যেসব পরিবর্তন আনতে চাচ্ছেন, সেগুলোর অনেকটাই আমরা গ্রামীণ এলাকায় আরও বেশি করে চাই। কারণ, এখানে তো সেগুলোর অস্তিত্বই নেই।’
সতর্ক আশাবাদ

আরও পড়ুননিউইয়র্কের এত ইহুদি কেন জোহরান মামদানির পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন০১ নভেম্বর ২০২৫

তবে যাঁরা নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন, তাঁদের কাছে মূল প্রশ্ন—মামদানি কি সত্যিই জীবনযাত্রার ব্যয়ের এই সংকট কাটাতে পারবেন? ৩২ বছর বয়সী ডিলন রবার্টসনের জন্য অর্থনৈতিক উদ্বেগ যেন জীবনের স্থায়ী সঙ্গী।  স্নাতক শেষে তাঁর শিক্ষাঋণ দাঁড়াবে প্রায় আড়াই লাখ ডলার। মামদানিকে সমর্থন করছেন রবার্টসন।

কারণ, তাঁর প্রস্তাবিত ব্যয় সাশ্রয়ী পরিকল্পনাগুলো জীবনকে কিছুটা সহজ করতে পারে। তবে একই সঙ্গে তিনি সংশয়ও প্রকাশ করেন। ডিলন বলেন, ‘মামদানি যা বলছেন, সবই শুনতে ভালো লাগে। কিন্তু আমি ভাবি, তিনি কি সত্যিই পারবেন? বাস্তবে কি তা সম্ভব? নাকি এটা যেন ফুটো জাহাজে শুধু ব্যান্ডেজ লাগানোর মতো?’
তবু ডিলন স্বীকার করেন. যদি বিকল্প হয়, আগের মতোই টেনে নেওয়া অথবা কিছু নতুন চেষ্টা করা, তাহলে তিনি নতুনটাকেই সুযোগ দিতে প্রস্তুত।

আরও পড়ুননিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন১১ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুননিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচন: সর্বশেষ চার জরিপেও এগিয়ে জোহরান মামদানি৯ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ