গাজীপুরে এনসিপির বিক্ষোভে আ.লীগের নিষিদ্ধ করার দাবি
Published: 24th, April 2025 GMT
আওয়ামী লীগের বিচার, রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে গাজীপুরের শ্রীপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে শ্রীপুর উপজেলা শাখার উদ্যোগে এ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
মিছিলটি মাওনা চৌরাস্তা উড়ালসেতুর নিচ থেকে শুরু হয়ে সেতুর উভয় পাশ প্রদক্ষিণ করে মুগ্ধ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। এতে নেতৃত্ব দেন এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক অবসরপ্রাপ্ত মেজর আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ।
বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর জেলা এনসিপি নেতা আবু রায়হান মিসবাহ, কেন্দ্রীয় শ্রমিক উইং নেতা সালাহ উদ্দিন, ছাত্র সংসদ নেতা আদনান সাকিবসহ স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। মিছিল শেষে মুগ্ধ চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা আওয়ামী লীগের ‘পুনর্বাসনের ষড়যন্ত্র’ বন্ধের আহ্বান জানান।
আরো পড়ুন:
রাজধানীতে ঝটিকা মিছিল: আওয়ামী লীগের ১১ জন গ্রেপ্তার
মাগুরায় মাস্ক-হেলমেট পরে আ.
সমাবেশে অবসরপ্রাপ্ত মেজর মাহমুদ বলেন, ‘‘গণঅভ্যুত্থানের আট মাস পার হলেও এখনো শহীদ ও আহতদের নামের সরকারি গেজেট প্রকাশ হয়নি, যা দুঃখজনক। সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা সম্ভব।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ একটি জঙ্গি সংগঠন। সরকার যদি তাদের নিষিদ্ধ না করে বরং পুনর্বাসন করতে চায়, তবে এনসিপি তা প্রতিরোধ করবে।’’
ঢাকা/রফিক/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ আওয় ম এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
দলগুলোর সঙ্গে কথা বলে মানবিক করিডরের সিদ্ধান্ত নিতে হতো: নাহিদ ইসলাম
মানবিক করিডরের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অবশ্যই রাজনৈতিক দলগুলো সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন ছিল বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
আজ বুধবার বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় শেষে এক প্রশ্নের জবাবে এনসিপির নাহিদ এ কথা বলেন। রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দুই দলের বৈঠক হয়।
জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক বলেন, এই সরকার একটি ঐকমত্যের ভিত্তিতেই তৈরি হয়েছে এবং পরিচালিত হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি একটা সমর্থন আছে। ফলে জাতীয় সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা প্রয়োজন। এই করিডর বা রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের বিষয়টি কীভাবে থাকবে, তা তারা (এনসিপি) এখনো স্পষ্ট নয়। তবে মানবিক করিডরের বিষয়টি নিয়ে অন্যান্য রাজনৈতিক দল যে বক্তব্য–বিবৃতি দিচ্ছে, তার সঙ্গে তারা একমত।
জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশা এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যের জায়গাটা ধরে রাখতে হবে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, সে উদ্দেশ্যই মূলত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসা। ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে বিচার, সংস্কার এবং গণপরিষদ নির্বাচনের এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলন নিম্ন ও উচ্চ উভয় কক্ষেই সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের কথা বলছে। কিন্তু এনসিপি উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের কথা বলেছে। ইসলামী আন্দোলন নিজেদের যুক্তি উপস্থাপন করেছে। আমরা বলেছি, আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করব। সংবিধানের মৌলিক সংস্কারের জন্য কেন গণপরিষদ নির্বাচন প্রয়োজন, আমরা সে বিষয়ে ব্যাখ্যা করেছি। উনারা বলেছেন, বিষয়টি ভেবে দেখবেন।’
বৈঠকে দলগতভাবে আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বিচার চলার সময় তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, নিবন্ধন স্থগিত করাসহ বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বেশির ভাগ বিষয়ে দুই দল একমত।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সারা দেশে চাঁদাবাজি, লুটপাট এবং জনগণের অধিকার হরণের মতো কর্মকাণ্ড বেড়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ নতুন বাংলাদেশের জন্য, রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্যই জুলাই অভ্যুত্থানে রাজপথে নেমে এসেছিল। যদি পুরোনো বন্দোবস্তের জন্য কেউ চেষ্টা করে, জনগণ তা মেনে নেবে না।
সভায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে তিনটি বিষয়ে ঐকমত্য হয় জাতীয় নাগরিক পার্টির।
বিষয়গুলো হলো দ্রুত স্থানীয় নির্বাচনের আয়োজন; গণহত্যা ও ফ্যাসিজমের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচার করা এবং দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার ও বিচার চলাকালে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত রাখা এবং সর্বশেষ মৌলিক সংস্কার শেষ করে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা।
মতবিনিময় সভায় এনসিপির পক্ষ থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব, আতিক মুজাহিদ, সরোয়ার তুষার, আশরাফ উদ্দিন মাহদী, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক সাদ্দাম হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য আল আমীন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, আশরাফুল আলম প্রমুখ।