প্রশাসনিক কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের মাধ্যমে বছরে ১২২ ঘণ্টা সময় বাঁচাতে পারবেন কর্মীরা। এতে করে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়বে। আজ শুক্রবার নিজেদের একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্পের ফলাফল নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন তথ্য দিয়েছে গুগল।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান গুগল তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা–বিষয়ক চ্যাটবট ‘জেমিনি’ উন্নয়নে কাজ করছে। গতকাল প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্মীদের তিন ভাগের দুই ভাগই—বিশেষ করে বয়স্ক নারীরা নিজেদের কর্মক্ষেত্রে কখনো এআই ব্যবহার করেননি। কর্মীদের এআই ব্যবহারের অনুমতি এবং সামান্য প্রশিক্ষণ দিলে, তাঁরা নতুন এই প্রযুক্তির সঙ্গে দ্বিগুণ খাপ খাইয়ে নিতে পারবেন।

গুগলের ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট ডেবি উইনস্টেইন বলেছেন, তাঁদের এই পরীক্ষামূলক প্রকল্প একটি ছোট ব্যবসা নেটওয়ার্ক, শিক্ষা–সংক্রান্ত দাতব্য সংস্থা ও একটি সংগঠনে চালানো হয়েছিল। তাতে দেখা গেছে, প্রশাসনিক কাজে এআই ব্যবহার করলে প্রতিবছরে গড়ে কর্মীদের ১২২ ঘণ্টা করে বাঁচবে। তবে এ ক্ষেত্রে একটি বাধা আছে। তা হলো, কর্মীদের অনেকেই মনে করেন কর্মক্ষেত্রে এআইয়ের ব্যবহার বৈধ নয় বা এমনটি করা উচিত নয়।

এ সাক্ষাৎকারে ডেবি উইনস্টেইন বলেন, ‘মানুষ (এআই ব্যবহারের) অনুমতি চায়। তারা মনে করে, এটি করা কি আমার জন্য উচিত হবে? তাই তাদের এ নিশ্চয়তা দেওয়াটা সত্যিকার অর্থে গুরুত্বপূর্ণ। একবার তারা যখন (এআই) ব্যবহার শুরু করবে এবং তাদের আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার জন্য কয়েক ঘণ্টার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, তখন তারা এই প্রযুক্তিটি দ্বিগুণ ব্যবহার করা শুরু করবে।’

গুগলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাদের পরীক্ষামূলক প্রকল্পে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৫৫ বছরের বেশি বয়সী ১৭ শতাংশ নারী আগে প্রতি সপ্তাহে এআই ব্যবহার করতেন। আর প্রতিদিন এআই ব্যবহার করতেন মাত্র ৯ শতাংশ। তবে প্রশিক্ষণের তিন মাস পর তাঁদের ৫৬ শতাংশ প্রতি সপ্তাহে এআই ব্যবহার করছেন এবং প্রতিদিন এআই ব্যবহার করছেন ২৯ শতাংশ নারী।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ