ভ্যাটিকান থেকে ওড়া ধোঁয়ায় কীভাবে বোঝা যায় নতুন পোপ নির্বাচিত হয়েছেন
Published: 21st, April 2025 GMT
শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ভ্যাটিকানে রোমান ক্যাথলিক গির্জার নেতা নির্বাচনের কাজটি হয়ে আসছে। কার্ডিনালদের মধ্যে একান্তে অনুষ্ঠিত সভায় ভোটাভুটির মধ্য দিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে। এ বৈঠককে ঘিরে অনেক গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়। সাধারণত দায়িত্বরত পোপ মারা গেলে কিংবা পদত্যাগ করলে এর কয়েক দিন পর এই সম্মেলন হয়ে থাকে।
কার্ডিনালদের অনেকেই বিশপ ও আর্চবিশপ হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। ধর্মীয় বিষয়ে সহযোগিতার জন্য পোপই এঁদের নিয়োগ করে থাকেন। কার্ডিনালদের কেউ কেউ ভ্যাটিকানে কাজ করেন। তবে বেশির ভাগ কার্ডিনালই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছেন। সেখানে তাঁরা বিশপ ও আর্চবিশপের জন্য নির্ধারিত কাজগুলো করে থাকেন।
রোমান ক্যাথলিকদের জন্য নতুন পোপ নির্বাচনের জন্য ভোটাভুটির সময় হলে বিভিন্ন দেশের ৮০ বছরের কম বয়সী কার্ডিনালরা রোমে যান। তাঁরা পৌঁছানোর পর সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকা গির্জায় সকালবেলা বিশেষ একটি ধর্মীয় সমাবেশ হয়। বিকেলে ভোটাভুটিতে অংশ নিতে কার্ডিনালরা পায়ে হেঁটে সিস্টিন চ্যাপেলের দিকে যান, যা কনক্লেভ নাম পরিচিত।
পোপ নির্বাচনের প্রক্রিয়া: ১.ধর্মীয় সভা ২. কার্ডিনাল ভোটার ৩. কনক্লেভ ৪. ভোট ৫. সাদা ধোঁয়া ৬. নির্বাচিত পোপ দেখা দেবেন ব্যালকনিতে
এই কনক্লেভে রুদ্ধদ্বার সভায় ভোটাভুটি হয়। ভোটাভুটির ক্ষেত্রে কঠোরভাবে গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়। সিস্টিন চ্যাপেলে কোনো মাইক্রোফোন এবং ক্যামেরা লুকিয়ে রাখা হয়েছে কি না, তা তল্লাশি করা হয়। কার্ডিনালদেরও বলে দেওয়া হয় যে, তাঁরা যেন এ ভোটপ্রক্রিয়া নিয়ে বাইরের কারও সঙ্গে আলাপ না করেন। যদি কেউ এসব নিয়ে বাইরে আলাপ করেন তবে তাঁদের বহিষ্কার করা হবে।
আরও পড়ুনমারা গেলেন পোপ ফ্রান্সিস৩ ঘণ্টা আগেভোটাভুটি প্রক্রিয়া
সিস্টিন চ্যাপেলের ভেতর অবস্থানকারী প্রত্যেক কার্ডিনালের হাতে কাগজের ব্যালটগুলো দেওয়া হয়। সেখানে লাতিন ভাষায় লেখা থাকে-‘এলিগো ইন সুম্মুন পন্তিফিসেম’। এর অর্থ হলো, ‘আমি সর্বোচ্চ পোপ হিসেবে নির্বাচিত’। এ লেখাটির নিচে কার্ডিনালরা পরবর্তী পোপ হিসেবে তাঁদের পছন্দের প্রার্থীর নাম লিখে থাকেন। তবে কার্ডিনালরা সেখানে নিজের নাম লিখতে পারেন না।
ভোট দেওয়ার পর প্রত্যেক কার্ডিনাল তাঁদের জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী একে একে তাঁদের ভাঁজ করা ব্যালট নিয়ে একটি বেদির দিকে এগিয়ে যান এবং আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যালটটি একটি পাত্রে রাখেন।
এরপর ভোট গণনার পালা। গণনা শেষে প্রাপ্ত ফল কার্ডিনালদের পড়ে শোনানো হয়।
ভোটাভুটিতে কোনো কার্ডিনাল দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পেলে তবে তিনি নতুন পোপ নির্বাচিত হন।
কেউ যদি প্রয়োজনীয় ভোট না পান তবে দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ দিন পর্যন্ত দিনে চারটি করে ভোটাভুটি করা হয়। দুটি ভোটাভুটি সকালে এবং দুটি ভোটাভুটি বিকেলে করা হয়। পঞ্চম দিনটি প্রার্থনা এবং আলোচনার জন্য নির্ধারিত রাখা হয়। এরপর আরও সাত দফায় ভোটাভুটি হতে পারে। আবারও বিরতি নেওয়া হয়। এরপর প্রয়োজনে আবারও ভোটাভুটি হতে পারে এবং এ নিয়মেই চলতে থাকে।
আরও পড়ুনরোম শহরের বুকে আস্ত এক দেশ ভ্যাটিকান সিটি১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ভ্যাটিকান সিটির সেন্ট পিটার্স স্কয়ারউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
চার দিনের জ্বরে ভুগে মারা গেল কিশোর
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌর সদরের ফকিরহাট এলাকায় আশরাফুর রহমান (১৪) নামের এক কিশোর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। গত শুক্রবার সে জ্বরে আক্রান্ত হয়। আজ মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার দিকে পৌর সদরের জেনারেল হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।
আশরাফুর রহমান ওই এলাকার মিজানুর রহমানের একমাত্র ছেলে। সে সীতাকুণ্ড আলিয়া মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সীতাকুণ্ডে এই প্রথম একজন মারা গেল।
আশরাফুর রহমানের দাদা এম এ আলীম আলী প্রথম আলোকে বলেন, গত শুক্রবার তাঁর নাতির জ্বর আসে। সামান্য ব্যথাও ছিল। জ্বর কমছে না দেখে রোববার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানে রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ে। এরপর আশরাফুরকে পৌর সদরের জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গতকাল সোমবার রাতে তার অবস্থার অবনতি হয়। আজ ভোর পাঁচটার দিকে সে মারা যায়। দুপুরে মডেল মসজিদ এলাকায় জানাজার নামাজ শেষে ফকিরহাট নলুয়া দিঘি এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় আশরাফকে।
জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি হাসপাতালের দায়িত্বগত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই কিশোর ভালো ছিল। আজ ভোর চারটার দিকে তার পাতলা পায়খানা ও খিঁচুনি হয়। এরপর তারা দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে নেওয়ার পথে কিশোরটি মারা যায়।
সীতাকুণ্ডে আজ এক দিনেই ৬ জনের শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাস শনাক্ত হয় বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন।