রোমান্স নয়, এখন অ্যাকশনেই বাজিমাত শাকিবের
Published: 22nd, April 2025 GMT
ঢালিউডের সুপারস্টার শাকিব খান দীর্ঘ দুই দশকের ক্যারিয়ারে রোমান্টিক, পারিবারিক ও ফর্মুলাভিত্তিক বাণিজ্যিক সিনেমায় একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছেন। তবে সময়ের সঙ্গে পাল্টেছে দর্শকের মেজাজ, বদলেছে বিনোদনের ধরন। সেই পরিবর্তন সাদরে গ্রহণ করেই শাকিব খান এখন ঝুঁকেছেন অ্যাকশনধর্মী সিনেমার দিকে।
গত বছর ভার্সেটাইল মিডিয়ার প্রযোজনায় মুক্তিপ্রাপ্ত ‘প্রিয়তমা’ দিয়ে ‘নতুন’ শাকিবের যাত্রা শুরু। এরপর ‘তুফান’-এ পুরোপুরি ভিন্ন রূপে হাজির হন তিনি। ডার্ক লুক, ইনটেন্স সংলাপ ও বাস্তবসম্মত অ্যাকশন দৃশ্যের মাধ্যমে শাকিব খান যেন নিজেকেই ছাড়িয়ে যান। এটি ছিল শাকিবের চেনা বলয়ের বাইরে এক সাহসী পদক্ষেপ।
এই ঈদে মুক্তি পাওয়া ‘বরবাদ’ সিনেমা সেই রূপান্তরকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মানের লোকেশন, ভারতের অভিজ্ঞ টেকনিক্যাল টিম, চমৎকার কোরিওগ্রাফি এবং বিশাল বাজেট— সব মিলিয়ে ‘বরবাদ’ হয়ে উঠেছে ঢালিউডে অ্যাকশন ঘরানার এক নতুন মানদণ্ড।
পরিচালক মেহেদী হাসানের এটি প্রথম সিনেমা হলেও তার নির্মাণে ছিল পরিপক্বতার ছাপ। শোনা যায়, প্রায় ১৫ কোটি টাকা বাজেট, যার ৮০ শতাংশ শুটিং হয়েছে বিদেশে। এই সিনেমার ভিজ্যুয়াল ট্রিটমেন্ট এবং শাকিব খানের পারফরম্যান্স একে আলাদা উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
‘বরবাদ’ দিয়ে দর্শকের কাছ থেকে যে ইতিবাচক রেসপন্স এসেছে, তা প্রমাণ করে, শাকিবের অ্যাকশন দর্শক গ্রহণ করেছে। তাই দেরি না করে শুরু হয়েছে পরবর্তী সিনেমা ‘তাণ্ডব’-এর শুটিং। রাইজিংবিডিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শাকিব খান বলেন, ‘‘বরবাদ সিনেমার জন্য আমরা অপেক্ষা করছিলাম। সিনেমাটি মুক্তির পরই ‘তাণ্ডব’-এর শুটিং শুরু করি। এর বাজেটও অনেক বেড়ে গেছে।”
এই সিনেমার শুটিং সেটেও দেয়া গিয়েছে বড় বাজেট ও শক্তিশালী অ্যাকশন দৃশ্যে। অ্যাকশন হিরো হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে শাকিব পেছনে ফিরে তাকাচ্ছেন না। দর্শকও লুফে নিয়েছে তাকে। যদিও শাকিব খানের অ্যাকশন ঘরানায় ছবি নির্মাণ নতুন নয়। এর আগে ‘শিকারি’, ‘পাসওয়ার্ড’, ‘ক্যাপ্টেন খান’, ‘নবাব’–এর মতো সিনেমায় অ্যাকশন দৃশ্যে তাকে দেখা গেছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সিনেমাগুলো ছিল স্টাইলাইজড, থিমেটিক অ্যাকশন—যা অনেকটা দক্ষিণ ভারতীয় ফর্মুলার কপি বলে সমালোচিত হয়েছে।
এর মধ্যে যেমন ‘শিকারি’ বা ‘নবাব’ ভালো ব্যবসা করেছে, তেমনি ‘পাসওয়ার্ড’ বা ‘ক্যাপ্টেন খান’ ছিল ব্যবসায়িকভাবে গড়পড়তা বা ব্যর্থ। এসব অভিজ্ঞতা হয়তো শাকিব খানকে বুঝিয়ে দিয়েছে কেবল ধামাকা অ্যাকশন দিয়ে নয়, কন্টেন্ট ও নির্মাণশৈলী দিয়েই দর্শক জয় করা যায়।
'তুফান', 'বরবাদ', 'তাণ্ডব'—টানা তিনটি অ্যাকশন সিনেমার মাধ্যমে ধাপে ধাপে উঠে আসছে এক নতুন শাকিব খান। বিশেষ করে 'বরবাদ'–এর মাধ্যমে সেই অ্যাকশন হয়ে উঠেছে বেশি বাস্তবসম্মত, চরিত্রনির্ভর এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন। শারীরিক প্রস্তুতি থেকে শুরু করে স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী অ্যাকশন দৃশ্যের পরিপূর্ণতা—সব কিছুতেই এখন যুক্ত হয়েছে পেশাদারিত্ব।
এ ধরনের রূপান্তর একজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পীর জন্য সহজ সিদ্ধান্ত নয়। কিন্তু শাকিব খান সেই সাহস দেখিয়েছেন। প্রমাণ করেছেন, তিনি শুধু 'তারকা' নন, তিনি সময়চেতা শিল্পী, যিনি সময়ের সঙ্গে নিজেকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে জানেন।
আজকের সিনেমা জগতে অ্যাকশনই সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘরানা। হলিউড, বলিউড, তামিল, তেলেগু কিংবা কোরিয়ান সিনেমা—সব জায়গাতেই অ্যাকশনই মূল বিনোদনের হাতিয়ার। বাংলাদেশি দর্শকরাও এখন চাইছে বাস্তবসম্মত গল্প, আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ আর আন্তর্জাতিক মানের নির্মাণ। সেই জায়গাটিকেই ধরেই এগোচ্ছেন শাকিব খান। এবং এই যাত্রা কেবল তার ব্যক্তিগত ক্যারিয়ারের জন্য নয়, বরং গোটা ইন্ডাস্ট্রির জন্যই একটি বড় সম্ভাবনার বার্তা।
শাকিব খানের অ্যাকশন অধ্যায় কেবল একটি ঘরানা পরিবর্তনের গল্প নয়, বরং এটি বাংলা সিনেমায় নতুন দিগন্তের সূচনা। সময় বলবে এই যাত্রা কতদূর এগোয়, তবে এখন পর্যন্ত যেভাবে তিনি নিজেকে প্রস্তুত করেছেন—তা নিঃসন্দেহে আশাব্যঞ্জক এবং ইন্ডাস্ট্রির জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক।
তারা//
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অ য কশন দ শ য র জন য বরব দ
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনের তারিখ নির্দিষ্ট হওয়ার পরই বইমেলার তারিখ ঘোষণা
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরই ফেব্রুয়ারি মাসেই বইমেলা আয়োজনের প্রস্তাব ‘সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাস্তবসম্মত' বলে মনে করছে বাংলা একাডেমি।
রবিবার (২ নভেম্বর) বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের বৈঠকের পর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলা একাডেমি এ কথা জানিয়েছে।
আরো পড়ুন:
বাংলা একাডেমিতে আল মাহমুদ লেখক কর্নার চালু
একুশে বইমেলা স্থগিত
বৈঠকে অমর একুশে বইমেলা ২০২৬ এর সময় নির্ধারণ বিষয়ে সমিতির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি কয়েকটি সম্ভাব্য সময়ের কথা বলে। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থার পরামর্শও পর্যালোচনা করা হয়। এর মধ্যে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপর ফেব্রুয়ারি মাসেই মেলা আয়োজনের প্রস্তাব সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাস্তবসম্মত বলে গৃহীত হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় সিদ্ধান্ত হয়, নির্বাচনের তারিখ নির্দিষ্ট হওয়ার পরই মেলার তারিখ ঘোষণা করা হবে।
অমর একুশে বইমেলা ২০২৬ আয়োজনের ব্যাপারে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যদের সঙ্গে বাংলা একাডেমি নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
ঢাকা/রায়হান/সাইফ