পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে পরীক্ষার মুখে ভারতের সামরিক বাহিনী
Published: 28th, April 2025 GMT
ভারত ও পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের উত্তেজনা শেষবার যখন সংঘর্ষে রূপ নিয়েছিল, তখন ভারতীয় কর্মকর্তারা এক অস্বস্তিকর বাস্তবতার সম্মুখীন হতে বাধ্য হন। ওই সময় দেশটির বিশাল সামরিক বাহিনীকে অনেকটা ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানো হয়েছিল; তারা ছিল সেকেলে এবং সীমান্তে হুমকি মোকাবিলায় অপ্রস্তুত।
পাকিস্তানের হাতে ২০১৯ সালে একটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার ঘটনায় লজ্জায় পড়ে যায় দেশটি। এতে ভারতের সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়নের প্রচেষ্টাকে ত্বরান্বিত করার প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সামরিক বাহিনীতে কয়েক শ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেন। অস্ত্র কিনতে নতুন আন্তর্জাতিক মিত্র খুঁজে নেন। দেশীয়ভাবে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদন বাড়ান। এসব প্রচেষ্টায় ঠিক কতটুকু পরিবর্তন এসেছে, হয়তো খুব শিগগিরই তার পরীক্ষা হবে।
ভারত ও পাকিস্তান আবারও একটি সামরিক সংঘাতের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। কারণ, কাশ্মীরে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে ভারত। দেশটি বলছে, এর সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পৃক্ততা আছে। উত্তেজনা দ্রুতই এতটা বেড়ে গেছে যে, পাকিস্তানের প্রবাহিত কয়েকটি নদীর পানিপ্রবাহ আটকে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে ভারত। এমন কঠোর পদক্ষেপ কয়েক দশকে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের সময়েও নেওয়া হয়নি।
কাশ্মীরের মনোরম এক উপত্যকায় ২২ এপ্রিল দুই ডজনেরও বেশি পর্যটককে হত্যার ঘটনা ভারতীয়দের স্তম্ভিত করেছে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ওপর পাকিস্তানে হামলা চালাতে ব্যাপক অভ্যন্তরীণ চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্লেষকেরা দীর্ঘমেয়াদি ও বিপজ্জনক অচলাবস্থার বিষয়ে সতর্ক করেছেন। কারণ, পারমাণবিক শক্তিধর এ দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক যোগাযোগ বেশ কয়েক বছর আগেই অনেকটা বন্ধ হয়ে গেছে। আর বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলো বর্তমানে অন্যান্য সংকট নিয়ে ব্যতিব্যস্ত আছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভারতের সামরিক বাহিনী এখনো আধুনিকায়নের পর্যায়ে রয়েছে। এ অবস্থায় দুর্বলতা ফাঁস হওয়ার ভয়ে জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে সংযমী হতে পারে ভারত।
২০১৮ সালে এক সংসদীয় প্রতিবেদনে জানানো হয়, ভারতের ৬৮ শতাংশ সামরিক সরঞ্জাম ‘সেকেলে’, ২৪ শতাংশ এখনকার মানের এবং মাত্র ৮ শতাংশ ‘সর্বাধুনিক’। পাঁচ বছর পর ২০২৩ সালে দেওয়া এক হালনাগাদ প্রতিবেদনে সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা স্বীকার করেন, বিশাল আকারের বাহিনী হওয়ার চ্যালেঞ্জের কারণে পর্যাপ্ত পরিবর্তন আসেনি।
যদিও ২০২৩ সালের সংসদীয় শুনানিতে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভারতের সর্বাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে, তবু একটি আধুনিক সেনাবাহিনীর মানের বিবেচনায় এটি অনেক কম। অর্ধেকেরও বেশি সরঞ্জাম এখনো পুরোনোই রয়ে গেছে।
২০২১ সালে চীন সীমান্তে ভারতীয় সেনা সদস্যরা। ২০২০ সালের সংঘর্ষের পর থেকে এ অঞ্চলে চার বছর ধরে সেনা মোতায়েন রেখেছে ভারত.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরঞ জ ম
এছাড়াও পড়ুন:
কালিয়াকৈরে বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ, ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। রবিবার (১৫ জুন) সকালে উপজেলার সাহেববাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, গত ১৪ জুন কালিয়াকৈর উপজেলা, পৌরসভাসহ জেলার আটটি ইউনিটের কমিটি বাতিল করে গাজীপুর জেলা বিএনপি। তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বৈঠক করে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি। পরে শনিবার (১৪) সন্ধ্যায় কালিয়াকৈর উপজেলা ও পৌরসভার কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটিতে উপজেলার বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম সিকদার, সদস্য সচিব করা হয়েছে এম আনোয়ার হোসেনকে। কালিয়াকৈর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে মামুদ সরকার ও সদস্য সচিব করা হয়েছে মহসিন উজ্জামানকে।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদ গ্রুপ কমিটি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন । আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে শনিবার (১৪ জুন) রাতেই বিক্ষোভ মিছিল করে নেতাকর্মীরা। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকীর অনুসারীদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন পারভেজ গ্রুপের কর্মীরা।
একই দাবিতে রবিবার (১৫ জুন) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী পারভেজ আহমেদের পক্ষ নিয়ে আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করে। এ সময়ে নতুন কমিটির পক্ষ থেকে আরেকটি মিছিল বের হলে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়।
পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে এলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তবে এখনো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসী।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান জানান, সকাল থেকে ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়া হলেও এখনো পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
ঢাকা/রেজাউল/বকুল