মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে মারামারির মামলায় আসামি ধরার পর পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সিংগাইর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পার্থ শেখর ঘোষের বিরুদ্ধে। পরে আহত ওই নারী সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। 

আহত ওই নারীর নাম সায়মা আক্তার। তিনি সিঙ্গাইর উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের হুমায়ন মিয়ার স্ত্রী।

আহত সায়মা আক্তারকে সহযোগিতা করতে আসা সোনিয়া আক্তারকে নামের এক নারী ও তার দেড় বছরের ছেলেকে ২১ ঘণ্টা থানা-হেফাজতে আটকে রাখার অভিযোগ করা হয়েছে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জে ও এম তৌফিক আজমের বিরুদ্ধে। সোনিয়া আক্তার একই মামলার আসামি ওয়াজ উদ্দিনের মেয়ে। এ ঘটনায় সায়মা আক্তার গত রোববার মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

 গত শনিবার বিকেল ৩টার দিকে মাসুদ বাদশার ওপর হামলা মামলার আসামি হুমায়ন মিয়াকে গ্রেপ্তারে তার বাড়িতে অভিযান চালান সিংগাইর থানার এসআই পার্থ শেখর ঘোষ। অভিযানে গ্রেপ্তার হন হুমায়ন এবং তাকে পরানো হয় হাতকড়া। তবে এ সময় পুলিশের সঙ্গে আসামির ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এর একপর্যায়ে আসামি পালিয়ে যায়। পরিবারটির অভিযোগ, এতে ক্ষিপ্ত হন এসআই পার্থ শেখর ঘোষ এবং আসামির অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সায়মা ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। এতে আহত হন সায়মা।

পুলিশ সুপারকে দেওয়া অভিযোগপত্রে সায়মা বলেন, এসআইয়ের ধাক্কায় পড়ে গিয়ে আহত সায়মাকে সহযোগিতা করতে আসেন প্রতিবেশী সোনিয়া আক্তার ও আরিফ নামের দুজন। তখন ওসির নির্দেশে তাদের আটক করে থানায় নেওয়া হয়। পরে দেড় বছরের ছেলেসহ সোনিয়া আক্তারকে ২১ ঘণ্টা থানায় আটকে রাখা হয়। আরিফকে চালান করা হয় আদালতে।

সায়মার আরও অভিযোগ, এ ঘটনার পর সিংগাইর থানার ওসি জে ও এম তৌফিক আজম সায়মা আক্তারের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হুমকি দিয়ে এসেছেন। পালিয়ে যাওয়া আসামি হুমায়ন আত্মসমর্পণ না করলে পরিবারের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে হুমকি দেন।

তবে অন্তঃসত্ত্বা সায়মা আক্তারকে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এসআই পার্থ শেখর ঘোষ। তিনি বলেন, 'আসামি হুমায়নকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তার পরিবারে সদস্য এবং আশপাশের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে মব সৃষ্টি করে। তারা হুমায়নকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করে। আসামির স্ত্রী সায়মাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়নি।'  

সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জে ও এম তৌফিক আজম বলেন, 'ছেলেসহ ওই নারীকে ২১ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়নি। থানার আনার পর তার পরিবারের সদস্যরা ছেলেকে মায়ের সঙ্গে দেখা করানোর জন্য থানায় আনেন। ছেলে মায়ের সঙ্গে গারদে দেখা করে। কোনোভাবেই শিশুকে ২১ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়নি। এছাড়া ঘটনার সঙ্গে সোনিয়ার সম্পৃক্ত না থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।'

মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোসাম্মৎ ইয়াছমিন খাতুন বলেন, 'এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম ন কগঞ জ অভ য গ আটক পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে সুদের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২৫

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় সুদের টাকা লেনদেনের বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে ২ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে ৪ পুলিশসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনা বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ ২৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে উভয়পক্ষের ৪৫ জনকে আটক করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

আহতরা হলেন- পারভেজ শেখ (২০), মানিক শেখ (৪১), সাদ্দাম শেখ (৩৫), শাকিল খান (২৫), ফয়সাল শেখ (২০), আবু সাঈদ শেখ (৪০), সজীব শেখ (১৯), রনি শেখ (৪০), সোহেল সুলতান (২৫), আফ্রিদি শেখ (১৯), মোস্তফা শেখ (৪০), নুরুন্নবী (১৮), আমানুল্লাহসহ (২৫) আরও অনেকে।

গুরুতর আহতদের গোপালগঞ্জ ও কোটালীপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া কোটালীপাড়া থানার আহত এসআই সেলিম মাহমুদ কোটালীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। ওই এসআইসহ কোটালীপাড়া থানার আরও ৩ কনস্টেবল আহত হয়েছেন বলে কোটালীপাড়া থানার এসআই মামুনুর রশীদ জানিয়েছেন।

মাঝবাড়ি গ্রামের কালাম দাড়িয়া ও বংকুরা গ্রামের হাসেম মুন্সি জানিয়েছেন, কোটালীপাড়া উপজেলার বংকুরা গ্রামের রিয়াজুলের কাছ থেকে মাঝবাড়ি গ্রামের ফারুক দাড়িয়া সুদে টাকা নেন । সেই টাকা সময়মত ফারুক সুদে আসলে পরিশোধ করতে গড়িমসি শুরু করেন। এতে পাওনাদার রিয়াজুল ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। সুদের টাকা লেনদেন নিয়ে দু’জনের মধ্যে আজ শুক্রবার সকালে বাকবিতণ্ডা হয়। এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মসজিদের মাইক থেকে গ্রামবাসীকে সংঘর্ষে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এ আহ্বানের পর দুই গ্রামের লোকজন ঢাল-সড়কিসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। দফায়-দফায় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে। পুলিশ প্রথমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। দুই ঘণ্টা পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে।

উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করায় ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

কোটালীপাড়া পাড়া থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ২৫ রাউন্ড গুলি বর্ষণ ও উভয়পক্ষের ৪৫ জনকে আটক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে জানিয়ে ওসি আরও বলেন, এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোন পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পাওয়ামাত্র আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অভিযুক্ত রিয়াজুল ও ফারুক দাড়িয়ার ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। এ কারণে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোপালগঞ্জে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে ৩ বাসের ধাক্কা, পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত ২
  • গোপালগঞ্জে ৬ যানবাহনের সংঘর্ষ, পুলিশ সদস্যসহ নিহত ২
  • রেললাইনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন মুঠোফোনে, ট্রেনে কাটা পড়ে চা–শ্রমিকের মৃত্যু
  • ফরিদপুরের সড়কে ঝরল এসআইয়ের প্রাণ 
  • গোপালগঞ্জে সুদের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২৫