জামায়াতের মহিলা বিভাগের বৈঠকে সংঘর্ষে আহত ৩৬
Published: 21st, October 2025 GMT
ফেনীর সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নে জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগের উঠান বৈঠকে হামলার অভিযোগ উঠেছে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ওলামা দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
সোমবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ফাজিলপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পর রাতে ইউনিয়নের আল আমিন মার্কেট সংলগ্ন এলাকায় সমঝোতা বৈঠক চলাকালে উভয় পক্ষের মধ্যে ফের সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পক্ষের অন্তত ৩৬ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্য ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতদের মধ্যে মোহাম্মদ হাসান হোসেন (২৩), মো.
আহতদের মধ্যে আরো রয়েছেন ফাজিলপুর ইউনিয়ন শিবিরের সভাপতি আরমান হোসেন, ১ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি নাজমুল হাসান, ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি সোহরাব হাসান ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি জিয়াউর রহমানসহ আরো অনেকে।
আহত শিবির নেতাকর্মীরা জানান, ফাজিলপুর ইউনিয়নের একটি বাড়িতে জামায়াতের মহিলা বিভাগের সদস্যদের কোরআন তালীম ও সংগঠনভিত্তিক বৈঠক চলছিল। সেসময় স্থানীয় যুবদল নেতা কামরুল ইসলাম ভূঁইয়ার নেতৃত্বে কয়েকজন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ওলামা দলের কর্মী সেখানে গিয়ে হামলা চালায়।
রাতে আহতদের দেখতে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে যান জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মুফতি আবদুল হান্নান। তিনি বলেন, “মহিলা জামায়াতের ধর্মীয় বৈঠকে বিনা উসকানিতে হামলা চালানো হয়েছে। মহিলা জামায়াতের অনুষ্ঠান বন্ধ করার পরিকল্পনায় ব্যর্থ হয়ে পরে বাজার এলাকায় আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়। আমরা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
জেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক আ.ন.ম. আবদুর রহিম বলেন, “আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।”
অন্যদিকে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন খন্দকার বলেন, ‘‘জামায়াতের মহিলারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধর্মের নামে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে। আমাদের এক নেতা সেখানে গিয়ে তাদের এসব কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে বললে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা এসে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমাদের সাতজন আহত হয়েছেন।”
ফেনী জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, “ঘটনায় আমাদেরও ১৬ জন আহত হয়েছে। বিকেলে সমঝোতা বৈঠকে বিষয়টি মিটে যায়। কিন্তু জামায়াত নেতারা এখন ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিতে চাচ্ছে। আমরা নিজেরাও মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
স্থানীয়রা জানান, সংঘর্ষের পর সেনা সদস্যরা মাঠে নেমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ঘটনাস্থল থেকে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব গিয়াস উদ্দিন ও সভাপতি মীর সবুজকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামসুজ্জামান বলেন, ‘‘দুই পক্ষের মধ্যে সামান্য ধাক্কাধাক্কির ঘটনা শুনেছি। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/সাহাব উদ্দিন/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ন ত কর ম র সদস য আহতদ র আম দ র উদ দ ন য বদল
এছাড়াও পড়ুন:
আ.লীগ নেতা আশিক বিল্লাহ এখন ‘জুলাই যোদ্ধা’
নড়াইল আদালতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নামে করা মানহানি মামলার বাদী ও আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আশিক বিল্লাহ এখন জুলাই যোদ্ধা আহতদের তালিকায়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।
শেখ আশিক বিল্লাহ নড়াইলের কালিয়া উপজেলার যাদবপুর গ্রামের মৃত ওয়াজেদ আলীর ছেলে এবং কালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। এরপর সুযোগ বুঝে দল পরিবর্তন করে ডেমক্রেটিক পার্টি এবং সর্বশেষ জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য হয়েছেন।
আরো পড়ুন:
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যার বিচার হবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে
জুলাই আন্দোলনের অগ্রনায়ক ছিল জবি ছাত্রদল
২০১৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্যের অভিযোগে খালেদা জিয়ার নামে নড়াইলের আদালতে মানহানি মামলা দায়ের করেন আশিক বিল্লাহ। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী সম্পর্কে বিতর্কিত বক্তব্যের অভিযোগে ওইদিন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নামে আরেকটি মানহানি মামলা করেন তিনি।
জুলাই যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী নিহত এবং আহতদের সহায়তার জন্য সরকারিভাবে দেশব্যাপী তালিকা প্রস্তুত করা হয়। এর অংশ হিসেবে নড়াইল জেলায় দুইজন নিহত এবং আহতদের তালিকা করে গেজেট প্রকাশ করা হয়। নড়াইল জেলার আহতদের তালিকায় রয়েছেন শেখ আশিক বিল্লাহর নাম। তার গেজেট নং-৩৩৬৯১।
নড়াইল জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘‘এ জাতীয় সুযোগ সন্ধানী মানুষের নাম তালিকায় আসলে তার দায় প্রশাসনকে নিতে হবে।’’
কালিয়া উপজেলার পাঁচগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও এনসিপি নেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘‘আশিক বিল্লাহ কীভাবে তালিকায় আসল তা জানা নেই।’’
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘‘আমি একজন প্রকৃত ‘জুলাই যোদ্ধা’। আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই ঢাকার মহাম্মদপুর এলাকায় সক্রিয়ভাবে যোগদান করে আহত হয়েছি। চিকিৎসা সনদসহ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র মোতাবেক প্রকৃত আহত ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে গেজেটে অন্তর্ভুক্ত হয়েছি।’’
নড়াইল জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহান বলেন, ‘‘জুলাই যোদ্ধা হিসেবে আহতদের তালিকায় আশিক বিল্লাহর নাম কীভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, সেই সম্পর্কে আমার জানা নেই।’’
ঢাকা/শরিফুল/বকুল