চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে লবণ মাঠ নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে সংঘর্ষ ও গোলগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ৩৫ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত ও গুলিবিদ্ধ মোহাম্মদ ফোরকান, মোহাম্মদ মাহিম, আজিজুর রহমান ও নুর হোসেনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং মোহাম্মদ দেলোয়ার, শাহজাহান, মোহাম্মদ রুবেল, জমির উদ্দীন ও আবদুল করিমকে (৪৫) বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার উপকূলীয় সরল ইউনিয়নের উত্তর সরল নতুন বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে উত্তর সরল এলাকার জাফর আহমদের ছেলে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন লবণ মাঠ থেকে ফিরছিলেন। নতুন বাজার এলাকায় পৌঁছালে আমানুল্লাহ ও কবিরের নেতৃত্বে তাকে আটক করে মারধর করা হয়। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে দেলোয়ারের লোকজন তাকে উদ্ধারে এগিয়ে এলে আমানুল্লাহ ও কবিরের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। এ সময় দেলোয়ারের লোকজন প্রতিরোধের চেষ্টা করলে তাদের ওপর গুলি চালানো হয় বলে জানান আহতরা।

গুলিবিদ্ধ ও আহতরা হলেন- মৃত জালেকের ছেলে ফোরকান (৩০), বদি আলমের ছেলে মোহাম্মদ মাহিম (১৮), মৃত নুরুল আমিনের ছেলে আজিজুর রহমান (৫০), মৃত আমিরুজ্জামানের ছেলে নুর হোসেন (৩৭), জাফর আহমদের ছেলে দেলোয়ার (৩৮), মোহাম্মদ শাকিল (২১), মোহাম্মদ রাকিব (২০), লোকমান (২৭), সৈয়দ নুর (৪৫), নয়ন (১৯), শাহাব উদ্দীন (৩২), মোহাম্মদ ইউনুস (৩২), মোহাম্মদ পারভেজ (২৩), মোহাম্মদ রাশেদ (২৩), মোহাম্মদ হাবিব (২৪), আবদুল আলিম (৪৫), মোহাম্মদ তৈয়ব (৫২), আবু তালেব (৬০) ও মোহাম্মদ ফরিদ (৫২)।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুলিবিদ্ধ মোহাম্মদ মাহিম বলেন, ‘আটক ও মারধরের খবর পেয়ে আমরা দেলোয়ারকে উদ্ধার করতে যায়। তখন প্রতিপক্ষ আমাদের ওপর হামলা ও গুলি চালায়। হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ নেতা খোরশেদ আলম ও আবদুল্লাহ কবির লিটনের অনুসারী।’

হামলার বিষয়ে কবির হোসেন বলেন, ‘তারা আমাদের ওপর হামলা করেছে। আমাদেরও লোকজন আহত হয়েছেন। তবে তাদের ভয়ে আমরা আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারিনি।’

এদিকে হামলা ও গুলিবর্ষণের পর ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

বাঁশখালী থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘লবণ মাঠ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। আমরা বারবার উভয়পক্ষকে শান্ত রাখার চেষ্টা করেছি।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ ম হ ম মদ লবণ ম ঠ

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ