২ কিলোমিটার সড়ক, ২০ হাজার শ্রমিকের দুর্ভোগ
Published: 22nd, April 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক মাওনা-ধনুয়া সড়কটি বর্তমানে জনগণের দুর্ভোগের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। দৈর্ঘ্যে ছয় কিলোমিটার এই সড়কের মাঝের মাত্র দুই কিলোমিটার অংশ দীর্ঘদিন ধরেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে আছে। সড়কের এই ভগ্নদশা ভোগান্তিতে ফেলেছে আশপাশের অন্তত ২০ হাজার পোশাকশ্রমিক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের।
মাওনা বাজার থেকে জৈনা বাজার-সখিপুর সড়ক পর্যন্ত বিস্তৃত এই রাস্তাটি শিল্পাঞ্চল হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। আশপাশে রয়েছে অন্তত আটটি বড় কারখানা। শ্রমিকরা প্রতিদিন এই রাস্তা ব্যবহার করেই কর্মস্থলে যাতায়াত করেন।
সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তার ওই অংশে সৃষ্টি হয় কাদাপানির জলাবদ্ধতা। কোথাও কোথাও বড় বড় গর্ত, যা দিয়ে ভারী যানবাহন তো দূরের কথা, সাধারণ মানুষের চলাচলও কঠিন হয়ে পড়ে।
স্থানীয়দের দাবি, বিগত সাড়ে তিন বছর ধরেই হাজীপাড়া থেকে ধনুয়া হানু মার্কেট পর্যন্ত রাস্তার এই অংশটি বেহাল অবস্থায় রয়েছে। স্থানীয়ভাবে কয়েকবার সুরকি ফেলে চলাচলের ব্যবস্থা করলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। এমনকি বারবার অভিযোগ করেও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ পাওয়া যায়নি।
হাজী ছোট কলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান সজল বলেন, “এটি একটি জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। চারপাশে এতগুলো কারখানা, এত মানুষ চলাচল করে—তবুও কোনো ধরনের টেকসই সংস্কার নেই। সামনে বর্ষা আসছে, দুর্ভোগ আরও বাড়বে।”
স্থানীয় ব্যবসায়ী কাইসার আহমেদ বলেন, “রাস্তার দুই পাশ উন্নয়ন হলেও মাঝখানের দুই কিলোমিটার অংশের কারণে সব সুফল মাটি হচ্ছে। শিল্প এলাকায় এ ধরনের সড়ক মরামতের ক্ষেত্রে দ্রুত এবং মানসম্মত কাজ হওয়া দরকার।”
স্থানীয়দের মধ্যে অনেকেরই আশঙ্কা- দ্রুত কাজ শুরু না হলে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগ ভয়াবহ রূপ নেবে। তাদের একটাই দাবি, দ্রুত অনুমোদন ও উন্নয়ন কাজ শুরু করে জনগণের কষ্ট লাঘব করা হোক।
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ব্যারিস্টার সজিব আহমেদ জানান, সড়কের ওই অংশসহ আড়াই কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের প্রস্তাব গাজীপুর প্রকল্পে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে তা অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু হবে।
ঢাকা/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে:
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ডিএনসিসির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত পশ্চিম শেওড়াপাড়া, পশ্চিম কাজীপাড়া ও সেনপাড়া পর্বতা এলাকায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা, ৫ কিলোমিটার নর্দমা ও দেড় কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণকাজের উদ্বোধন ও গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।
ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, ডিএনসিসির সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রকল্পটি কবে শুরু হবে, কবে শেষ হবে, কতা টাকা বরাদ্দ আছে—এসব তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। এছাড়া, রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ হলে নির্মাণ সামগ্রী কী, সেটা জনগণের জানা দরকার। যখন জনগণ জানবে, তখন তারা জবাবদিহি করতে পারবে।
তিনি বলেন, “আমি গত সপ্তাহে কাউকে না জানিয়ে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে চলমান কাজ পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম, রাস্তাকে ধরে রাখার জন্য যে ওয়াল (বিশেষ দেয়াল) দেওয়া হয়েছে, সেটার পিলার বানানোর কথা ছিল স্টোন দিয়ে; কিন্তু বানিয়ে রেখেছে ব্রিক দিয়ে। এটা বড় দুর্নীতি। স্থানীয় মানুষ যদি না জানে, কী নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হবে, তাহলে দুর্নীতি করাটা সহজ। তথ্যের যত বেশি আদান-প্রদান হবে, তথ্য যত বেশি পাবলিক করা হবে, জনগণ তত বেশি জবাবদিহি করতে পারবে। আমি ঠিকাদারকে জানিয়ে দিয়েছি, সঠিক নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করলে বিল দেব না। তারা বলেছে, এটা ঠিক করে দেবে।”
মোহাম্মদ এজাজ বলেন, যার যার এলাকার কাজ তারা বুঝে নেবেন। বুঝে নেওয়ার জন্য যত তথ্য ও সহযোগিতা লাগবে, সেটা আমরা দেব। ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে প্রকল্পের সব তথ্য ও ঠিকাদারের ফোন নম্বরসহ দেওয়া থাকবে। স্থানীয় জনগণ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ বুঝে নেবেন। আমরা চাই, সকলের অংশগ্রহণে উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হবে। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় সোসাইটি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতা পাচ্ছি। সবার অংশগ্রহণ বাড়াতে আমি বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে গণশুনানি করছি। প্রতি মাসে ফেসবুক লাইভে দেশে-বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সাথে যুক্ত হচ্ছি। ডিএনসিসির সবার ঢাকা অ্যাপ আছে, সেটির পাসওয়ার্ড পর্যন্ত আমাদের দিচ্ছে না। আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা ৪ কোটি টাকা খরচ করে এই অ্যাপ বানিয়েছে। পাসওয়ার্ড না দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।”
ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় হকারদের জন্য হাটা যায় না। মানুষের অবাধ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। ঢাকা শহরে মানুষের চলাচলের অধিকার সবার আগে, সেই অধিকার আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। মিরপুর-১০ এর প্রধান সড়কের যত হকার ও অটোরিকশা আছে, সেগুলো আমরা বন্ধ করে দেব। যারা এ ধরনের ইনফরমাল পেশায় যুক্ত আছেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্যও আমরা প্ল্যাটফর্ম করব। তাদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা আমরা তৈরি করব। এই শহরটা সবার, সবাই একসাথে বসবাস করব; কিন্তু অন্যদের কষ্ট না দিয়ে, অন্যের অধিকার নষ্ট না করে।
বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
ঢাকা/এএএম/রফিক