‘আপনারা দেখেন ওরা আমাদের গুলি করতেসে। অনেক মানুষ গুলিবিদ্ধ হইসে। দেখেন, আমি গুলি খাইছি। আমার আব্বুকে মেরে হসপিটালে ভর্তি করা হইছে। গুলির আঘাতে আমাদের অনেক মানুষের ক্ষতি হয়েছে। আমরা আইনের কাছে সাহায্য চাই।’

বন্ধ দোকানপাটের সামনে দাঁড়িয়ে এক যুবক চিৎকার করে কথাগুলো বলছিলেন। চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় ধারণ করা এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তিন মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, মাথায় ক্যাপ পরা এক যুবক নিজের মুখ ও হাতের ক্ষতস্থান দেখিয়ে সাহায্য চাইছেন। তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন দাবি করে বলছিলেন, ‘দেখেন ওরা গুলি করতেসে। অনেক মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়েছে। আমি বাজারে চা খাওয়ার জন্য এসে গুলি খেয়েছি। আমি হাতে গুলি খেয়েছি, পায়ে গুলি খেয়েছি। দেখেন, ওরা গুলিটুলি নিয়ে সবাই প্রস্তুত। লুকিয়ে লুকিয়ে আমাদের গুলি করতেসে।’

ওই যুবকের কথার মাঝেই বেশ কয়েকটি গোলাগুলির মতো শব্দ শোনা যায়। এ সময় তিনি যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন ওই এলাকার দোকানপাট বন্ধ দেখা যায়। কিছু দূরে বন্দুক হাতে এক ব্যক্তিকে আড়ালে সরে যেতে দেখা যায়। তার পাশে বেশ কয়েকটি ঢেউটিনে নিজেদের আড়াল করে কিছু লোক এগিয়ে আসছিলেন। এ সময় আবারও গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে বাঁশখালী উপজেলার সরল ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকায় লবণের মাঠ দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ভিডিওটি সেই সময় ধারণ করা হয়। তবে পুলিশ দাবি করেছে, সেখানে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি হলেও গোলাগুলির কোনো ঘটনা ঘটেনি।

জানা গেছে, ঘটনার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। ঘটনার সময় নতুন বাজার এলাকায় দোকানপাট বন্ধ করে ফেলেন ব্যবসায়ীরা।

জানতে চাইলে বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা সত্য নয়, দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের সময় গোলাগুলির শব্দ মনে হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। আমরা তদন্ত করে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম দ র করত স

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ