খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) রোকেয়া হলের তালা ভেঙে ফেলেছেন ছাত্রীরা। তারা হলে প্রবেশ করেছেন। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ছাত্রীরা হলটির ফটকে লাগিয়ে রাখা তালা ভাঙেন। তাদের এ কাজে সহায়তা করেন ছাত্র হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী।

এদিকে, কুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.

চৌধুরী রফিকুল আবরার। মঙ্গলবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ফোনালাপকালে তিনি এ আহ্বান জানান। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

রোকেয়া হলে সামনে অবস্থানকারী ছাত্রীরা বলেন, এখন আমরা ১০-১৫ জন এসেছি। আমাদের অনেক শিক্ষার্থী বাইরে রয়েছে। তারাও আজ কালকের মধ্যে হলে প্রবেশ করবেন।

আরো পড়ুন:

পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সাময়িক স্থগিত

শেবাচিমে অত্যাধুনিক সিমুলেশন ল্যাব উদ্বোধন

এর আগে, গত ১৫ এপ্রিল বন্ধ থাকা কুয়েটের ছাত্র হলগুলোর তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। গত দুই মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী আবাসিক হল তালাবদ্ধ ছিল। আজ সেটিরও তালা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। 

 

কুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেল ৪টা থেকে অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের মধ্যে চার শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। দুইজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হয়েছে। তাদের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকাট্রনিক্স ২৩ এবং অন্যজন সিএসই ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী। অপর দুইজনকে অভিভাবকরা বাড়িতে নিয়ে গেছেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফোনে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার সময় উপদেষ্টা তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, উষ্ম আবহাওয়ায় শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়বেন। শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে অনশন প্রত্যাহার করতে শিক্ষার্থীদের অনুরোধ জানান তিনি।

তিনি আশ্বস্ত করেন, শিক্ষার্থীদের দাবি সম্পর্কে সরকার সচেতন রয়েছে। একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল অতি দ্রুত খুলনা যাবে। কুয়েট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে চলতি সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনশনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, কুয়েট ভিসিকে অপসারণ করতে হবে। অথবা তাকে নিজ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। খুলনায় প্রায় ৪৫ ডিগ্রির মতো তাপ অনুভব হচ্ছে। এমন অবস্থায় আমরা কতক্ষণ বেঁচে থাকব জানি না। শিক্ষা উপদেষ্টা আমাদের জানিয়েছেন বুধবার (২৩ এপ্রিল) কুয়েটে তদন্ত কমিটি আসছে। আমরা এই তদন্ত কমিটির নিন্দা জানিয়েছি। ভিসিকে অপসারণ না করে তদন্ত কমিটি কেন আসবে?

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট অনশন উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

সাহেবগঞ্জ এলাকায় ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকার ফসলি জমিতে ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ–দিনাজপুর সড়কের কাটামোড় এলাকায় এ কর্মসূচিতে অংশ নেন শতাধিক সাঁওতাল ও বাঙালি নারী–পুরুষ। পরে বিকেল চারটার দিকে কয়েকজনকে শরবত পান করিয়ে অনশন ভাঙান আমন্ত্রিত অতিথিরা।

সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির এ কর্মসূচিতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধা আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবির, বিশিষ্ট আইনজীবী মোহাম্মদ আলী প্রামাণিক, ফারুক কবীর, সাঁওতাল নেতা স্বপন শেখ, প্রিসিলা মুর্মু, তৃষ্ণা মুর্মু, বিটিশ সরেন, গৌড় পাহাড়ি, রাফায়েল হাসদা, অলিভিয়া হেমব্রম, বার্নাবাস টুডু, লুইস মুর্মু, খিলন রবিদাস প্রমুখ। কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে।

গণ–অনশনে বক্তারা বলেন, গোবিন্দগঞ্জে ইপিজেড নির্মাণ করার মতো সরকারের অনেক জমি পতিত আছে। কিন্তু বিরোধপূর্ণ সাঁওতালদের রক্তভেজা তিন ফসলি জমিতেই কেন ইপিজেড করতে হবে? এ আন্দোলন ইপিজেডের বিরুদ্ধে নয়; বরং বাপ–দাদার জমি উদ্ধারের জন্য তাঁরা আন্দোলন করছেন। এসব জমি উদ্ধার করতে গিয়ে তিন সাঁওতালকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের আজও গ্রেপ্তার করা হয়নি। দোষী ব্যক্তিদের বিচার হয়নি।

বক্তারা বিরোধপূর্ণ জমিতে ইপিজেড নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ, তিন সাঁওতাল হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার, সাঁওতাল–বাঙালিদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও পৈতৃক জমি ফেরত দেওয়ার দাবি জানান। অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

রংপুর চিনিকল সূত্রে জানা যায়, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকায় রংপুর চিনিকলের আওতায় ১ হাজার ৮৪২ একর জমি আছে। এই জমিতে উৎপাদিত আখ রংপুর চিনিকলে মাড়াই হতো। চিনিকলে আখমাড়াই বন্ধ হলে সাঁওতালরা দফায় দফায় এই জমি দখল করেন। ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর চিনিকল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ এসব জমিতে উচ্ছেদে গেলে সাঁওতালদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে শ্যামল হেমব্রম, রমেশ টুডু ও মঙ্গল মার্ডি নামে তিন সাঁওতাল নিহত হন। সেই সঙ্গে অন্তত ২০ জন আহত হন।
এ পরিস্থিতিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন রংপুর চিনিকলের জমিতে ইপিজেড স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ জন্য বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেপজা) ইপিজেড বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এদিকে চিনিকলের জমিতে ইপিজেড নির্মাণের বিরোধিতা করে সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডাকসু নির্বাচন কমিশন ও তফসিল ঘোষণা দাবিতে প্রশাসনকে ‘সালাম’
  • বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে নারী
  • সাহেবগঞ্জ এলাকায় ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন