ক্ষুদ্র উদ্যোগে সুযোগের বৈষম্য দূর করতে হবে
Published: 24th, April 2025 GMT
অর্থনীতির অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হতে পারে ক্ষুদ্র উদ্যোগের বিকাশ। এ জন্য এ ক্ষেত্রে সুযোগের বৈষম্য দূর করতে হবে। একই সঙ্গে উন্নয়নে সমাজের প্রান্তিক জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে বলে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির সাবেক পরিচালক ড.
গতকাল রাজধানীর পিকেএসএফ ভবনে আয়োজিত ‘ক্ষুদ্র উদ্যোগ, বৃহৎ ভবিষ্যৎ: বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি’ আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। ড. সেলিম জাহান বলেন, মানুষকে স্বপ্ন দেখাতে হবে। স্বপ্নকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সাহস জোগাতে হবে। স্বপ্নপূরণে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে হবে। ফলে দেশে উদ্যোগ উন্নয়ন কার্যক্রম বেগবান হবে। অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে।
তিনি বলেন, ক্ষুদ্রঋণ অন্যতম অনুষঙ্গ হলেও ক্ষুদ্র উদ্যোগ ও ক্ষুদ্রঋণ এক কথা নয়। সারাবিশ্বেই ছোট উদ্যোক্তাদের বড় স্বপ্ন নিয়ে কাজ শুরু করার সময় তাদের সফলতা নিয়ে এক ধরনের আশঙ্কা থাকে। এ আশঙ্কা ও ভীতি দূর করে আস্থার জায়গায় নিয়ে যাওয়ার পরিবেশ তৈরি করতে হবে সরকারকে। কিন্তু বাংলাদেশে সরকার বড় উদ্যোক্তাদের নিয়েই স্বপ্ন দেখে। তাই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বিকাশে বেসরকারি খাত উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে এ অর্থনীতিবিদ বলেন, ছোট উদ্যোক্তাদের সম্প্রসারণের স্বার্থে দেশের বড় ব্যবসায়ীদের মুড়ি, চানাচুর বা আচারের মতো পণ্য তৈরি করার দরকার নেই। এ বিষয়ে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে।
অবকাঠামোগত অগ্রগতিকে উন্নয়নের সমার্থক হিসেবে বিবেচনা করার প্রবণতা সঠিক নয় মন্তব্য করে ড. সেলিম জাহান বলেন, স্কুলে ভর্তির হার বৃদ্ধি বা নতুন অবকাঠামো নির্মাণ হলো অগ্রগতি। কিন্তু উন্নয়ন হলো শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি এবং পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর শিশুদের মানসম্পন্ন শিক্ষার সুযোগ লাভ। কাজেই অগ্রগতিকে উন্নয়নের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা ঠিক নয়।
তিনি আরও বলেন, সহিংসতা ও সন্ত্রাসকে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করে এবং প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও সম্পদ বরাদ্দের মাধ্যমে দেশে উদ্যোগ উন্নয়নের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে সরকারকে ইতিবাচকভাবে তৎপর রাখতে সবাইকে উচ্চকণ্ঠ হতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে পিকেএসএফের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান বলেন, পিকেএসএফ বর্তমানে দক্ষতা উন্নয়নের জন্য বিবিধ প্রকল্প ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। জাতিসংঘের কৃষি উন্নয়ন তহবিলের অর্থায়নে পৃথিবীর প্রায় ৭০০ প্রকল্পের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে পিকেএসএফের আরেকটি প্রকল্প। এগুলো বিশ্বমঞ্চে দেশের সম্মান বৃদ্ধি করেছে।
উন্মুক্ত আলোচনায় বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরী বলেন, ৬০ দশকের ধ্যানধারণা দিয়ে বর্তমানের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন সম্ভব নয়। মানবতাভিত্তিক উন্নয়ন সামনে রেখে একটি ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করাই অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উদ য গ প ক এসএফ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে।
একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।
সুচরিতা/শাহেদ