ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ভারত ছাড়লেন ২৭২ পাকিস্তানি, আজ শেষ দিনে ছাড়বেন আরও কয়েক শ
Published: 27th, April 2025 GMT
গত দুই দিনে আত্তারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ২৭২ জন পাকিস্তানি নাগরিক ভারত ছেড়েছেন। পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারত ছাড়ার সময়সীমার শেষ দিনে আজ রোববার (২৭ এপ্রিল) আরও কয়েক শ পাকিস্তানি ভারত ছাড়বেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ১২ ধরনের স্বল্পমেয়াদি ভিসাধারী পাকিস্তানের নাগরিকদের আজকের মধ্যেই ভারত ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। একজন সরকারি কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
একই সময়ে পাঞ্জাবের আন্তর্জাতিক সীমান্ত বা আত্তারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ৬২৯ জন ভারতীয় নাগরিক পাকিস্তান থেকে নিজ দেশে ফিরে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে ১৩ জন কূটনীতিক ও সরকারি কর্মকর্তা।
আরও পড়ুনভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে আবারও গোলাগুলি৬ ঘণ্টা আগে২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ভারতের অভিযোগ, এই ঘটনার সঙ্গে পাকিস্তান জড়িত। পাকিস্তান সরকার ভারতের এই দাবি অস্বীকার করেছে। এরপর পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারত ছাড়ার নোটিশ জারি করে নয়াদিল্লি, যা ‘লিভ ইন্ডিয়া’ নামে পরিচিত।
লিভ ইন্ডিয়া নোটিশে কয়েকটি ধরন রয়েছে। এর মধ্যে সার্ক ভিসাধারী পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারত ছাড়ার সময়সীমা ছিল ২৬ এপ্রিল। চিকিৎসা ভিসাধারীদের ভারত ছাড়তে হবে ২৯ এপ্রিলের মধ্যে।
আজকের মধ্যে ১২ ধরনের ভিসাধারীকে ভারত ছাড়তে হবে। তাঁরা সবাই স্বল্পমেয়াদি ভিসাধারী। এ ধরনগুলো হলো আগমনী ভিসা বা কোনো দেশে আসার পর যে ভিসা দেওয়া হয়, ব্যবসা, চলচ্চিত্র, সাংবাদিক, ট্রানজিট, সম্মেলন, পর্বতারোহণ, শিক্ষার্থী, ভিজিটর, দলবদ্ধ পর্যটক, তীর্থযাত্রী ও দলবদ্ধ তীর্থযাত্রী ভিসা।
দীর্ঘমেয়াদি ভিসা এবং কূটনৈতিক বা সরকারি ভিসাধারীরা ‘লিভ ইন্ডিয়া’ নির্দেশের আওতার বাইরে থাকবেন।
আরও পড়ুনযেদিকে তাকাই, শুধু অবিশ্বাস: ভারতের বিভিন্ন শহরে ভয়ে ঘরবন্দী কাশ্মীরি শিক্ষার্থীরা৯ ঘণ্টা আগেসরকারি তথ্যমতে, ২৫ এপ্রিল আত্তারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ১৯১ জন পাকিস্তানি নাগরিক ভারত ত্যাগ করেছেন। পরের দিন ২৬ এপ্রিল আরও ৮১ জন পাকিস্তানি একই পথে ভারত ছাড়েন।
ওই দিন পাকিস্তান থেকে ভারতে ফিরেছেন ২৮৭ জন ভারতীয়। পরদিন ফিরেছেন ৩৪২ জন, যার মধ্যে ১৩ জন কূটনীতিক। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কিছু পাকিস্তানি বিমানবন্দর দিয়েও ভারত ছেড়েছেন। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট না থাকায় তৃতীয় দেশের মাধ্যমে তাঁরা গন্তব্যে পাড়ি জমিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভারত সরকারের তথ্যমতে, স্বল্পমেয়াদি ভিসাধারী পাকিস্তানি সবচেয়ে বেশি ছিলেন মহারাষ্ট্রে। তাঁদের সংখ্যা প্রায় এক হাজার। রাজ্যের মন্ত্রী যোগেশ কাদম বলেছেন, এই এক হাজার পাকিস্তানি নাগরিককে দ্রুত ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আগমনী ভিসা, ব্যবসা, চলচ্চিত্র, সাংবাদিক, ট্রানজিট, সম্মেলন, পর্বতারোহণ, শিক্ষার্থী, ভিজিটর, দলবদ্ধ পর্যটক, তীর্থযাত্রী এবং দলবদ্ধ তীর্থযাত্রী ভিসাধারী পাকিস্তানের নাগরিকদের আজকের মধ্যে ভারত ছাড়তে হবে।মহারাষ্ট্রে বর্তমানে আরও প্রায় ৫ হাজার ৫০ জন পাকিস্তানি নাগরিক বাস করছেন, যাঁদের অধিকাংশের দীর্ঘমেয়াদি ভিসা রয়েছে। তাঁদের মধ্যে নাগপুরে ২ হাজার ৪৫০ জন, থানে ১ হাজার ১০০ জন, জলগাঁওয়ে ৩৯০ জন, নবি মুম্বাইয়ে ২৯০ জন, পিম্পরি-চিনচওয়াডে ২৯০ জন, অমরাবতীতে ১২০ জন এবং মুম্বাই শহরে থাকেন ১৫ জন।
এদিকে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে আবারও গোলাগুলি হয়েছে। এ নিয়ে ধারাবাহিকভাবে তৃতীয় রাতের মতো গোলাগুলি হলো। ভারতীয় সেনাবাহিনী আজ এ কথা জানিয়েছে।
আরও পড়ুনসিন্ধু নদের পানি সরবরাহ আটকে দেওয়ার ভারতের হুমকিতে পাকিস্তানে আতঙ্ক৪ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জন প ক স ত ন দলবদ ধ আরও প সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে হামলা: ট্রাম্প ৬০ দিনের সময়সীমার কথা বলছেন, সেটি কী?
ইরানকে ৬০ দিনের সময় বেঁধে (আলটিমেটাম) দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সময়সীমা শেষ হওয়ার পরদিনই দেশটিতে ভয়াবহ হামলা চালাল যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েল। আজ শুক্রবার ট্রাম্প নিজেই ওই সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার কথা জানান।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চলতি বছরের শুরুর দিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সেই চিঠিতে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে সরে আসার বিষয়ে একটি চুক্তিতে রাজি হতে চাপ দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। চুক্তিতে পৌঁছাতে ওয়াশিংটন–তেহরান আলোচনা সফল করতে ৬০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল সেই চিঠিতে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে ইরান চুক্তি নিয়ে প্রথম দফার আলোচনা ১২ এপ্রিল শুরু হয়েছিল। সেদিন থেকেই এই ৬০ দিনের সময়সীমা গণনা শুরু হয়। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার পরদিন গতকাল বৃহস্পতিবার ১২ জুন ইসরায়েল হামলা চালাল ইরানের অন্তত ৮টি শহরে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আজ সিএনএনের সাংবাদিক ডানা বাসকে বলেন, ‘আমার কথা শোনা উচিত ছিল ইরানের। যখন আমি বলেছিলাম—আপনি জানেন, আমি ওদের ৬০ দিনের এক সতর্কবার্তা দিয়েছিলাম, আপনি জানেন কি না, জানি না, কিন্তু আমি ওদের ৬০ দিনের সময়সীমা দিয়েছিলাম, আর আজ ৬১তম দিন।’
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনির উদ্দেশে পাঠানো চিঠির প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প ইরানকে সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।
বছরের শুরুর দিকে ফক্সনিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চিঠির প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমি আশা করি, ইরান আলোচনায় আসবে—আমি তাদের চিঠি লিখে জানিয়েছি, আমি আশা করি, তোমরা আলোচনা করবে। কারণ, আমাদের যদি সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করতে হয়, তাহলে সেটা ইরানের জন্য ভয়াবহ হবে।’
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, আমি আশা করি, তোমরা আলোচনা করবে। কারণ, সেটা ইরানের জন্য অনেক ভালো হবে।’
ইরানের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এবং আলোচনায় জড়িত ব্যক্তিরা জানতেন যে সময়সীমা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য চাপ ক্রমেই বাড়ছিল। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা আগে বলেছিলেন, ৬০ দিনের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও আলোচনা চলবে। কিন্তু এখন ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর হামলা চালানোর পর এই আলোচনার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে—যদিও মার্কিন কর্মকর্তারা আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে জোর দিচ্ছেন।