বোয়ালমারীতে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবিতে মানববন্ধন
Published: 23rd, April 2025 GMT
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ময়না এসি বোস ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক মোখলেসুর রহমান অরুণের পদত্যাগ দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার সকালে এসব কর্মসূচি পালন করে স্কুলটির শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বোয়ালমারী-মহম্মদপুর সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি স্কুলের গেটে তালা দিয়ে সকল শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। সড়ক অবরোধের কারণে প্রায় আড়াই ঘণ্টা সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।
খবর পেয়ে দুপুরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম রাব্বানী সোহেল ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিক্ষার্থীদের দাবি ও অভিযোগ শুনে সমাধানের আশ্বাস দেন। পরে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যায়। এ সময় পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো.
স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সজীবসহ একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, প্রধান শিক্ষক মোখলেসুর রহমান অরুণ নিয়মিত স্কুলে আসেন না। তিনি স্কুল প্রাঙ্গণের লাখ লাখ টাকার গাছ বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। স্কুলের পুরাতন ভবন বিক্রি করে সে অর্থও নিজের পকেটে রেখেছেন। স্কুলের আয়-ব্যয়ের কোনো হিসাব তিনি দেন না। তার কাছে জানতে চাইলে তিনি উল্টো ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, পুরাতন ভবন বিক্রি করার কারণে সাইন্সের ল্যাবের ক্লাস স্কুল মাঠে রোদে বসে করতে হয়। প্রধান শিক্ষক পদে তিনি যোগদান করার পরে স্কুলে এক টাকারও উন্নয়ন কাজ হয়নি। প্রতিদিন মাত্র দুইটা করে ক্লাস হয়।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মোখলেসুর রহমান অরুণ সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সবই ষড়যন্ত্র। মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ দিয়ে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। আমার নিকট সব ডকুমেন্ট রয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জালাল উদ্দীন বলেন, এর আগে ইউএনওর কাছে একটা অভিযোগ জমা পড়েছিল। একাডেমিক সুপারভাইজার সেটা তদন্ত করছেন। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম রাব্বানী সোহেলকে পাঠিয়ে শিক্ষার্থীদের শান্ত করে ক্লাসে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সকল অভিযোগ শোনা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পদত য গ র দ ব পদত য গ তদন ত উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী
বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা। সমাবেশ শেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত এই কর্মসুচিতে সিদ্ধিরগঞ্জের দেড় শতাধিক কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অংশ নেয়। শিক্ষার্থীদের হাতে " প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫ এ বৈষম্য কেন? শিক্ষা উপদেষ্টা জবাব চাই" সহ বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্লেকার্ড শোভা পায়।
সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সভাপতি মজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা বিল্লাল হোসেন রবিন, ঢাকা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতি জি এইচ ফারুক, বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন পরিচালক ঐক্য পরিষদের সভাপতি মো: সামসুজ্জামান, প্রধান সমন্বয়ক মো: সাইফুল ইসলাম রুবেল, মহাসচিব মো: সাখাওয়াত হোসেন খান, সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ হোসেন ঢালী, শিক্ষক কাওসার আহমেদ, এসএম বিজয়, আল মামুন , তরিকুল ইসলাম, বাহাউদ্দিন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ১৭ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা প্রজ্ঞাপনে শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়েছে। এতে দীর্ঘদিন ধরে এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া বেসরকারি, কিন্ডারগার্টেন ও এমপিও-বহির্ভূত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত ও হতাশ হয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, “আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ। অথচ কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত কোমলমতি শিশুদের বৃত্তি পরীক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে তাদের মৌলিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে।”
তারা বলেন, দেশের প্রায় ৬০ হাজার কিন্ডারগার্টেনে প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে, যাদের একটি বড় অংশ দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়ে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আশায় এগিয়ে এসেছে। এখন এই সিদ্ধান্ত তাদের স্বপ্ন ও শ্রমের প্রতি অবিচার।
বক্তারা অভিযোগ করেন, সরকার বৈষম্যহীন শিক্ষাব্যবস্থা গড়ার অঙ্গীকার করলেও বাস্তবে এই প্রজ্ঞাপন সেই প্রতিশ্রুতির পরিপন্থী। তারা প্রশ্ন তোলেন, “ই আই আই এন নম্বরধারী নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যদি এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়, তবে কেন নিবন্ধিত কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না?”
বক্তারা আরও বলেন ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন, প্রতিবাদ ও স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে এই বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
সমাবেশ থেকে অবিলম্বে প্রজ্ঞাপন বাতিল করে সরকারি ও বেসরকারি সব প্রাথমিক শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন গড়ে তোরা হবে।
মানববন্ধন ও সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, ১নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি নেজাম উদ্দিন শাহীন, ২নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি জাকির উল্লাহ সুজুন, ৩নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: আজহারুল ইসলাম, ৫নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: শামীম, ৬নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: জাবের হোসেন, ৮নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: আল আমিন, ১০ নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি এড: মো: খোরশেদ আলম প্রমুখ।