পর্যটকদের বাঁচাতে গিয়ে নিজেই গুলিতে প্রাণ হারালেন কাশ্মীরি তরুণ
Published: 25th, April 2025 GMT
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে গত মঙ্গলবার সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় কাশ্মীরের শুধু একজন নিহত হয়েছিলেন। তাঁর নাম সৈয়দ আদিল হুসেন শাহ। ভয়াবহ ওই হামলার সময় এক বন্দুকধারীর কাছ থেকে রাইফেল কেড়ে নিতে গিয়ে নিহত হয়েছিলেন আদিল। ৩০ বছর বয়সী এই তরুণ এক ‘পনিওয়ালা’ বা ঘোড়াচালক।
আদিলের বাবা হায়দার শাহ বলেছেন, তাঁর ছেলে পর্যটকদের প্রাণ বাঁচাতে নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। ছেলেকে নিয়ে তিনি গর্বিত।
আদিল হুসেন পেশায় ঘোড়াচালক। হামলার দিন তিনি যেসব পর্যটককে ঘোড়ায় বৈসারানের তৃণভূমিতে নিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের বাঁচাতে গিয়ে তিনি নিহত হন। জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ গত বুধবার তাঁর জানাজায় অংশ নেন এবং শত শত শোকাহত মানুষের সঙ্গে প্রার্থনায় যোগ দেন।
এরপরই নিহত আদিল হুসেনের বীরত্বপূর্ণ কাজটি জাতীয় মনোযোগ আকর্ষণ করে। তাঁকে পেহেলগামের হাপাতনার্ড গ্রামে পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হয়েছে।
জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী নিহত আদিল হুসেনের বাবা হায়দার শাহকে জড়িয়ে ধরে সমবেদনা জানান। এ সময় তিনি শোকাহত ও নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
আরও পড়ুনকাশ্মীরে পর্যটক হত্যা: পশ্চিমবঙ্গজুড়ে বিভিন্ন দল ও সংগঠনের প্রতিবাদ, মিছিল২ ঘণ্টা আগেগতকাল বৃহস্পতিবার ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে হায়দার শাহ বলেন, ‘আমি তাঁর জন্য ও তাঁর আত্মত্যাগের জন্য অত্যন্ত গর্বিত। আমি এখনো বেঁচে আছি, কারণ, আমি গর্ববোধ করছি। তা না হলে, ওর মরদেহ দেখার সঙ্গে সঙ্গে আমি মরে যেতাম। ওর সাহসিকতার জন্য আমি খুশি। কিছু মানুষ ওর জন্য বেঁচে গেছে, এটা ভেবে আমি গর্বিত।’
নিহত আদিলের ভাই সৈয়দ নওশাদ বলেন, ‘আদিল হুসেন কাজ করতে পেহেলগামে গিয়েছিলেন। সেখানে এক বন্দুকধারী তাঁর বুকে তিনবার গুলি করে। তিনি পর্যটকদের ঘোড়ায় চড়িয়ে বৈসারানে নিয়ে যেতেন। মঙ্গলবার বন্দুকধারীরা যখন পর্যটকদের ওপর হামলা চালায়, তখন আমার ভাই ওদের থামানোর চেষ্টা করে। এক পর্যটক, যাঁর বাবা ওই হামলায় নিহত হন, তিনি এসএমএইচএস হাসপাতালে আমাকে আদিলের বীরত্বের কথা জানান।’
আরও পড়ুনকাশ্মীরে পর্যটকদের গুলি করার আগে কী হয়েছিল, জানালেন প্রত্যক্ষদর্শীরা৩ ঘণ্টা আগেমুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ আদিলের সাহসিকতার প্রশংসা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘তিনি যে পর্যটকদের ঘোড়ায় করে পার্কিং এলাকা থেকে বৈসারান ময়দানে নিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের রক্ষা করতে তিনি নিজের প্রাণ দিয়েছেন। তাঁর শোকাহত পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছি এবং তাঁদের পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছি।’
ওমর আবদুল্লাহ আরও লিখেছেন, ‘আদিল ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। তাঁর অসাধারণ সাহসিকতা ও আত্মত্যাগ চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমরা তাঁদের পাশে আছি এবং যতটা সম্ভব সহায়তা করব।’
আরও পড়ুনকাশ্মীরে হামলা: ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলি৫ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সৈকতে নারী পর্যটকদের গোসলের ভিডিও ধারণ, কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের কারাদণ্ড
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে গোসলরত নারী পর্যটকদের ভিডিও ধারণ করার দায়ে রুবেল (৩০) নামে এক কনটেন্ট ক্রিয়েটরকে এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সৈকতের জিরো পয়েন্ট এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসিন সাদীক। এ সময় ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
রুবেল বরগুনা সদর উপজেলার বাসিন্দা। তিনি মুদি দোকানের ব্যবসার পাশাপাশি কনটেন্ট তৈরি করেন।
সৈকতের ফটোগ্রাফার আরিফ মিয়া বলেন, ‘‘রুবেল নারীদের গোসলের ভিডিও করছিলেন। প্রতিবাদ করলে তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। বিষয়টি দেখত পেয়ে তাকে আটক করি।’’
অপর ফটোগ্রাফার রাসেল বলেন, “রুবেলের মোবাইল চেক করে দেখি, অনেক ভিডিও। সঙ্গে সঙ্গে ট্যুরিস্ট পুলিশকে খবর দেই। পরে তাদের কাছে সোপর্দ করি।’’
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসিন সাদেক বলেন, “অনুমতি ছাড়া নারী পর্যটকদের ভিডিও ধারণের দায়ে রুবেলকে এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের অপরাধে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’’
ঢাকা/ইমরান/রাজীব