নির্মাণের ৯ মাসের মাথায় বন্যার স্রোতে ভেসে যায় সুন্দরগঞ্জের বেলকা বাজার খেয়াঘাটের ওপর সেতুটি। এরপর ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও সেতুটি মেরামত বা পুনর্নির্মাণ করা হয়নি। ফলে বেলকা ও হরিপুর ইউনিয়নের ২০ হাজার চরবাসীকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরের এডিবির অর্থায়নে কংক্রিটের খুঁটির ওপর কাঠের সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। ২৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় উপজেলা পরিষদ। ঠিকাদার শাহানুর ইসলামের পক্ষে সেতু নির্মাণে সাব-ঠিকাদার হিসেবে কাজ করেন বামনডাঙ্গার সাগীর খান। সেতুটির নকশা করেন উপজেলা প্রকৌশলী। গত বছরের ৩০ জুন কাজ শেষ দেখিয়ে ঠিকাদার টাকা ছাড় করিয়ে নেন। ৯ মাস পর গত বছর অক্টোবরে তিস্তায় ভেসে যায় সেতুটির কিছু অংশ। সে সময় জেলা-উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সেতু মেরামত করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত সেতুটি নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি প্রশাসন।

বেলকা বাজারের ব্যবসায়ী আবদুর রাজ্জাক জানান, বেলকা ও হরিপুর ইউনিয়নের ২০ হাজার চরবাসীর দীর্ঘদিনের চাওয়া-পাওয়ার এখন কী হবে? এ দায় কার? এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।

বেলকা চরের শিক্ষার্থী ছানা মিয়া আক্ষেপ করে বলে, সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় চরের শিক্ষার্থীরা খুশি হয়েছিল। কিন্তু উদ্বোধন না হতেই ভেসে গেল তিস্তার স্রোতে। এখন আবার সেই নৌকায় চলতে হবে।

হরিপুর চরের স্কুলশিক্ষক আবদুল জলিল মিয়া বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও সেই সময়ের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের গাফিলতির কারণে সেতুটির এই অবস্থা হয়েছে। এর জন্য এখন জনগণকে খেসারত দিতে হবে। তিনি দ্রুত সেতুটি পুনর্নির্মাণের দাবি জানান।
উপজেলা প্রকৌশলী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বেলকা খেয়াঘাটের তিস্তার শাখা নদীর ওপর কাঠের সেতু নির্মাণের কোনো পরিকল্পনা এলজিইডির নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজ কুমার বিশ্বাস জানান, তিনি সবেমাত্র যোগদান করেছেন। এ ঘটনা তাঁর জানা নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ