প্রশাসনিক কাজে কর্মীদের বছরে ১২২ ঘণ্টা বাঁচাবে এআই
Published: 25th, April 2025 GMT
প্রশাসনিক কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের মাধ্যমে বছরে ১২২ ঘণ্টা সময় বাঁচাতে পারবেন কর্মীরা। এতে করে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়বে। আজ শুক্রবার নিজেদের একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্পের ফলাফল নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন তথ্য দিয়েছে গুগল।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান গুগল তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা–বিষয়ক চ্যাটবট ‘জেমিনি’ উন্নয়নে কাজ করছে। গতকাল প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্মীদের তিন ভাগের দুই ভাগই—বিশেষ করে বয়স্ক নারীরা নিজেদের কর্মক্ষেত্রে কখনো এআই ব্যবহার করেননি। কর্মীদের এআই ব্যবহারের অনুমতি এবং সামান্য প্রশিক্ষণ দিলে, তাঁরা নতুন এই প্রযুক্তির সঙ্গে দ্বিগুণ খাপ খাইয়ে নিতে পারবেন।
গুগলের ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট ডেবি উইনস্টেইন বলেছেন, তাঁদের এই পরীক্ষামূলক প্রকল্প একটি ছোট ব্যবসা নেটওয়ার্ক, শিক্ষা–সংক্রান্ত দাতব্য সংস্থা ও একটি সংগঠনে চালানো হয়েছিল। তাতে দেখা গেছে, প্রশাসনিক কাজে এআই ব্যবহার করলে প্রতিবছরে গড়ে কর্মীদের ১২২ ঘণ্টা করে বাঁচবে। তবে এ ক্ষেত্রে একটি বাধা আছে। তা হলো, কর্মীদের অনেকেই মনে করেন কর্মক্ষেত্রে এআইয়ের ব্যবহার বৈধ নয় বা এমনটি করা উচিত নয়।
এ সাক্ষাৎকারে ডেবি উইনস্টেইন বলেন, ‘মানুষ (এআই ব্যবহারের) অনুমতি চায়। তারা মনে করে, এটি করা কি আমার জন্য উচিত হবে? তাই তাদের এ নিশ্চয়তা দেওয়াটা সত্যিকার অর্থে গুরুত্বপূর্ণ। একবার তারা যখন (এআই) ব্যবহার শুরু করবে এবং তাদের আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার জন্য কয়েক ঘণ্টার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, তখন তারা এই প্রযুক্তিটি দ্বিগুণ ব্যবহার করা শুরু করবে।’
গুগলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাদের পরীক্ষামূলক প্রকল্পে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৫৫ বছরের বেশি বয়সী ১৭ শতাংশ নারী আগে প্রতি সপ্তাহে এআই ব্যবহার করতেন। আর প্রতিদিন এআই ব্যবহার করতেন মাত্র ৯ শতাংশ। তবে প্রশিক্ষণের তিন মাস পর তাঁদের ৫৬ শতাংশ প্রতি সপ্তাহে এআই ব্যবহার করছেন এবং প্রতিদিন এআই ব্যবহার করছেন ২৯ শতাংশ নারী।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর ম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।
হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।
আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’
গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই।